ম্যুভি রিভিউ- "দ্য স্পীড"
অনেকদিন পর বলাকায় গেলাম বাঙলা সিনেমা অনন্ত জলীল অভিনিত ম্যুভি "দ্য স্পীড" দেখতে। সিনেমা শুরুর আগে পর্দা সরে গেল সিনেমা হলের এবং স্বাভাবিক ভাবেই জাতীয় সংগীত মিউজিকে পরিবেশন । কিন্তু অবাক হয়ে দেখলাম প্রায় ৩০% দর্শক সে সময় বসা থেকে উঠার নাম পর্যন্ত করেনি এই কয়েক মিনিট দাড়িয়ে জাতীয় পতাকাকে সম্মান প্রদর্শণ করতে। সিনেমার শুরুই হলো বেশ দারুন সাউন্ডের ইফেক্ট দিয়ে। "দ্য স্পীড" নামটিকে সার্থক করতেই হয়তো।
১৯৯৯ সালের অক্টোবর মাসের কোন একদিন
মানুষের জীবনে বোধ সঞ্চারের এক নির্ভেজাল উপাদানের নাম কবিতা। কবিতা কখনো মানুষের মনকে রাঙিয়ে দেয়, কখনো বদনার কালো রঙ ঢেলে উপলব্ধিগুলোকে সতেজ করে তোলে; জীবন দর্শনের পথকে করে প্রশস্ত।
নারী-পুরুষ নিয়ে একটি বৈষম্যহীন সমাজের কথা বলি
'জেন্ডার' শব্দটি মুলত নারী ও পুরুষ উভয়কেই বোঝায়, বোঝায় নারী-পুরুষকে নিয়ে বৈষম্যহীণ সমাজের, রাষ্ট্রের কথা। সংস্কৃতি ও সমাজ নারী ও পুরুষ সম্পর্কে যে সব দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবোধ গড়ে তোলে, ভিন্ন ভিন্ন আচরণ করতে শেখায়, কিংবা ভুমিকা পালন করতে বলে, সেসবই হচ্ছে জেন্ডার।
সৌদি নারী...অতঃপর রোকেয়া
যদি আজ থেকে প্রায় একশ বছর পেছনে তাকাই বেগম রোকেয়ার (রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন১৮৮০-১৯৩২) জীবনে যিনি সৌদি নারীদের মতো প্রাতিষ্ঠানিক উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পাননি কিন্তু তার দেখানো আলোতে এখনও আমরা পথ দেখি।
নারী....আর কতোকাল রবে শুধুই অর্কিড হয়ে!
প্রচলিত ধ্যান-ধারণা হচ্ছে নারী হবে নরম-কোমল, সর্বংসহা (মাতা), মনোরঞ্জনকারিনী (বধূ)। তারা থাকবে অন্দরমহলে। আর তাই প্রবাদে শোনা যায়... 'ঝি নষ্ট হয় হাঁটে, বউ নষ্ট হয় ঘাটে'।....অর্থাৎ ঝি কে হাঁটে-বাজারে-মার্কেটে পাঠানো যাবে না আর বউকে পুকুর ঘাটে পাঠানো যাবে না (যদিও গ্রাম এলাকায় পরিবারের পানির যোগান দাতা সাধারণত নারীই)।
সোমবার, ২৮ মে, ২০১২
রুদ্ধ জানালার ফাঁক গলে আলো এসে পড়ুক ।।
শনিবার, ২৬ মে, ২০১২
তুই তো বেডা হইয়া গেছস
গণমাধ্যম ও নারী - সিনেমা পর্ব
সাধারণত আমাদের দেশের বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের বেশিরভাগ দর্শক হলেন নিম্নবিত্ত শ্রেণীর খেটে খাওয়া মানুষ। কিন্তু এসব চলচ্চিত্রে নারীকে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়, তাতে মনে হয় একজন কলেজ/ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর একমাত্র কাজ হচ্ছে প্রেমে পড়া । তাকে লেখাপড়া করতে হয় না, লাইব্রেরী ওয়ার্ক করতে হয় না, এমনকি পরীক্ষা নিয়েও দুশ্চিন্তা করতে হয় না। এখানে নারীর ভুমিকা হলো নায়কের চারপাশে নাচগান করা, অসহায় হয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়া, নির্যাতিত হওয়া (সিনেমার নাম মনে নেই আলেকজান্ডার বো আর মুনমুন মুল চরিত্রে, যেখানে মযুরীরর কাজই ছিলো রেপ হওয়া), নায়ক বা কোন পুরুষের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা ইত্যাদি। সাধারণত মূল ঘটনায় নিয়ন্ত্রকের ভুমিকায় নারীকে দেখা যায় না। একসময়ের সেনেমার পদা কাঁপানো নারীকুল শিরোমনি শ্রদ্ধেয় "শাবানা"-র কাজই ছিলো স্বামী, শ্বাশুরী, ননদদের হাতে নির্যাতিত হয়ে অবহেলিত লাঞ্ছিত জীবন যাপন করতে। স্বামী মদ খেয়ে মাতাল হয়ে বাসায় ফিরলেও শাবানা ম্যাডাম সেই মাতাল স্বামীর ঘাম মুছে "ওগো" "হ্যাঁগো" বলে স্বামীর পায়ের জুতা খুলে দিতে। একটা গান মনে পড়ে গেল এক্ষেত্রে এদেশের মূলধারার চলচ্চিত্রে নারী মূখ্য নয়, গৌণ মাত্র। অথচ চলচ্চিত্রের মতো একটি শক্তিশালী গণমাধ্যম নারীর ইতিবাচক ইমেজ সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখতে পারে। আর তাই এদেশের যে সব নারী কর্মক্ষেত্রে , সংসারে সর্বত্র সামাজিক অর্থিনৈতিক- সাংস্কৃতিক অবদান রেখে চলছেন - তাদের জীবন সংগ্রাম , সাফল্য ও বঞ্চনার চিত্রায়ণ হওয়া প্রয়োজন চলচ্চেত্রের মতো একটি শক্তিশালী গণমাধ্যমে, সমাজ জীবনে যার প্রভাব খুব বেশি।
গণমাধ্যম ও নারী- ভুমিকা/ বিজ্ঞাপন পর্ব
আজকে বিজ্ঞাপনে নারীর উপস্থিতি নিয়ে কিছু বলার চেষ্টা করবো- নব্বইয়ের দশকে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে যে সব বিজ্ঞাপন প্রচার করা হতো বর্তমানে তা আরও আকর্ষণীয়, জৌলুসপূর্ণ ভাবে প্রচারিত হয়ে থাকে, বদলে গেছে উপস্থাপনের ধরণ। তবে তারপরও বিজ্ঞাপনে নারীর প্রতি যে দৃষ্টিভঙ্গি দেখা যায় তা সাধারণত নেতিবাচক। একটি বিজ্ঞাপনে দেখা যায় দেখা যায়বিশেষ একটি ব্র্যান্ডের টিভি স্বামীর (!) বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিয়ের অনুষ্ঠানেই জেদ ধরে মেয়েটি। এধরনের বিজ্ঞাপন যৌতুকের মতো ঘৃণ্য প্রথাকে প্রকারান্তরে সমর্থন করে। আবার মুখের ক্রিমের বিজ্ঞাপন গুলোতে দেখানো হচ্ছে মেয়ে কালো বলে বিয়ে ভেঙ্গে যাচ্ছে, আর সেই নির্দিষ্ট ক্রিম মাখার কারণে রং ফর্সা হওয়াতে নতুন উদ্যমে বিয়ে সম্পন্ন হচ্ছে এখানে মেয়ের গুণ নয় বরং রূপকেই প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। অথচ আমাদের দেশের খ্যাত অভিনেত্রী সূবর্ণা মুস্তফা, রোকেয়া প্রাচী, ভারতের কাজল, বিপাশা বসু, হলিউডের হ্যলবেরি বা জেনিফার লোপেজের গায়ের রং তাদের পথ চলার ক্ষেত্রে কোন বাধা হতে পারেনি।আর এসব বিজ্ঞাপন প্রকারান্তরে বর্ণবাদকেই উসকে দেয়। যত মসলার বিজ্ঞাপন আছে তার সবটা জুড়ে থাকে নারী, যেখানে সুবিধাভোগী হিসেবে পুরুষকে উপস্থাপন করা হচ্ছে। এমনও দেখা যায় স্বামী –স্ত্রী উভয়েই সারাদিন অফিস করে এসে স্ত্রী ঢুকলেন রান্না ঘরে আর স্বামী সংবাদপত্র পড়ে, টিভি দেখে সময় পার করছেন এবং টেবিলে এসে রান্না মুখরোচক কম হওয়াতে স্ত্রীকে বকাবকি করছেন। এবং সেই মসলায় রান্নার মুখরোচক হওয়া খাবারে সংসারে শান্তি ফিরে আসে। বস্তুত যারা বিজ্ঞাপন নির্মাণ করেন এবং করান তাদের কেউ কেউ মনে করে থাকেন বিজ্ঞাপনে নারীকে যেভাবে উপস্থাপন করা হয় তা সমাজেরই প্রতিচ্ছবি। কিন্তু পণ্যের উৎপাদক ও বিক্রেতা নারীর ইতিবাচক ভূমিকাকে বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন মাত্রায় দেখানো হলে একদিকে পণ্যের প্রচার ও হয় আর অন্যদিকে নারীর ইতিবাচক ভাবমূর্তিও প্রতিষ্ঠিত হয়। এক্ষেত্রে একটি চায়ের বিজ্ঞাপনে নারীকে হারিয়ে যেতে না দিয়ে বরং নিজের গুণাবলির প্রকাশ ঘটাতে বলা হচ্ছে। অন্য একটি ফলের জুসের বিজ্ঞাপনের নারীর নির্দিষ্ট একটি ফল নিয়ে ভবিষ্যত ভাবনার উপস্থাপন এবং বার্ধক্যে তার সেই ভাবনার বাস্তবরূপ দেখানো অন্য বিজ্ঞাপনের তুলনায় এধরনের বিজ্ঞাপনের প্রচারে প্রসার কোন অংশে কম নয় বরং বেশিই হতে পারে। উৎসর্গ: নারীর ইতিবাচক উপস্থাপনে নিবেদিত গণমাধ্যমের কর্মীদের সম্মানে।।
সোমবার, ২১ মে, ২০১২
বিশ্বাসঘাতক!
শরীর সর্বস্ব:
রবিবার, ২০ মে, ২০১২
আমার প্রথম ম্যুভি রিভিউ- "দ্য স্পীড"
অনেকদিন পর বলাকায় গেলাম বাঙলা সিনেমা অনন্ত জলীল অভিনিত ম্যুভি "দ্য স্পীড" দেখতে। সিনেমা শুরুর আগে পর্দা সরে গেল সিনেমা হলের এবং স্বাভাবিক ভাবেই জাতীয় সংগীত মিউজিকে পরিবেশন । কিন্তু অবাক হয়ে দেখলাম প্রায় ৩০% দর্শক সে সময় বসা থেকে উঠার নাম পর্যন্ত করেনি এই কয়েক মিনিট দাড়িয়ে জাতীয় পতাকাকে সম্মান প্রদর্শণ করতে।
সিনেমার শুরুই হলো বেশ দারুন সাউন্ডের ইফেক্ট দিয়ে। "দ্য স্পীড" নামটিকে সার্থক করতেই হয়তো।
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অনন্ত একজন সৎ দেশপ্রেমিক CIP ।সিনেমার শুরুতেই দেখা গেল বেশ ব্যায়াম করছেন। একজন নায়ক হিসেবে দর্শকদের কাছে যা বেশ আকর্ষণীয় বটে। অনন্ত জলীলকে নিয়ে অনেক মজার মজার কথা এর আগে শুনেছি। শুনে অভিজ্ঞতা তেমন ভালো ছিলো না। কিন্তু অনন্তর এপ্রোচ দেখে বেশ আশার আলো দেখতে পেলাম।
ছোটবেলাতেই বাবা-মা মারা যাওয়ায় বড় ভাইয়ের কাছে বড় হওয়ার পর সন্ত্রাসীদের গুলিতে ভাই-ভাবী নিহত হলে বড় ভাইয়ের ব্যবসার দায়িত্ব নিয়ে অনন্ত তার সততায় সেটাকে AJI Park (অনন্ত জলিল ইন্ডাস্টিয়াল পার্ক) বানাতে সক্ষম হন।
এদিকে দূর্নীতিবাজ কিবরিয়া (আলমগীর) তার ব্যবসায় লস খেতে শুরু করেন অনন্তর সৎ ব্যবসার জন্যে। ফলে সন্ত্রাসী দিয়ে অনন্তর উপর হামলা হয়। অনন্তর সিকিউরিটি সিস্টেম ভেঙ্গে গেলেও শেষে অনন্ত নিজেই অস্ত্র হাতে তুলে ঘায়েল করে ফেলেন সব শত্রুদের এবং কিবরিয়াকে বাসায় যেয়ে বলে আসেন " নীতিবানরা দূর্নীতিবাজদের চ্যালেঞ্জ করে না, থ্রেট দেয়" এদিকে বিদেশী এন্ড্রু তার ব্যবসায় সমুহ ক্ষতি হয়ে যাবার ভয়ে কিবরিয়াকে সামলাতে না পেরে অনন্তর কাছে গেলে অনন্ত তার মুখোশ খুলে দেন। দেশী খেলোয়াররা যে বিদেশে যেয়ে আর দেশে ফিরে আসে না তাদেরই একজন এনায়েতুল্লাহ এখন বদলে নিজেকে বানিয়েছে এন্ড্রু তা অনন্ত এ্যান্ড্রুর মুখের উপর বলে দেয়্।
এদিকে বড় ভাইয়ের রেখে যাওয়া একমাত্র কন্যা দৃষ্টি (দীঘি)র সেবায় সারাক্ষণ ব্যস্ত দুই ইয়া মুটকি স্কার্ট, টপস পড়া পরিচারিকা। চাচ্চুর জানের জান বৃষ্টির সাথে চাচ্চুর একটি দারুন গান পরিবেশন হয় এই ফাঁকে। এখানে বলে রাখা ভালো চাচ্চুর আর ভাতিজার সম্পর্ক আর গানের কথা না শুনে কেউ যদি বোবা অভিনয় দেখে তবে অবাক হয়ে ভাববে কি রে, এতো বড় নায়কের সাথে এই পিচ্চি নায়িকা কেমন করে কি?! দীঘির অভিনয় আর এ্যাপ্রোচ তেমনই ছিলো।
এজিআই পার্কের ম্যানেজারের বোন লন্ডন থেকে ফ্যাশন ডিজাইন-এর উপর পড়ে এসেছেন মালয়েশিয়ান অভিনেত্রী "পারভীন" পুরোটা সিনেমা জুরে যার চমৎকার শালীন উপস্থাপন সপরিবারে দেখার মতো সিনেমাতে অনুপ্রাণিত করবে। এমনকি তাদের বাসর রাতের খাটের চারপাশে ইদুর, বিড়াল খেলাও ছিলো খুবই চমৎকার উপস্থাপন।
কক্সবাজারে হানিমুন করতে গিয়ে শত্রুর গুলিতে আক্রান্ত্ত হয়ে বৃষ্টি যায় মরে। এখানে অবাক হলাম অনন্তর মতো একজন বিজনেস ম্যাগনেটের সিকিউরিটির দূর্বল ব্যবস্থাপনা দেখে।
পরবর্তীতে তারা স্বামী-স্ত্রী মিলে ব্যবসার কাজে মালয়েশিয়া গেলে সেখানে পুত্রজায়া সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে গেলে সেখান থেকে কিডন্যাপড হয় তার স্ত্রী "সন্ধ্যা" আর অনন্ত গুলি খেয়ে মালয়েশিয়ার হসপিটালে। একটু সুস্থ হলে হাসপাতালের বেডেই তাকে একটি সিডি আর একটি ঘরি দিয়ে যাওয়া হয়। সত্যি অবাক হয়ে ভাবছিলাম, কিরে ভাই, গয়নার বাক্সে দিলো সিডি, আবার ঘড়ি দিলো কেন?!
সিডি চালানোর পর বুঝলাম। স্ত্রী সন্ধ্যাকে নিয়ে ওরা একটি বুলেট প্রুফ কাচের গ্যাস চেম্বারে রেখেছে। যেখানে ৫ দিন পর্যন্ত অক্সিজেন থাকবে এবং তারপর অক্সিজেন শেষে কার্বণডাই অক্সাইডের বিষাক্ততায় সেখানেই মারা যাবে। এর একমাত্র খোলার পথ হলো সেই ঘড়িতে কিবরিয়াদের ৫ জনের আই কন্টাক্ট (রেটিনা স্ক্যান করে) দিলেই তবে সেই ঘর খুলবে।
এর মধ্যে চরম দুঃখের কোষ্ঠকাঠিন্য ভরা হৃদয় খানের কন্ঠে একটা গান গেয়ে ফেলে নায়ক। পরে রাস্তায় গুন্ডাদের হাত থেকে রক্ষা করে বাংলাদেশে এক সময়ের মালয়েশিয়ান রাষ্ট্রদূতের কন্যা (রাশিয়ার নানা)কে।
এখানে নানাকে যেমন দেখাচ্ছে, ম্যুভিতে দেখতে সে আরো অনেক বেশিই আকর্ষণীয়। নানা অনেক ভাবে অনন্তকে সহযোগিতা করে একসময় শত্রুদের হাতে জীবন দেয়ার শেষ সময়ে তার ভালোবাসার কথা জানিয়ে যায় (আহারে বেচারী!)
একে একে চারজন রাশিয়ান রেসলার স্মাদি, আফ্রিকান বক্সার মাইক বোস, মালয়েশিয়ান বক্সার আটন এবং ইতালিয়ান নিনোর আই কন্টাক্ট নিতে সক্ষম হলেও কিবরিয়ার আই কন্টাক্ট নেবার আগেই হার না মানা কিবরিয়া নিজেকে গুলি করে।
ফলে অনন্ত সেই বুলেটপ্রুফ গ্লাস কোন ভাবেই ভাংতে না পেরে শেষ ভরসা গলায় থাকা লকেট কোরানের আশ্রয় নিয়ে আল্লাহকে ডাকার ফলে ভেঙে যায় সেই দেয়াল।
অতঃপর মধুরেন সমাপয়েত।
ম্যুভির উল্লেখযোগ্য ভালো দিকঃ
১. প্রতিটি নারী চরিত্রের পোষাক এবং শরীরের ভঙ্গি ছিলো শালিন এমন কি বোনাস নায়িকা বা গুন্ডা বাহিনীর নারী সবাই।
২. গানগুলো বেশ শ্রুতিমধুর (যদিও মনে নেই একটারও কথা :( )
৩. গানের কোরিয়গ্রাফ বেশ সুন্দর ছিলো।
৪. সাউন্ড সিস্টেম খুবই ভালো লেগেছে। এমনকি মাইক্রোলেভেলেও তারা সাউন্ডের কাজগুলো বেশ সুচারুরুপেই করেছে।
৫. ৪৩৫ এক্সট্রিম আলট্রা প্রাইম লেন্সের ক্যামেরা আর হলিউডে আর বলিউডে ব্যবহৃত ব্যয়বহুল ক্যামেরার কাজ বেশ দারুন ছিলো।
ম্যুভির যেই কাজ গুলো আরো ভালো হতে পারতোঃ
১. অনন্ত জলীলকে নাচে তেমন পারদর্শী নয় বলেই মনে হলো।
২. নায়কের ভয়েস এখনও সিনেমাপোযোগী নয় বলেই মনে হলো, এক্ষেত্রে অন্য কাউকে দিয়ে ডাবিংয়ের কাজটা করানো যেতো।
৩. ইংরেজী বলার ঢংটা এতোবড় ব্যবসায়ী হিসেবে আরো বেশি চৌকোস হতে পারতো।
৪. ডায়লগ গুলোকে টিভিতে বিজ্ঞাপনের মতো মনে হয়েছে।
৫. নায়িকা লন্ডন থেকে কেমন করে PIA প্লেনে এলো? আমিতো জানি লন্ডন থেকে হয় বৃটিশ এয়ারওয়েজ, গালফ এয়ার বা এমিরাটে আসে। কি জানি PIA -র ব্যাপারটা মনে খচখচ করছে।
৬. শেষে আশা কোরানের লকেটটা হাতে নিয়ে আল্লাহকে বলার পর যদি দেখাতো আলমগীর চোখ খুলেছে তবে ওই অংশটুকু বরং আরো বেশি আকর্ষণীয় হতে পারতো যা ধর্মীয় অস্বাভাবিকতা দিয়ে শেষটাতে কিছুটা আকর্ষণ নষ্টই করা হয়েছে বলবো।
কিছু ব্যাপারে মনে হয়েছে রাজনৈতিক চামচামি করা হয়েছে। যেমন দেশে এখন মানুষ খাবারে কষ্ট পায় না। সরকার এ ব্যাপারে বেশ কাজ করছে।
ডিজিটাল বাংলাদেশ , ডিজিটাল বাংলাদেশ বলে গলা ফাটানো হয়েছে কয়েকবার।
সবশেষে বলবো...সপরিবারে যেয়ে দেখার মতো চমৎকার একটা সম্ভাবনাময় সিনেমা। সব মিলিয়ে ভালো লেগেছে অনেক। অনন্ত জলিলের ভবিষ্যৎ সিনেমা জীবনের সাফল্য কামনা করি।
১৯৯৯ সালের অক্টোবর মাসের কোন একদিন: পত্র
আমি মানুষের সাথে মিশতে যেয়ে মানুষের মজ্জার ভেতরে ঢুকে যাই-তার একটাই কারণ- অতোটা ভেতরে না ঢুকলে তার আসল মুখটা দেখতে পাবো না। প্রতিটি মানুষই একটা শক্ত মুখোশ এটেঁ তার চারপাশে ঘুরে বেড়ায়- আমাদের সাধ্য কি তার আসল মুখটা দেখি!! যাই হোক- মেয়েদেরকে নিয়ে আপনার ভেতর কোন হ্যাংলামো নেই-এই একটা মাত্র ব্যাপারই শেষ পর্যন্ত হয়তো আপনার সাথে থাকার জন্যেঅনুপ্রেরণা যুগিয়েছে বা যোগাবে। আমি নিজে প্রচুর ছেলেদের সাথে মিশি-সে ছোটই হোক বা বড়ই হোক। সত্যি কথা বলতে কি ছেলেদের মেয়েদেরকে নিয়ে যে হ্যাংলামিটা আমি সবচেয়ে বেশি অপছন্দ করি আমি নিজেও যেটা করি-কেন করি যদি জিজ্ঞেস করেন বলবো-আপনি C.U.O থাকাবস্থায় বিভিন্ন রংয়ের কলম রাখতেন কেন?- আমাকে যেই উত্তরটা দিয়েছিলেন সেটাই। মানিক ভাই, অনেক কিছুই করি-আপনার মেজাজ খারাপ হয়, জানি হওয়াটাই স্বাভাবিক। তবুও কিন্তু আপনাকেই দোষারোপ করি। যতো যাই করি প্লিজ সন্দেহ করবেন না। মাথা খারাপ হয়ে যায়। জানেনইতো ইচ্ছে হলে স্ট্রেইটকাট সব বলবো, জীবনটাতো আমার। ভয় পাবেন না "আছি"। আবার সেই একই ব্যাপার এখন পর্যন্ত আপনার উপর আমার সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা রয়েছে।
নারী-পুরুষ নিয়ে একটি বৈষম্যহীন সমাজের কথা বলি
নতুন কিছু বিষয় নয়; বাংলা ভাষায় জেন্ডার সম্পর্কে অনেক প্রকাশনা আছে। শুধু আমি যখন জেন্ডার সম্পর্কে তত্ত্ব, তথ্য জানতে চাচ্ছিলাম তখন(২০০৯ এর শেষের দিকে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার হতে শুরু করে, শাহবাগে অবস্থিত গণ গ্রন্থাগার এমন আরও অনেক পাঠের জায়গা হতে খুব সুখকর অভিজ্ঞতা নিয়ে আসতে পারিনি। তাই নিজে যতোটা জানলাম তা নিজের কাছে না রেখে আর সবাইকে জানানোর চেষ্টা করে যাবো।
'জেন্ডার' শব্দটি মুলত নারী ও পুরুষ উভয়কেই বোঝায়, বোঝায় নারী-পুরুষকে নিয়ে বৈষম্যহীণ সমাজের, রাষ্ট্রের কথা। সংস্কৃতি ও সমাজ নারী ও পুরুষ সম্পর্কে যে সব দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবোধ গড়ে তোলে, ভিন্ন ভিন্ন আচরণ করতে শেখায়, কিংবা ভুমিকা পালন করতে বলে, সেসবই হচ্ছে জেন্ডার। যেহেতু নারীরাই সাধারণত প্রতিনিয়ত বৈষম্যের শিকার হচ্ছে, পিছিয়ে পড়ছে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, হচ্ছে প্রতিনিয়ত সুবিধা বঞ্চিত, তাই জেন্ডার সম্পর্কে লিখতে যেয়ে আমি সাধারণত নারীকেই গুরুত্ব দেবার চেষ্টা বেশি করেছি। একজন নারী হয়ে নারীকে গুরুত্ব দেয়াটা স্বজনপ্রীতি হতে পারে। কিন্তু পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠীর একটা বিশাল অংশকে বাদ দিয়ে বা পেছনে ফেলে বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তোলা আদৌ কতোটুকু সম্ভব তা আমার বোধগম্য নয়।
ঢাবি-র ক্যাম্পাস দিয়ে আসতে যেয়ে চোখ আটকে গেল এই পোস্টারে, এই উচ্ছলতা বড্ড টেনে নিল আমায়, উপায় না দেখে ছবি তুলে নিয়ে এলাম পোস্টার থেকেই।
আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবস অনেকেই এই দিবসটিকে তাচ্ছিল্ল্য করে বলে থাকে একদিন যদি নারীদের দিন হয় তবে বাকী ৩৬৪ দিন (একজনকে বলতে দেখলাম এ বছর ৩৬৫ দিন ) পুরুষের। তবে ২১ শে ফেব্রুয়ারী তো ১ দিন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস/ শহীদ দিবস তো বটেই, ১৬ ডিসেম্বর জাতীয় বিজয় দিবস, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস ইত্যাদি এগুলো ১ দিন করে মানে কি?! সিম্বলিক ভাবে একদিন হলেও এগুলোর চর্চা যেন আমরা প্রতিদিনই করি এসব দিবস থেকে কি সেই শিক্ষা আমরা পাই না?! আমাদের কি এসব বিশেষ দিবস থেকে সেই শিক্ষা পাওয়া উচিত নয়?!
আমি নিজে নারী হয়ে আমার সীমাবদ্ধ জ্ঞান থেকে মনে করি না যে সমান অধিকার চাই, হেন চাই, তেন চাই। পৃথিবীকে বাসযোগ্য সুন্দর করার জন্য প্রকৃতিতে আছেই মূলত দুই ধরণ, নারী এবং পুরুষ। তাদের শরীরের, সমাজের, পারিপার্শ্বিক চাহিদা অনুযায়ী ন্যায্য পাওনাগুলি পুরণের পথ সুগম হোক এই প্রত্যাশাই করি।
বোকা নারী!……..সমান অধিকার নয়, বল ন্যায্য অধিকার চাই (একটি ভাববাদী পোস্ট!)
পরের বার আবার দাওয়াত দেওয়া হলো, এবার কিন্তু রাজা মশাই আর ভুল করলেন না। এবার দুজনের সামনেই নরম কচি তাজা তাজা সবুজ ঘাস দেওয়া হলো। মহিষের তো আজকে পোয়া বারো! জিভে জল এসে যাচ্ছে! সে আর সইতে না পেরে হম্ হম্ করে সুস্বাদু, পুষ্টিকর ঘাস খাওয়া শুরু করলো। বাঘ বেচারার তো গালে হাত, সে কি খাবে! ক্ষুধায় পেট চোঁ চোঁ করছে। এই দেখে রাজামশায় তো ফাঁপরে পরে গেলেন, কি মুশকিল! এদের দুজনকে তো ঠিক মতো মেহমানদারী করা যা্চ্ছে না।
পরের বার রাজা মশায় গত দুইবারের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে বাঘ কে দিলেন বিশাল বড় আকারের হরিণের রোস্ট, আর মহিষকে দিলেন বিরাট বড় রাজ থালায় তাজা তাজা ঘাস। এইবার বাঘ আর মহিষ দুইজনেই পেট পুরে, আয়েশ করে খেয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতে তুলতে হাসি মুখে রাজার কাছ থেকে বিদায় নিলেন। রাজাও এবার বুঝলেন যে কখন, কাকে, কিভাবে তার প্রয়োজন মতো, চাহিদা অনুয়ায়ী ব্যবস্থাপত্র দিতে হয়।
নারী....আর কতোকাল রবে শুধুই অর্কিড হয়ে!!!
উৎসর্গ: সুবিধা বঞ্চিত নারী, তোমার চরণে
প্রচলিত ধ্যান-ধারণা হচ্ছে নারী হবে নরম-কোমল, সর্বংসহা (মাতা), মনোরঞ্জনকারিনী (বধূ)।
তারা থাকবে অন্দরমহলে।
আর তাই প্রবাদে শোনা যায়...
'ঝি নষ্ট হয় হাঁটে, বউ নষ্ট হয় ঘাটে'।....অর্থাৎ ঝি কে হাঁটে-বাজারে-মার্কেটে পাঠানো যাবে না আর বউকে পুকুর ঘাটে পাঠানো যাবে না (যদিও গ্রাম এলাকায় পরিবারের পানির যোগান দাতা সাধারণত নারীই)। অন্দর মহলের নারী, মাতা-বধূ যখন স্বামীর মৃত্যুতে, স্বামীর নির্যাতন ইত্যাদি আরো বিভিন্ন কারণে আশ্রয়হীন হচ্ছে, স্বামীর দূরারোগ্য ব্যাধিতে/ অন্যান্য প্রতিকূল পরিস্থিতিতে অর্থকষ্টে অন্যের কাছে হাত পাতছে, কন্যা শিশুটির যখন আর স্বাভাবিক, নিরাপদ শৈশব, কৈশোরের নিশ্চয়তা থাকে না তখন প্রশ্ন জাগে মনে, তাহলে অন্দর মহলের এই হেরেমবাসিনী মাতা-বধূ-কন্যার ভবিষ্যৎ কি? সে কি তার বাবা-ভাইয়ের কাছে আশ্রয়, সাহায্য প্রার্থনা করবে, শিশুটি অন্যের গলগ্রহ হয়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে বেড়ে উঠবে?
আর তাই প্রয়োজন নিরাপদ শৈশবের, প্রয়োজন আত্ননির্ভরশিলতার, শিক্ষার যেই শিক্ষা তাকে আলোর পথ দেখাবে, বলবে মুক্তির কথা। যে অন্যের কাঁধের বোঝা হয়ে নয় বরং নিজে একাই পথ চলতে পারবে আপন আলোয়।
শব্দের অর্থ:
ঝি: মেয়ে/ কন্যা শিশু/ নারী
হাত পাতা: সাহায্য প্রার্থনা করা
সৌদি নারী...অতঃপর রোকেয়া
(বি.দ্রঃ ১. সৌদি আরবের শাসন শুধু মাত্র মুসলিম আইন মেনে নয় বরং তাদের নিজস্ব কিছু প্রথা, রীতি-নীতিও মেনে চলে, এর সংস্কার প্রয়োজন।
২. আর কবির ভাষায় ...অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক জোৎস্নায় পাক ঠাঁই কিছুটাতো চাই, কিছুটাতো চাই।...)
তথ্যসূত্র:
১. শুধুই নারীদের, দৈনিক প্রথমআলো, ১৪ জুলাই ২০১১
২. গোলাম মুরশিদ, রাসসুন্দরী থেকে রোকেয়া, নভেম্বর ২০০০, বাংলা একাডেমী
৩. Click This Link
৪. http://www.unhchr.ch/udhr/lang/bng.htm
শুক্রবার, ১৮ মে, ২০১২
আমার প্রথম ম্যুভি রিভিউ- " দ্য স্পীড"
সিনেমার শুরুই হলো বেশ দারুন সাউন্ডের ইফেক্ট দিয়ে। "দ্য স্পীড" নামটিকে সার্থক করতেই হয়তো।
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অনন্ত একজন সৎ দেশপ্রেমিক CIP ।সিনেমার শুরুতেই দেখা গেল বেশ ব্যায়াম করছেন। একজন নায়ক হিসেবে দর্শকদের কাছে যা বেশ আকর্ষণীয় বটে। অনন্ত জলীলকে নিয়ে অনেক মজার মজার কথা এর আগে শুনেছি। শুনে অভিজ্ঞতা তেমন ভালো ছিলো না। কিন্তু অনন্তর এপ্রোচ দেখে বেশ আশার আলো দেখতে পেলাম।
ছোটবেলাতেই বাবা-মা মারা যাওয়ায় বড় ভাইয়ের কাছে বড় হওয়ার পর সন্ত্রাসীদের গুলিতে ভাই-ভাবী নিহত হলে বড় ভাইয়ের ব্যবসার দায়িত্ব নিয়ে অনন্ত তার সততায় সেটাকে AJI Park (অনন্ত জলিল ইন্ডাস্টিয়াল পার্ক) বানাতে সক্ষম হন।
এদিকে দূর্নীতিবাজ কিবরিয়া (আলমগীর) তার ব্যবসায় লস খেতে শুরু করেন অনন্তর সৎ ব্যবসার জন্যে। ফলে সন্ত্রাসী দিয়ে অনন্তর উপর হামলা হয়। অনন্তর সিকিউরিটি সিস্টেম ভেঙ্গে গেলেও শেষে অনন্ত নিজেই অস্ত্র হাতে তুলে ঘায়েল করে ফেলেন সব শত্রুদের এবং কিবরিয়াকে বাসায় যেয়ে বলে আসেন " নীতিবানরা দূর্নীতিবাজদের চ্যালেঞ্জ করে না, থ্রেট দেয়" এদিকে বিদেশী এন্ড্রু তার ব্যবসায় সমুহ ক্ষতি হয়ে যাবার ভয়ে কিবরিয়াকে সামলাতে না পেরে অনন্তর কাছে গেলে অনন্ত তার মুখোশ খুলে দেন। দেশী খেলোয়াররা যে বিদেশে যেয়ে আর দেশে ফিরে আসে না তাদেরই একজন এনায়েতুল্লাহ এখন বদলে নিজেকে বানিয়েছে এন্ড্রু তা অনন্ত এ্যান্ড্রুর মুখের উপর বলে দেয়্।
এদিকে বড় ভাইয়ের রেখে যাওয়া একমাত্র কন্যা দৃষ্টি (দীঘি)র সেবায় সারাক্ষণ ব্যস্ত দুই ইয়া মুটকি স্কার্ট, টপস পড়া পরিচারিকা। চাচ্চুর জানের জান বৃষ্টির সাথে চাচ্চুর একটি দারুন গান পরিবেশন হয় এই ফাঁকে। এখানে বলে রাখা ভালো চাচ্চুর আর ভাতিজার সম্পর্ক আর গানের কথা না শুনে কেউ যদি বোবা অভিনয় দেখে তবে অবাক হয়ে ভাববে কি রে, এতো বড় নায়কের সাথে এই পিচ্চি নায়িকা কেমন করে কি?! দীঘির অভিনয় আর এ্যাপ্রোচ তেমনই ছিলো।
এজিআই পার্কের ম্যানেজারের বোন লন্ডন থেকে ফ্যাশন ডিজাইন-এর উপর পড়ে এসেছেন মালয়েশিয়ান অভিনেত্রী "পারভীন" পুরোটা সিনেমা জুরে যার চমৎকার শালীন উপস্থাপন সপরিবারে দেখার মতো সিনেমাতে অনুপ্রাণিত করবে। এমনকি তাদের বাসর রাতের খাটের চারপাশে ইদুর, বিড়াল খেলাও ছিলো খুবই চমৎকার উপস্থাপন।
কক্সবাজারে হানিমুন করতে গিয়ে শত্রুর গুলিতে আক্রান্ত্ত হয়ে বৃষ্টি যায় মরে। এখানে অবাক হলাম অনন্তর মতো একজন বিজনেস ম্যাগনেটের সিকিউরিটির দূর্বল ব্যবস্থাপনা দেখে।
পরবর্তীতে তারা স্বামী-স্ত্রী মিলে ব্যবসার কাজে মালয়েশিয়া গেলে সেখানে পুত্রজায়া সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে গেলে সেখান থেকে কিডন্যাপড হয় তার স্ত্রী "সন্ধ্যা" আর অনন্ত গুলি খেয়ে মালয়েশিয়ার হসপিটালে। একটু সুস্থ হলে হাসপাতালের বেডেই তাকে একটি সিডি আর একটি ঘরি দিয়ে যাওয়া হয়। সত্যি অবাক হয়ে ভাবছিলাম, কিরে ভাই, গয়নার বাক্সে দিলো সিডি, আবার ঘড়ি দিলো কেন?!
সিডি চালানোর পর বুঝলাম। স্ত্রী সন্ধ্যাকে নিয়ে ওরা একটি বুলেট প্রুফ কাচের গ্যাস চেম্বারে রেখেছে। যেখানে ৫ দিন পর্যন্ত অক্সিজেন থাকবে এবং তারপর অক্সিজেন শেষে কার্বণডাই অক্সাইডের বিষাক্ততায় সেখানেই মারা যাবে। এর একমাত্র খোলার পথ হলো সেই ঘড়িতে কিবরিয়াদের ৫ জনের আই কন্টাক্ট (রেটিনা স্ক্যান করে) দিলেই তবে সেই ঘর খুলবে।
এর মধ্যে চরম দুঃখের কোষ্ঠকাঠিন্য ভরা হৃদয় খানের কন্ঠে একটা গান গেয়ে ফেলে নায়ক। পরে রাস্তায় গুন্ডাদের হাত থেকে রক্ষা করে বাংলাদেশে এক সময়ের মালয়েশিয়ান রাষ্ট্রদূতের কন্যা (রাশিয়ার নানা)কে।
এখানে নানাকে যেমন দেখাচ্ছে, ম্যুভিতে দেখতে সে আরো অনেক বেশিই আকর্ষণীয়। নানা অনেক ভাবে অনন্তকে সহযোগিতা করে একসময় শত্রুদের হাতে জীবন দেয়ার শেষ সময়ে তার ভালোবাসার কথা জানিয়ে যায় (আহারে বেচারী!)
একে একে চারজন রাশিয়ান রেসলার স্মাদি, আফ্রিকান বক্সার মাইক বোস, মালয়েশিয়ান বক্সার আটন এবং ইতালিয়ান নিনোর আই কন্টাক্ট নিতে সক্ষম হলেও কিবরিয়ার আই কন্টাক্ট নেবার আগেই হার না মানা কিবরিয়া নিজেকে গুলি করে।
ফলে অনন্ত সেই বুলেটপ্রুফ গ্লাস কোন ভাবেই ভাংতে না পেরে শেষ ভরসা গলায় থাকা লকেট কোরানের আশ্রয় নিয়ে আল্লাহকে ডাকার ফলে ভেঙে যায় সেই দেয়াল।
অতঃপর মধুরেন সমাপয়েত।
ম্যুভির উল্লেখযোগ্য ভালো দিকঃ
১. প্রতিটি নারী চরিত্রের পোষাক এবং শরীরের ভঙ্গি ছিলো শালিন এমন কি বোনাস নায়িকা বা গুন্ডা বাহিনীর নারী সবাই।
২. গানগুলো বেশ শ্রুতিমধুর (যদিও মনে নেই একটারও কথা :( )
৩. গানের কোরিয়গ্রাফ বেশ সুন্দর ছিলো।
৪. সাউন্ড সিস্টেম খুবই ভালো লেগেছে। এমনকি মাইক্রোলেভেলেও তারা সাউন্ডের কাজগুলো বেশ সুচারুরুপেই করেছে।
৫. ৪৩৫ এক্সট্রিম আলট্রা প্রাইম লেন্সের ক্যামেরা আর হলিউডে আর বলিউডে ব্যবহৃত ব্যয়বহুল ক্যামেরার কাজ বেশ দারুন ছিলো।
ম্যুভির যেই কাজ গুলো আরো ভালো হতে পারতোঃ
১. অনন্ত জলীলকে নাচে তেমন পারদর্শী নয় বলেই মনে হলো।
২. নায়কের ভয়েস এখনও সিনেমাপোযোগী নয় বলেই মনে হলো, এক্ষেত্রে অন্য কাউকে দিয়ে ডাবিংয়ের কাজটা করানো যেতো।
৩. ইংরেজী বলার ঢংটা এতোবড় ব্যবসায়ী হিসেবে আরো বেশি চৌকোস হতে পারতো।
৪. ডায়লগ গুলোকে টিভিতে বিজ্ঞাপনের মতো মনে হয়েছে।
৫. নায়িকা লন্ডন থেকে কেমন করে PIA প্লেনে এলো? আমিতো জানি লন্ডন থেকে হয় বৃটিশ এয়ারওয়েজ, গালফ এয়ার বা এমিরাটে আসে। কি জানি PIA -র ব্যাপারটা মনে খচখচ করছে।
৬. শেষে আশা কোরানের লকেটটা হাতে নিয়ে আল্লাহকে বলার পর যদি দেখাতো আলমগীর চোখ খুলেছে তবে ওই অংশটুকু বরং আরো বেশি আকর্ষণীয় হতে পারতো যা ধর্মীয় অস্বাভাবিকতা দিয়ে শেষটাতে কিছুটা আকর্ষণ নষ্টই করা হয়েছে বলবো।
কিছু ব্যাপারে মনে হয়েছে রাজনৈতিক চামচামি করা হয়েছে। যেমন দেশে এখন মানুষ খাবারে কষ্ট পায় না। সরকার এ ব্যাপারে বেশ কাজ করছে।
ডিজিটাল বাংলাদেশ , ডিজিটাল বাংলাদেশ বলে গলা ফাটানো হয়েছে কয়েকবার।
সবশেষে বলবো...সপরিবারে যেয়ে দেখার মতো চমৎকার একটা সম্ভাবনাময় সিনেমা। সব মিলিয়ে ভালো লেগেছে অনেক। অনন্ত জলিলের ভবিষ্যৎ সিনেমা জীবনের সাফল্য কামনা করি।
http://www.youtube.com/watch?v=-gCzc1BCm6g