ম্যুভি রিভিউ- "দ্য স্পীড"

অনেকদিন পর বলাকায় গেলাম বাঙলা সিনেমা অনন্ত জলীল অভিনিত ম্যুভি "দ্য স্পীড" দেখতে। সিনেমা শুরুর আগে পর্দা সরে গেল সিনেমা হলের এবং স্বাভাবিক ভাবেই জাতীয় সংগীত মিউজিকে পরিবেশন । কিন্তু অবাক হয়ে দেখলাম প্রায় ৩০% দর্শক সে সময় বসা থেকে উঠার নাম পর্যন্ত করেনি এই কয়েক মিনিট দাড়িয়ে জাতীয় পতাকাকে সম্মান প্রদর্শণ করতে। সিনেমার শুরুই হলো বেশ দারুন সাউন্ডের ইফেক্ট দিয়ে। "দ্য স্পীড" নামটিকে সার্থক করতেই হয়তো।

১৯৯৯ সালের অক্টোবর মাসের কোন একদিন

মানুষের জীবনে বোধ সঞ্চারের এক নির্ভেজাল উপাদানের নাম কবিতা। কবিতা কখনো মানুষের মনকে রাঙিয়ে দেয়, কখনো বদনার কালো রঙ ঢেলে উপলব্ধিগুলোকে সতেজ করে তোলে; জীবন দর্শনের পথকে করে প্রশস্ত।

নারী-পুরুষ নিয়ে একটি বৈষম্যহীন সমাজের কথা বলি

'জেন্ডার' শব্দটি মুলত নারী ও পুরুষ উভয়কেই বোঝায়, বোঝায় নারী-পুরুষকে নিয়ে বৈষম্যহীণ সমাজের, রাষ্ট্রের কথা। সংস্কৃতি ও সমাজ নারী ও পুরুষ সম্পর্কে যে সব দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবোধ গড়ে তোলে, ভিন্ন ভিন্ন আচরণ করতে শেখায়, কিংবা ভুমিকা পালন করতে বলে, সেসবই হচ্ছে জেন্ডার।

সৌদি নারী...অতঃপর রোকেয়া

যদি আজ থেকে প্রায় একশ বছর পেছনে তাকাই বেগম রোকেয়ার (রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন১৮৮০-১৯৩২) জীবনে যিনি সৌদি নারীদের মতো প্রাতিষ্ঠানিক উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পাননি কিন্তু তার দেখানো আলোতে এখনও আমরা পথ দেখি।

নারী....আর কতোকাল রবে শুধুই অর্কিড হয়ে!

প্রচলিত ধ্যান-ধারণা হচ্ছে নারী হবে নরম-কোমল, সর্বংসহা (মাতা), মনোরঞ্জনকারিনী (বধূ)। তারা থাকবে অন্দরমহলে। আর তাই প্রবাদে শোনা যায়... 'ঝি নষ্ট হয় হাঁটে, বউ নষ্ট হয় ঘাটে'।....অর্থাৎ ঝি কে হাঁটে-বাজারে-মার্কেটে পাঠানো যাবে না আর বউকে পুকুর ঘাটে পাঠানো যাবে না (যদিও গ্রাম এলাকায় পরিবারের পানির যোগান দাতা সাধারণত নারীই)।

রবিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

স্বামীর মৃত্যুতে স্ত্রীরা কাঁদে কেন?

সাধারণ স্বামীর মৃত্যুতে স্ত্রীরা আহাজারি করে কাঁদে এই বলে যে, এখন তার পোলাপাইনগুলারে দেখবো কে? চলবো কেমন করে? ইত্যাদি নানা ইতং বিতং কথা। তাহলে যদি এমন হতো যে স্বামী স্ত্রীকে অর্থনৈতিক সব রকমের স্বচ্ছলতা দিয়ে গেলেন তবে, স্ত্রীরা কি বলে কাঁদতো?
অর্থনৈতিক নির্ভরতাই কি স্বামীর প্রতি স্ত্রীর ভালোবাসাকে জিইয়ে রাখে? প্রশ্নটা শুনতে খারাপ লাগতে পারে...কিন্তু এমন অনেক নারীকেই দেখা গেছে যারা অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল তারা স্বামীকে পরিত্যাগ করছে অবলীলায়।সেখানে অনেক ধরনেরই কারণ উঠে আসে তার সপক্ষে। কিন্তু অর্থনৈতিকভাবে নির্ভরশীল স্ত্রীরা কিন্তু স্বামী পরিত্যাগের কথা ভাবলেও তা বাস্তবে রুপ দিতে পারে না, আর্থিক কারণেই।
সেদিন এক বিদ্যালয়ের নিহত শিক্ষকের স্ত্রী বলছিলেন যদি তার স্বামী হাত পা ভেঙ্গে ঘরেও থাকতো তবুওতো প্রাইভেট পড়িয়ে দিনাতিপাত করতো...এই ধরনের কথা। তাহলে কি স্বামী উপার্জনক্ষম না হলে তার কোন মূল্য নেই?
আরো কথা আছে....আজ না হয় এই পর্যন্তই

শুক্রবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

নারী নিয়ে প্রবাদের সেকাল-একাল

প্রবাদ/প্রবচন ব্যবহারে অনেকেই বেশ পটু হয়ে থাকেন। আর আগের দিনের মানুষদের কাছে প্রবাদ বিশেষ মেনে চলা নীতির মতো ছিলো।

আগের দিনে নারীকে দেখা হতো হেরেমবাসিনী হিসেবে, শুধুই যুক্তিহীন আবেগ প্রবণ, দূবোর্ধ্য, স্পর্শকাতর হিসেবে। অকল্যাণ যা কিছু হয় সব নারীর দোষে।

আমাদের প্রথাগত সমাজে নারী চরিত্র কেমন তা কয়েকটি প্রবাদের মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করছি।

ভাই বড় ধন
রক্তের বাধন
যদিও বা পৃথক হয়
তবে, নারীর কারণ

☺ভাই যে কারো বেশ আদরের ধন তা বলাই বাহুল্য কিন্তু ধরেই নেয়া হয় যে বিয়ের পর (স্বাভাবিক সামাজিকতা) ভাই ততোক্ষণই কাছে থাকবে যতোক্ষণ কোন নারী তার উপর কোন নঞর্থক প্রভাব বিস্তার করবে না। কিন্তু সাধারণত এমন ভাবা হয় না যে পৃথক ভাইও কোন কারেণ হতে পারে নারী দ্বারা প্রভাবিত না হয়েই।

নদীতে নদীতে দেখা হয়
কিন্তু বোনে বোনে
দেখা হয় না।

☺সাধারণত নারীদের বিয়ের পর তাদের স্থান হয় স্বামীর ঘরে সেখানে তারা স্বামীর হুকুমের বাইরে কিছু করার ক্ষমতা রাখে না (যদিও বর্তমানে এই অবস্থার উন্নতি হচ্ছে)। আর এর ফলে বোনে বোনে চাইলেও দেখা হয় না। যেটা সাধারণত পুরুষদের বেলায় ঘটে না।

জাতের নারী কালো ভালো
নদীর জল ঘোলা ভালো।

☺সাধারণত আগে (বর্তমানেও অনেক ক্ষেত্রেই) পাত্র পক্ষ নারীর জাত দেখে মুলত বিয়ের সম্বন্ধ আনতো। এক্ষেত্রে নারী কতোটা শিক্ষিত বা কতোটা গুণী তার চেয়ে বেশি তার জাত ভালো কিনা তা দেখা হতো। এক্ষেত্রে হিন্দুদের মধ্যে শুদ্র শ্রেণীরা বেশি অবহেলিত ছিল। বর্তমানে যার উত্তরণ হচ্ছে।

পুরুষ রাগলে হয় বাদশা
নারী রাগলে হয় বেশ্যা।

☺পুরুষরা যদি রেগে ঘর ছাড়ে তবে সে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু নারী যেহেতু হেরেমবাসিনী তাই সে রাগ করে ঘর ছাড়লে তার শরীর বিক্রী করে জীবন চালানো ছাড়া আর কোন গতি থাকে না। কিন্তু বর্তমান সময়ে নারী শিক্ষিত হচ্ছে, অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে। কাজেই এক সময়ের এই প্রচলিত প্রবাদটি এখন আর গ্রহণ যোগ্য হতে পারে না।

উচঁ কপালী চিঁড়ল দাঁতী
লম্বা মাথার কেশ
এমন নারী করলে বিয়ে
ঘুরবে নানান দেশ।

☺এখানে নারীর বাহ্যিক রুপকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে বিয়ের ক্ষেত্রে। অথচ গুণ থাকলে যে, বাহ্যিক রুপ কোন ব্যাপার না তা বর্তমান সময় গুলোতে অনেকটাই প্রমাণিত।

রান্ধিয়া বারিয়া যেই বা নারী
পতির আগে খায়
সেই নারীর বাড়িতে শীঘগীর
অলক্ষী হামায়।

☺রান্না করার পর ততক্ষণ পর্যন্ত একজন স্ত্রী খেতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না তার স্বামী খাবে। বর্তমাণ সময়ের অনেক শ্বাশুরীদের মাঝেও এই প্রবণতা দেখা যায় যে, আগে তার পুত্র খাবে তারপর তার পুত্রবধু খাবে। এতে সাধারণতই নারীরা গ্যাস্ট্রিক সহ নানারকমের শারীরিক সমস্যায় ভুগে থাকে। এখন নারী/পুরুষ উভয় কেএষত্রই সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে এই অবস্থা অনেকাংশেই হ্রাস পাচ্ছে।

পতি বিনে
গতি নেই

☺এই প্রবচনটিতে প্রকাশ পায় যে, পতি ছাড়া নারী চলতে পারে না। লৈঙ্গিক শ্রমবিভাজন আর জেন্ডার অসম সম্পর্কের মধ্যে নারীকে স্বামীর মুখাপেক্ষী থাকতে হয়। এই অবস্থা সত্যিকার অর্থে এখনও অনেকাংশেই সত্যি। তারপরও নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের ফলে এই অবস্থার কিছুটা উন্নতি হচ্ছে।

পতির পায়ে থাকে মতি
তবে তারে বলে সতী

☺বিয়ের আগে নারীর সতীত্বের ধারণা নির্ভরশীল তার শরীরকে বাচিয়েঁ চলার উপর আর বিয়ের পর নারীর সতীত্ব রক্ষার ধরণ পাল্টে তা হয়ে যায় স্বামী নির্ভর। এখানে স্বামী অর্থাৎ পুরুষদের সতীত্বের বিষয়ে কখনোই কিছু শোনা যায় না সাধারণত।

পতি হারা নারী
মাঝি হারা তরী

☺নারী যে নিজের মতো করে জীবন যাপন করার ক্ষমতা নেই, এই ধারণাটাকে প্রতিষ্ঠিত করতেই এই প্রবচনটির সৃষ্টি হয়েছে বলে ধরে নেয়া হয়। এখানে নারীকে তরী আর পতিকে মাঝির সাথে তুলনা করা হয়েছে। নারীর শিক্ষা বিস্তার, অর্থনৈতিক সামর্থ্যই পারে একমাত্র এসকল ধারণা থেকে তাকে বের করে আনতে।

পথি নারী বিবর্জিতা
☺খুবই দুঃখজনক বিষয় হলো এই প্রবচন দ্বারা চলার পথেও নিজের আপন নারী কুলকেও বিবর্জিত করে চলার ধারণঅকে প্রতিষ্ঠিত করে। যেই নারী আলোর মুখই দেখেনি সে ঠিকমতো পথ চলতে পারবে না এটাই স্বাভাবিক বিষয়। হেরেমবাসিনী বন্দিনীর পক্ষেতো পথ চলার অভ্যাস/অভিজ্ঞতা কোনটাই থাকার কথা নয়। বর্তমাণ সময়েও অনেক নারীরাই আধুনিক, শিক্ষিত হওয়ার পরও পুরুষের উপর নির্ভর করে পথ চলতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। এই অব্যবস্থা থেকে নারীকে যেমন বেরিয়ে আসতে হবে, পুরুষদেরও সচেতন হবে নারীকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে।

পদ্মমুখি ঝি আমার পরের বাড়ি যায়
খেদা নাকি বউ এসে বাটার পান খায়

☺এখানে যদিও পরিষ্কার করে লৈঙ্গিক বিষয়টা উঠে আসে নি...এটা কোন পুরুষ বা নারীর মুখ থেকে আসা তারপরও সমাজের বউ-শ্বাশুড়ীর টানাপোড়েনের মুখরোচক বিষয়ই এর মূখ্য। নিজের মেয়ে যেমনই হোক তার দোষ যেমন মায়েদের চোখে পড়ে না, ঠিক তেমনই পরের মেয়ে যখন পুত্র বধু হিসেবে আসে তখন তার দোষগুলো খুব সহজেই শ্বাশুরীদের চোখে পড়ে। আর শ্বাশুরীদের এই মনোভাব বোঝাতেই সম্ভবত এই প্রবচনটির প্রচলন। এর থেকে আসলে বেরিয়ে আসা এখনও সম্ভব হয়ে উঠেনি। আজকে যেই নারী পুত্রবধু আগামীতে সেই শ্বাশুরী হয়ে একই ভুমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছে। এর থেকে সমাধানের পথ খুঁজতে সচেতনতার, মানবিকতার বিকল্প নেই।

ধন্যবাদ।।

উৎসঃ
ছবিঃ ইন্টারনেট
প্রবাদ/প্রবচনঃ মুরুব্বীদের কাছ থেকে এবং সেলিনা হোসনে ও মাসুদুজ্জামান সম্পাদিত জেন্ডার বিশ্বকোষ, ২য় খন্ড প্রথম প্রকাশ, ফেব্রুয়ারী ২০০৬

মঙ্গলবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

"মরদানা" (অবরোধ-বাসিনী:রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন)

এক
স্থানঃ রংপুর জিলা, পায়রা বন্দ গ্রামের জমিদার বাড়ী
সময়ঃ দুপুর ১টা-২টা
[নামাযীরা নামাযের উদ্দেশ্য ওযু করে ফেলেছে। সাহেবজাদী উম্মি ওজু করছে, আলতার মা বদনা হাতে উম্মিকে ওজুর জন্যে পানি ঢেলে দিচ্ছে।হঠাৎ এক কাবুলী মহিলাকে দেখে আলতার মার হাত হতে বদনা পড়ে গেল এবং সে চিৎকার করতে লাগলো।]

আলতার মাঃ আউ আউ! মরদটা কেন আইল!
কাবুলী বেগমঃ হেঁ মরদানা! হাম মরদানা হায়

[উম্মি কাবুলী বেগমের কথা শুনে হাঁপাতে হাঁপাতে ও কাঁপতে কাঁপতে তাঁর চাচী আম্মার কাছে গেলেন]

উম্মিঃ চাচী আম্মা! পায়জামা পরা একটা মেয়ে মানুষ এসেছে
চাচী আম্মাঃ [ব্যস্তভাবে] সে তোমাকে দেখেছে? 
উম্মিঃ [কাঁদো কাঁদো ভাবে] হাঁ!

[অন্য মেয়েরা নামায ভেঙ্গে ব্যস্তভাবে দরজার কপাট দিল]


সোশ্যাল নেটওয়ার্ক

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites