দেখুন এর কত্তো কত্তো ভালো দিক আছে...
প্রথম ছবিটি দেখুন। যেখানে ঢাকা শহরে পাশের বাড়ির খবরই আমরা রাখি না সেখানে একই ভ্যানে কয়েকজন মিলেমিশে যাওয়ার ফলে মিল মহব্বত বাড়বে । এতে সম্প্রীতি বাড়বে ।
ঢাকা শহরের অনেক রাস্তাতেই প্রয়োজনে রিক্সা, গাড়িকে পানিতে ভেসে চলার উপযুক্ত করে তৈরি করা উচিত ।
প্রথমেই আপনার বাহনকে কাদা পানিতে চলার উপযোগি করে তোলা প্রয়োজন। এতে আপনার লাভ ছাড়া ক্ষতি নেই। দেশেরও লাভ।
কী লাভ দেখুন-
আপনি আপনার ব্যক্তিগত গাড়িটিকে বা রিক্সা মহাজনরা বা বাস মালিকরা যখন তাদের বাহনটিকে কাদা পানিতে চলার উপযুক্ত করার জন্যে যে ব্যবস্থা নিবে তার জন্যে কোন সার্ভিস সেন্টার লাগবে। আর এতে করে ঢাকা শহরে এরকম অনেক সার্ভিস সেন্টারের ব্যবসা চালু হবে। বেকারত্ব কিছুটা হলেও ঘুচবে ।
পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ভালো অভ্যাস গড়ে উঠবে।
কাদা পানিতে রাস্তা ডুবে থাকলেতো ভালো। ধুলা উড়বে না। গায়ে পানির ঠান্ডা হাওয়া পেতে সুবিধে হবে।
আবার পানিতে ডুবে থাকা কাদা লাগলে নিয়মিত রিক্সা, গাড়ি পরিষ্কারের প্রয়োজন পড়বে।
আপনি কি প্রতিদিন আপনার বাহনটিকে গোসল করান ? নিশ্চয়ই না। অথচ নিয়মিত পরিস্কার রাখাতো স্বাস্থ্যসম্মত ব্যাপার ।
বাথরুমের কমোডে যেই পরিমাণ জীবানু থাকে শুনেছি গাড়িতে তার চেয়ে বেশি পরিমান জীবানু থাকে । (রেফারেন্স খুঁজতে টাইম লাগবে)
কাজেই নিয়মিত পরিষ্কারের ফলে স্বাস্থ্যসম্মত ভালো একটি অভ্যাস গড়ে উঠবে।
আপনার মনোযোগ, ধৈর্য বৃদ্ধি পাবে।
খানা খন্দে ভরা ডুবো রাস্তায় চলাচলে অনেক সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এতে মানুষের মাথা বাজে চিন্তা না করে সতর্ক হওয়ার কাজে ব্যস্ত থাকবে । আর তাতে মনোযোগ বাড়বে। এই ডিজিটাল দুনিয়ায় আপনি যখন টিভিতে কোন অনুষ্ঠানে স্থির হতে পারেন না। ব্লগের কোন পোস্ট পুরোটা না পড়ে () চোখ বুলিয়েই মন্তব্য করে ফেলছেন তখন এই কাদা পানির রাস্তাই আপনার মনোযোগ বাড়াতে দারুণ সহযোগিতা করবে।
আমরা অনেক বেশি ধৈর্যশীল হবো ।
আমিষের যোগান বেড়ে যাবে
মাছের চাষ করতে পারি । এই আইডিয়া আমার দারুণ পছন্দ হয়েছে।
তাই সোৎসাহে বলেছি, এই সুযোগে মাছের দাম তবু্ও যদি কিছু কমে। আর দাম কমা মানেই মাছে ফরমালিনের ব্যবহার কমে যাবে।
মানুষ ফরমালিন মুক্ত মাছ খাবে।
ভাবছি মৌচাক এলাকার রাস্তার মাগুরের চাষ করা যায় কিনা।
ওখানে যতদিন যাই ততদিনই কাদা পানিতে সয়লাব হয়ে থাকে।
এতোদিন ভাঙ্গা রাস্তা, কাদা পানির কারণে বিরক্ত হয়েছি...কিন্তু এখন এই কাদা পানির রাস্তাই শাপে বর হয়েছে।
হ্যাঁ, ইলিশের চাষ করতে পারি। এই ইলিশ লোনা পানির হবে না, হবে কাদা পানির। এতে করে হাজার টাকা দিয়ে ইলিশ কিনে খেতে হবে না। আপনি চাকরী থেকে ফেরার পথে রাস্তায় চাষ করা তাজা ইলিশ সস্তায় কিনে ঘরে ফিরতে পারবেন। পুরুষ হলে আপনার গিন্নি মহা খুশি হবে। এতে আপনার দাম্পত্য জীবনে সুখ বেড়ে যাবে। আর নারী হলে আপনার বাজারের টেনশন কমে যাবে ।
শায়েস্তা খাঁর আমলের দামে চাল
চালের দাম এখন কতো বলুন তো?
কেজিতে ৩৫ থেকে শুরু করে ৪৫, ৫২, ৮০ আরো রকমফের আছে চালের দামের।
অথচ এমন কিন্তু হওয়ার কথা ছিল না।
এই রাস্তায় ধানের চাষ করলে দেশে চালের যোগান বেড়ে যাবে । তাতে চালের মূল্য কমে যাবে। ডিজিটাল আমলে থেকেও আপনি শায়েস্তা খাঁর আমলের দরে চাল কিনতে পারবেন। দারুণ না ? (প্লিজ অধিক সুখে মাথা ঘুরে পড়ে যাবেন না।)
কর্মসংস্থানের সুযোগ বেড়ে যাবে
মেয়েদের পায়ে দুই ফিতার পাতলা সেন্ডেল বা হিল দেখলে কেমন জানি উসখুশ লাগে আমার
মনে হয় এই সেন্ডেলে প্রয়োজনে তো তুমি মেয়ে দৌড়াতেও পারবে না!
নাহ সেই দিন শ্যাষ।
এবার মেয়েদেরকে শক্তপোক্ত সেন্ডেল সু/জুতা পরতে হবে। কাদা পানিতে তো আর পাতলা সেন্ডেল বা হিল পরে চলতে পারবে না। মেয়েদের জুতার ডিজাইনে আসবে রকমফের । আরো অভিনব ডিজাইনে আরো নতুন নতুন জুতার কোম্পানি তাদের নিত্য নতুন জুতার আইডিয়া নিয়ে হাজির হবে। এতে দেশে বেকারত্বরে হার কমে যাবে । আমাদের দেশ মধ্যম আয়ের থেকে এগিয়ে যাবে সামনের দিকে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বেড়ে যাবে ।
ছিনতাইকারীর দৗেড়াত্ব কমে যাবে।
আপনার পায়ে যখন শক্ত পোক্ত বেল্ট ওয়ালা জুতা থাকবে তখন ছিনতাইকারী এলে আপনি খিঁচে দৌড় লাগাতে পারবেন।
এই দৌড়ের দু'টো সুবিধা।
১. এভাবে নিয়মিত দৌড়াতে পারলে ছিনতাইকারী বাধ্য হয়ে ছিনতাই ছেড়ে রাস্তার পাশে সবজি বিক্রিতে মন দিবে।
এতে সমাজে ছিনতাইকারীর প্রকোপ কমে যাবে। কর্মসংস্থানবৃদ্ধি পাবে। সমাজে সৎ মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। চুরির সুযোগ না পেলে মানুষ বাধ্য হয়েই সাধু থাকবে।
২. আর নিয়মিত দৌড়ানোর প্র্যাকটিস থাকার কারণে অলিম্পিকে দৌড়ের বিশ্বজোাড়া নাম কামানোর সুযোগ হয়ে যাবে ।
সাহিত্য প্রতিভা বিকশিত হবে
শাড়ির কদর বেড়ে যাবে । সালোয়ারের ডিজাইনে আসবে ভিন্নতা। প্যান্টের নিচের দিকটা হবে বেশি ঢোলা। জরজেট টাইপের কাপরের কদর বেড়ে যাবে ।
শাড়ির কদর বেড়ে যাওয়ার কারণে কবি, সাহিত্যিকদের সাহিত্য প্রতিভা বিকশিত হবে । দেখুন সালোয়ার কামিজ নিয়ে সাধারণত কোন সাহিত্য রচনা হয়না কিন্তু।
মানুষজন বিদ্যুৎসাশ্রয়ী হয়ে উঠবে
আপনার দামী কাপড়ে কাদা পানি লেগে যাবে এমনটি আপনি নিশ্চয়ই চান না। মেয়েরা সেক্ষেত্রে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করবে । জরজেট টাইপের কাপরের চাহিদা বেড়ে যাবে । আর এতে করে কাপড় ইস্তিরি করার ধকল কমে যাবে । বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হবে মানুষজন। ব্যয় কমে যাবে । ইলেকট্রিক বিল কম আসলে সেই বাড়তি টাকা দিয়ে আপনারা জায়া-পতি মিলে সিনেমা হলে গিয়ে পপকর্ন খেতে খেতে "বেলাশেষে" দেখে দু'জনে প্রেমে গদগদ হয়ে ঘরে ফিরবেন। জীবনে সুখ আর সুখ।
সাঁতার শিখুন জীবন বাঁচান
আপনাকে কারি কারি টাকা খরচ করে আপনার বাচ্চাদের সাঁতার শেখাতে হবে না। আর মহিলা কমপ্লেক্সের বাথরুমের ফুটা দিয়ে ভিডিও হবার দুশ্চিন্তাও করতে হবে না। আপনার বাসার কাছের রাস্তাতে জমে থাকা পানিতে বাচ্চাদের সাঁতারের ব্যবস্থা করুন ।
এতে করে আপনি যখন ইদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে যাবেন তখন উপচে পড়া মানুষের লঞ্চ ডুবে গেলেও নো টেনশন। আপনি আর আপনার পরিবারের প্রিয় মানুষগুলো সাঁতরে ঠিকই জীবন বাঁচাতে পারবে। ওয়াও ...এর আগে কখনো এভাবে ভেবে দেখেছেন? সময় এসেছে ভাববার। সামনেই কিন্তু বর্ষাকাল...রাস্তা ডুবে আরো পানি জমবে। এখনই বসে যান পরিকল্পনা করতে।