ম্যুভি রিভিউ- "দ্য স্পীড"

অনেকদিন পর বলাকায় গেলাম বাঙলা সিনেমা অনন্ত জলীল অভিনিত ম্যুভি "দ্য স্পীড" দেখতে। সিনেমা শুরুর আগে পর্দা সরে গেল সিনেমা হলের এবং স্বাভাবিক ভাবেই জাতীয় সংগীত মিউজিকে পরিবেশন । কিন্তু অবাক হয়ে দেখলাম প্রায় ৩০% দর্শক সে সময় বসা থেকে উঠার নাম পর্যন্ত করেনি এই কয়েক মিনিট দাড়িয়ে জাতীয় পতাকাকে সম্মান প্রদর্শণ করতে। সিনেমার শুরুই হলো বেশ দারুন সাউন্ডের ইফেক্ট দিয়ে। "দ্য স্পীড" নামটিকে সার্থক করতেই হয়তো।

১৯৯৯ সালের অক্টোবর মাসের কোন একদিন

মানুষের জীবনে বোধ সঞ্চারের এক নির্ভেজাল উপাদানের নাম কবিতা। কবিতা কখনো মানুষের মনকে রাঙিয়ে দেয়, কখনো বদনার কালো রঙ ঢেলে উপলব্ধিগুলোকে সতেজ করে তোলে; জীবন দর্শনের পথকে করে প্রশস্ত।

নারী-পুরুষ নিয়ে একটি বৈষম্যহীন সমাজের কথা বলি

'জেন্ডার' শব্দটি মুলত নারী ও পুরুষ উভয়কেই বোঝায়, বোঝায় নারী-পুরুষকে নিয়ে বৈষম্যহীণ সমাজের, রাষ্ট্রের কথা। সংস্কৃতি ও সমাজ নারী ও পুরুষ সম্পর্কে যে সব দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবোধ গড়ে তোলে, ভিন্ন ভিন্ন আচরণ করতে শেখায়, কিংবা ভুমিকা পালন করতে বলে, সেসবই হচ্ছে জেন্ডার।

সৌদি নারী...অতঃপর রোকেয়া

যদি আজ থেকে প্রায় একশ বছর পেছনে তাকাই বেগম রোকেয়ার (রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন১৮৮০-১৯৩২) জীবনে যিনি সৌদি নারীদের মতো প্রাতিষ্ঠানিক উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পাননি কিন্তু তার দেখানো আলোতে এখনও আমরা পথ দেখি।

নারী....আর কতোকাল রবে শুধুই অর্কিড হয়ে!

প্রচলিত ধ্যান-ধারণা হচ্ছে নারী হবে নরম-কোমল, সর্বংসহা (মাতা), মনোরঞ্জনকারিনী (বধূ)। তারা থাকবে অন্দরমহলে। আর তাই প্রবাদে শোনা যায়... 'ঝি নষ্ট হয় হাঁটে, বউ নষ্ট হয় ঘাটে'।....অর্থাৎ ঝি কে হাঁটে-বাজারে-মার্কেটে পাঠানো যাবে না আর বউকে পুকুর ঘাটে পাঠানো যাবে না (যদিও গ্রাম এলাকায় পরিবারের পানির যোগান দাতা সাধারণত নারীই)।

সালাম সিনেমা লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
সালাম সিনেমা লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

মঙ্গলবার, ১২ মে, ২০১৫

Sleeping Beauty


না, এ কোন রূপকথার ঘুমন্ত রাজকন্যা নয়। তেতো বাস্তবেরই এক সুন্দরী। যাকে জীবনের প্রয়োজনে করতে হয় বেশ কিছু অড জব।
২০১১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত অস্ট্রেলিয়ান সিনেমা Sleeping Beauty ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া লুসি যে কফি শপে কাজ করে, ইউনিভার্সিটির মেডিক্যাল ল্যাবের রিসার্চ সাবজেক্ট এবং বারের আগতদের কারো কারো সেক্স পার্টনার হিসেবে পুরো সিনেমা জুড়ে শান্ত, চুপচাপ, নির্বিকার একটি চরিত্রকে দেখানো হয়েছে । কিন্তু যখন সে তার শয্যাপাশে একজন মৃত বুড়োকে দেখতে পায় তখনই কেবল তাকে ইমোশনাল হতে দেখা যায় বিশেষভাবে। যা ঘুমন্ত সুন্দরীকে জাগিয়ে
তোলার রূপক হিসেবে কাজ করেছে।

বৃহস্পতিবার, ৭ মে, ২০১৫

Sleeping with the enemy

শুচিবায়ুগ্রস্থ অবসেসিভ কমপালসিভ পারসোনালি ডিজঅর্ডারে ভোগা মার্টিনকে সুখি করা সত্যি খুব কষ্টসাধ্য ব্যাপার বেচারী লরার জন্যে। মানসিক অত্যাচারতো বটেই আকর্ষনীয় প্রতিবেশীর প্রতি স্ত্রীর আকর্ষণের মিথ্যে সন্দেহে শারীরিক অত্যাচার একজন দাসের স্বাধীনতাকেও হার মানায় ।

স্বাধীনতাহীনতায় কে বাঁচিতে চায় হে
কে বাচিতেঁ চায়?



আর তাই নতুন জীবন পেতেই লরা নিজেকে হারিয়ে ফেলে।
স্বামী মার্টিনের কাছে মৃত লরা নতুন জীবন গ্রহণ করে "সারা" নামে এবং নতুন পরিবেশে নতুন প্রতিবেশী বেন এর সাহচর্যে নতুন জীবনের স্বাদে যখন সুখের মুখ দেখতে শুরু করলো ততদিনে মার্টিন জেনে গেছে তার স্ত্রী লরা জীবিত।

We will always be one. Nothing can keep us apart.
মার্টিনের যতই ভালোবাসা থাকুক লরার প্রতি কিন্তু বেশি চিপলে লেবু তেতো হয়ে যায়...তেমনি লরাও  স্বামী মার্টিনের অত্যাচারে ভালোবাসাকে তুচ্ছ করতে পেরেছিল।

I can't live without you. And I won't let you live without me.
মার্টিন কথাটা ভালোবাসা থেকে বললেও আদতে পৃথিবীতে অত্যাচারীরা শেষ পর্যন্ত টিকতে পারেনা।  ভোগা স্বামী মার্টিনও পারেনি। টিকে থাকে শান্তি প্রিয়রাই।

অতঃপর তাহার সুখে শান্তিতে বসবাস করিতে লাগিল...
কাহারা ?
লরা মানে সারা এবং বেন ।

Sleeping with the enemy  থেকে নেয়া স্থির চিত্র।
-----------------------------------
এই হলিউড সিনেমাটি ১৯৯১ সালে মুক্তি পায়। পরবর্তীতে একই ঘটনার একটা বলিউড সিনেমা মুক্তি পায় "অগ্নিসাক্ষী" নামে । যা নানা পাটেকর, মণিষা কেরালা এবং জ্যাকিশ্রফ অভিনীত।
-----------------------------------
সিনেমার নাম Sleeping with the enemy-ই কেন রাখা হলো ? এমন প্রশ্ন যখন মাথায় ঘুরছিল তখন একটা ইমেজ চোখে পড়লো যার ক্যাপশনে লেখাছিল Marriage is the only war, during which you sleep with your enemy ...বাহ বেশ জবাব তো !

সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৪

"সাক্ষী"- সোনালী অতীতের সিনেমা

শাহনাজ রহমতুল্লাহর কন্ঠে, ববিতা অভিনীত "সাক্ষী" সিনেমার
পারি না ভুলে যেতে, 
স্মৃতিরা মালা গেঁথে
হারানো সেই পৃথিবীতে ডেকে নিয়ে যায়
আমারে কাঁদায়...আমারে কাঁদায়।।

শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০১৪

ট্রিবিউট টু সুচিত্রা সেন

Suchitra Sen.jpg



জন্ম: ৬ এপ্রিল ১৯৩১
পাবনা, বাংলাদেশ
মৃত্যু : ১৭ জানুয়ারি ২০১৪

সুচিত্রা সেন অভিনীত চলচ্চিত্রের তালিকা
সাড়ে চুয়াত্তর (১৯৫৩)
ওরা থাকে ওধারে (১৯৫৪)
অগ্নিপরীক্ষা (১৯৫৪)
শাপমোচন (১৯৫৫)
সবার উপরে (১৯৫৫)
সাগরিকা (১৯৫৬)
পথে হল দেরি (১৯৫৭)
হারানো সুর (১৯৫৭)
দীপ জ্বেলে যাই (১৯৫৯)
সপ্তপদী (১৯৬১)
বিপাশা (১৯৬২)
চাওয়া-পাওয়া
সাত-পাকে বাঁধা (১৯৬৩)
হসপিটাল
শিল্পী (১৯৬৫)
ইন্দ্রাণী (১৯৫৮)
রাজলক্ষী ও শ্রীকান্ত (১৯৫৮)
সূর্য তোরণ (১৯৫৮)
উত্তর ফাল্গুনি (১৯৬৩) (হিন্দিতে পুনঃনির্মিত হয়েছে মমতা নামে)
গৃহদাহ (১৯৬৭)
ফরিয়াদ
দেবী চৌধুরানী (১৯৭৪)
দত্তা (১৯৭৬)
প্রণয় পাশা
প্রিয় বান্ধবী



'মরনের পরে'
উত্তম কুমার-সুচিত্রা সেন





                                                       'রাজলক্ষ্ণী ও শ্রীকান্ত' (১৯৫৮)
                                                          উত্তম কুমার-সুচিত্রা সেন



'সপ্তপদী'
সুচিত্রা সেন- উত্তম কুমার




'বিপাশা'
উত্তম কুমার-সুচিত্রা সেন




'হসপিটাল'
অশোক কুমার-সুচিত্রা সেন





হিন্দি
বোম্বে কা বাবু
সুচিত্রা সেন-দেব আনন্দ


মুসাফির
সুচিত্রা সেন-দিলিপ কুমার - ঊষা কিরণ



'মমতা'
ধর্মেন্দ্র-সুচিত্রা সেন- অশোক কুমার




তালিকার সুত্র : উইকিপিডিয়া

মঙ্গলবার, ১৩ আগস্ট, ২০১৩

স্বপ্ন ভাঙার দিন, সব হারানোর দিন ।

সময়গুলো বড্ড অসময় হয়ে যায়...
খুব তারাতারিই !

১৩ তারিখকে আমি আনলাকি মানিনি কখনো,
আমার জীবনের আঙ্গুলে গোনা একাধিক প্রিয় মানুষের জন্ম কোন কোন মাসের ১৩ তারিখ ।

কিন্তু আগস্টের ১৩ তারিখকে কিভাবে বিশেষায়িত করবো ?!
বরং বলতে হবে ঝড়ের তান্ডবে ভেঙ্গে যাওয়া একটা স্বপ্নের দিন !

মধ্যবিত্ত বাঙালীদের সুস্থধারার সিনেমা দেখাতে হলমুখি করেছিলেন যে মানুষটা , সেই প্রিয়, শ্রদ্ধেয় তারেক মাসুদ যে স্বপ্ন ভাঙ্গা ঝড়ের তান্ডবে হারিয়ে গেল সাথে আরেক প্রিয় মুখ মিশুক মুনীরকে নিয়ে ...এই ক্ষতি আদৌ পূরণ হবার নয় ।

আমি সিনেমাখোর বলতে যা বোঝায় তা নই , সেই সময় বা সুযোগও আমার হয় না । তারপরও চাই বাংলাদেশী চলচ্চিত্রে সুস্থধারার সিনেমার জয়গান গাইতে ।
স্বপ্ন দেখি সেই সুসময়ের ...

অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে শ্রদ্ধা জানাই এই অসাধারণ মেধাবী প্রিয় মানুষ দু'জনের জন্যে ।।

সোমবার, ৫ আগস্ট, ২০১৩

ঋতুপর্ণ ঘোষ-এর "তিতলি"

হয়তো কারো বুকে মাথা রেখে
দীর্ঘশ্বাস হাসি দিয়ে ঢেকে
নিরাপত্তার উষ্ণতা নিয়ে
থাকবে যন্ত্রণায়....

এই যন্ত্রণা তখনই হয়,
যদি পরের এপিসোডটা খুব বেশি রকমের মন কাড়া না হয়।

কিন্তু যদি মানুষটা ‪#‎তিতলি‬-র বাবার মতো হয়, তবে কষ্টগুলো, হারানোর ব্যথাগুলো আর তেমন বাজে না।
আর সাথে বিশ্বস্ততাও একটা বিষয়। বিশ্বাসযোগ্য থাকার চেষ্টা করাও একটা বিষয়।

তাই দাম্পত্য জীবনে স্বামী-স্ত্রী যদি দু'জনের প্রতি খুবই আন্তরিক হয়, বিশ্বস্ত হয় তবে
জীবনটা অনেক সুন্দর হয়ে যায়।

কৈশোরের প্রেম অনেক রঙিন হলেও তাতে অনেকই ভুল থাকে।
এই সময়টাতে বাবা-মাকে খুব সাবধানী হতে হয় সন্তানের আবেগের দিকে দৃষ্টি রাখতে।
‪#‎ঋতুপর্ণ_ঘোষ‬ এর #তিতলি তে অনেকই মুগ্ধতা....

দারুণ একটা গান-
মেঘ পিয়নের ব্যাগের ভেতর
মন খারাপের দিস্তা
মন খারাপ হলে কুয়াশা হয়,
ব্যাকুল হলে তিস্তা।
মন খারাপের খবর আসে
মন খারাপের খবর আসে
বন পাহাড়ের দেশে
চৌকোনো সব বাক্সে
যেথায় যেমন থাকসে
মন খারাপের খবর পড়ে দাড়ুন ভালবেসে।

শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০১৩

ভাবনার জগতকে নাড়িয়ে দেয়া ঋতুপর্ণ ঘোষের সিনেমাগুলো

"দহন"
ঋতুপর্ণ ঘোষের "দহন" দেখলাম ।

 দেখছিলাম আর জ্বলছিলাম...কষ্টে কষ্টে নীল হয়ে যাচ্ছিলাম । জীবনের এতো কাছ থেকে নেয়া বলেই এই ধরনের সিনেমাগুলোকে মনে হয় জীবনধর্মী সিনেমা বলা হয়। যা আমাদেরকে ভাবতে বাধ্য করে। আমাদের মাঝে অতি আপনজনের পর হয়ে উঠা, অপরিচিত হয়ে উঠা...হৃদয়ের রক্তক্ষরণ চারপাশটাকে লালে লাল হয়ে জমাট বেঁধে ফেলা...

সত্যিই প্রতিটা মেয়ের কানে কানে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করছে...নারী... এতো আধুনিকতা, এতো শিক্ষা, ক্ষমতায়ন...তুমি কি সত্যিই তোমার পাশে কাউকে দেখতে পাচ্ছ ?!

উইকিপিডিয়ায় "দহন"

আইএমডিবি-র রেটিং ৮.১
ইউটিউবে "দহন"



"খেলা "


আমি কখনোই সেভাবে সাপোর্ট করি নি, বিদেশী সিনেমা আমাদের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কোনভাবে প্রভাব ফেলতে বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহগুলোতে চলুক নিয়মিত। বিশেষ করে ভারতীয় সিনেমাতো নয়ই (আর পাকিস্তানী সিনেমার প্রশ্নই উঠে না)।

কিন্তু ঋতুপর্ণ ঘোষের দুদিন আগে দেখা "দহন" আর আজকে দেখলাম "খেলা" দেখে মনে হচ্ছে চলচ্চিত্র নির্মাতাদের কিছু শেখানোর জন্যে হলেও এসব সিনেমা চালানো উচিত প্রেক্ষাগৃহগুলোতে।

এতো জীবন ঘনিষ্ট ! মনে হয় নিজের জীবনের লুকিয়ে রাখা, জানালার পাশে অভিমান করে দাড়িয়ে থাকার মুহুর্তগুলো এই লোক জানলো কেমন করে?!
কেমন করে জানলো বরের সাথে কতোদিন রাগ করে ভেবেছি ...এই অপেক্ষার শেষ হোক।
নিজের অনুভবে রাখা দৃশ্য গুলো এই লোক এতো অবলীলায় কিভাবে সেলুলয়েডের ফিতায় আটকালো ....?!!!

আমার অনেক টাকা নেই। না হলে বড় পর্দায় দেখানোর দায়িত্বটা আমিই নিতাম আমাদের অবহেলিত, সিনেমা পাগল, বুভুক্ষ দর্শকদের জন্যে ।
উইকিপিডিয়ায় "খেলা"
"খেলা" আইএমডিবির রেটিং ৭.৪ 

ইউটিউবে "খেলা"

"উনিশে এপ্রিল"

ঋতুপর্ণ ঘোষের "উনিশে এপ্রিল" দেখার সময় ছোড়া প্রসেনজিৎকে দেখে চমকে উঠেছিলাম ! পরে বুঝলাম আমি নিজেই ১৭ বছর পেছনে পরে আছি।...তবুওতো পেছন থেকে উঠে আসার চেষ্টা...তাই বা কম কি !

সিনেমাটা দেখার এক পর্যায়ে মনে মনে বলে উঠেছিলাম ...কুত্তার বাচ্চা ! তুই যদি মায়ের পছন্দের লুতুপুতু মেয়েই বিয়ে করবি তাইলে প্রেম করতে গেলি ক্যান ! গররররর....

আমি বাস্তবে এভাবে গালি দেই না... দিয়ে অভ্যস্থ্য না। কিন্তু ক্রোধ চেপে রাখতে পাচ্ছিলাম না...মা, ডাক্তার মেয়ে পছন্দ করবে না, মা একটু ঘরোয়া বউ চায় এবং পরবর্তীতে মেয়ের মা-বাবার পেশা নিয়ে পরে যায় টানা হেচড়া ...এসব ইতং বিতং যে ছেলে ভাবে সে ক্যান প্রেম করে একটা মেয়ের জীবনকে এভাবে বিবর্ণ করে দেয় ?!

কিন্তু আমার দেখার ধারাবাহিকতাকে কিভাবে অদ্ভুতভাবে বদলে দিয়ে প্রেমিক-প্রেমিকার সম্পর্কের টানা পোড়েন থেকে ক্যারিয়ারিস্ট মা আর দিনের পর দিন মায়ের ব্যাস্ততায় সন্তানের দুরে সরে যাওয়া......
স্বামীর সাথে স্ত্রীর প্রফেশনাল (বরং ফিনানশিয়াল বলি) কনফ্লিক্ট ! স্ত্রীর বেশি খ্যাতি, টাকা কামানোকে স্বামীর মেনে নিতে না পারা...

একই ঘরের বাসিন্দা হয়েও দুই ভুবনে রয়ে যাওয়া... বড্ড কষ্ট পাচ্ছিলাম।

একটা সময় চোখের কোনে হয়তো একটু জলের আচঁ পাচ্ছিলাম...বুকের ভেতর চিনচিনে ব্যাথা...

বোঝাপড়া গুলো ভালো থাকলে, স্বচ্ছ থাকলে...সম্পর্কের উন্নতি হতে বাধ্য । এর জন্যে চাই দুজনকে দুজনের বোঝার চেষ্টা। যা দুই পক্ষেরই উচিত।




রেইনকোট

ঋতুপর্ণ_ঘোষ‬
এর ‪‎রেইনকোট‬ দেখলাম।
এটাই প্রথমবার না। এর আগেও কয়েকবার কিছু অংশ দেখে ছেড়ে দিয়েছি। টানতে পারে নি আমায়। স্লো বলেই হয়তো... অথবা ইদানিং হিন্দি চ্যানেলের অনাগ্রহটাও হয়তো ভর করেছিল সিনেমাটা দেখার সময়।

যাই হোক, বেশ কিছুদিন/মাস ধরেই নারীদের শক্ত অবস্থানে থাকা সিনেমা খুঁজতাম মনে মনে। তা যে কোন ভাষারই হোক।

ঋতুপর্ণ ঘোষের দহন‬, ‪‎খেলা‬, উনিশে_এপ্রিল‬ দেখে আমার সেই আগ্রহ যথেষ্টই মিটেছে।

বলছিলাম "রেইনকোট" এর কথা ।

অনেক বড় ঘরণী ঘর পায় না...
অনেক বড় সুন্দরী বড় পায় না...

এককথায় এই হলো রেইনকোট.......।।

প্রথম দিকে ঝিমানো ভাব থাকলেও সিনেমাটার মাঝ বরাবর এসে নীরুর অনুপস্থিতিতে বাড়িওয়ালার আগমন এবং এরপর ঘটে যাওয়া বিষয়গুলোই দর্শকদের চাঙ্গা করে তুলতে যথেষ্ট।

একটা বিষয় খুব অবাক করা ! আমার খুব পরিচিত একজন তার বিয়ের প্রথম ৩ বছর তার বাসায় জানায়ই নি যে কতোটা মানসিক অশান্তিতে আছে। বরং শ্বশুড়বাড়ির যতো পজিটিভ কথা সে সবাইকে বলে বেড়াতো হাসি মুখে ।

৩ বছর পর সেই পরিচিতার নিকটাত্নীয় ওর শ্বশুরবাড়িতে এসে ইনকোয়ারী করলে বেড়িয়ে আসে একের পর এক চাঞ্চল্যকর, কষ্টকর জীবনের কাহিনী।

যাই হোক...আমি নীরুর হাসি মুখে একেরপর এক বলা ভোলানো কথায় একটু সন্দেহ করছিলাম বটে ! কিন্তু তা এমন নির্মম সত্য হবে ! বুঝি নি।

আর ভালোবাসা সত্যিকারের হলে ভালোবাসার মানুষটির যে কোন ক্ষতি দেখে অন্যপক্ষ যখন সেই কষ্ট দূর করার জন্যে নিদোর্ষ চেষ্টা করে তখন সেই ভালোবাসাকেই কি স্বর্গীয় ভালোবাসা বলে ?

The_Gift_of_the_Magi যারা পড়েছেন তারা রেইনকোট-এর সার্থকতা ভালো বুঝতে পারবেন।

রেইনকোট এর ইউটিউব লিংক
উইকপিডিয়ায় রেইনকোট
আইএমডিবি রেটিং -এ " রেইনকোট " ১০-এ ৭.১


আবহমান
ঋতুপর্ণ_ঘোষ‬ এর আবহমান‬ দেখার শুরুতে আমার প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া হচ্ছে...

"চিবিয়ে চিবিয়ে কথা বলে আমার হৃদয়টাকে রক্তাক্ত করার পর যে রক্তচুম্বণটা দাও,
সেই রক্ত চুম্বনের নেশায় আমি বার বার নেশাগ্রস্থ হতে চাই................."

এটা রূপক অর্থে বলা হয়েছে... যারা আবহমান দেখেছেন তারা আমার এই কথার মর্ম বুঝবেন।

দেখার শুরুতে হেব্বি চাঙ্গা মুডে ছিলাম !
চাঙ্গা এতোটাই ছিলাম যে, রিতিমতো কাব্য সৃষ্টি করে ফেলেছিলাম !
মাঝখানে বেশ কিছু কাজ সেরে আবার দেখতে বসলাম ....!
....................................................!
আমি কিছু বলার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না !
#আবহমান নিয়ে কিছু আদৌ লিখতে পারবো কি না বুঝতে পাচ্ছি না !
 
 শেষ করার পর আমি "তব্দা" বলতে যা বোঝায় তাই হয়ে গেছি !
আমার অনেক কষ্ট হচ্ছে !
হাউমাউ করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে !
আমি আমার চোখ থেকে বেরিয়ে আসা জলের স্রোত থামাতে পাচ্ছি না !
কোন সিনেমা দেখে সিনেমা যে বানিয়েছে তাকে অনুভব করেছি এমন হয় নি !
কিন্তু আজকে করতে পাচ্ছি !
আমি অনেক দেরী করে ফেলেছি !
বড্ড বেশিই দেরী করে ফেলেছি ............!

ইসসস ! এই মানুষটা কেন আরো অনেকগুলো বছর বেঁচে থেকে আরো আরো সিনেমা বানালো না !

শনিবার, ২০ জুলাই, ২০১৩

♣ ধর্ষণ...! সামাধান কি আসলেই আছে?! ♣

একজন নারী ধর্ষিত হবার প্রথমেই তার মাথায় ধর্ষকের শাস্তির চিন্তা আসে না । হয়তো সে ধর্ষিতা হবার পরপর বার বার করে গোছল করে তার শরীর থেকে অসহ্য ঘৃণা সরিয়ে ফেলতে চায় ! সে তার সব থেকে কাছের মানুষটির/মানুষগুলোর সান্নিধ্য চায় সেই সময়ে । তারপর হয়তো সে চায় ধর্ষকের শাস্তি হোক। কিন্তু ততক্ষণে ধর্ষিতার শরীর থেকে ধর্ষনের আলামত অনেকটাই মুছে যায় । আর আলামত মুছে যাওয়ার কারণে এবং সমাজ জানাজানি, লোক কানাকানি, ধর্ষকের পক্ষ থেকে প্রভাবশালী ব্যক্তির দ্বারা চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে ধর্ষনের মামলা আর আগাতে পারে না। ধর্ষক খালাস পেয়ে যায় ।

একটি উদাহরণ দেয়া যাক-
খুবই সাধারণ একজন চাকুরে মুরাদ এর বড়লোক বন্ধুটি বড়ই রসময় সব রঙ্গতামাশা করতে ওস্তাদ তার বন্ধুপত্নীর সঙ্গে এবং সেটা্ও মুরাদ এর অনুপস্থিতিতে বড্ড অসময়ে, যখন মুরাদ বাড়ির বাইরে থাকে অর্থাঁৎ অফিসে।
খুবই সাহায্যকারী মনোভাবাপন্ন বন্ধু শামীমের এই নিয়মিতই অসময়ে উপস্থিতি বন্ধু মুরাদকে দুশ্চিন্তায় না ফেললেও ভাবিয়ে তোলে কমবয়সী স্ত্রী পুস্পকে।

একসময় কোন এক দুপুরের পর পর সময়ে শামীমের উপস্থিতি এবং সন্দেজনক আচরণ এবং তারপরই পুষ্পকে একা বাড়িতে পেয়ে আক্রমণের ধকল সামলাতে না পেরেপেুষ্প অজ্ঞান হয়ে যায় ।
মুরাদের কাছে দেবতারুপী বন্ধুই হায়েনা হয়ে ঝাপিয়ে পরে অজ্ঞান পুষ্পকে ছিঁবড়ে খেতে !

আইন যুক্তি ছাড়া, প্রমাণ ছাড়া আবেগ দিয়ে এগিয়ে যায় না । থেমে যায় ধর্ষিতার নিরব যন্ত্রনাকে অন্ধকারে রেখে।
বাস্তবে অন্তত তাই হয়...

কিন্তু কখনো কখনো নাটক, সিনেমাতে দর্শককে সচেতন করতে এগিয়ে আসে কোন কোন কাহিনীকার। সেখানে যোগ হয় যখন পুরনো কেস ঘেটে দেখা যায় শামীম নামের মানুষরূপী হায়েনারা এর আগেও একই ঘটনা ঘটিয়ে নির্বিঘ্নে বেঁচে যেয়ে ঘুরে বেড়ায় বুক ফুলিয়ে, তখন কোন একজন উকিলের বক্তব্যের মারপ্যাচে আর ভবিষ্যতে এই হায়েনার দ্বারা আরো নারী ধর্ষিত হতে পারে...এই আশংকা ঢুকিয়ে দেয় প্রধান বিচারকের মনেও । তখন বিচারক রায় দিয়ে সাজা দেন এই সব শামীমদের।
সমাজকে, বিবেককে সচেতন করতে তেমনই একটি সিনেমা "প্রিয়তমেষু"

ঘটনাগুলো আরো চাপা পরে যায় যখন ধর্ষক খুব পরিচিত কাছের কেউ হয়। হতে পারে তার সহোদরার স্বামী, যে কিনা ধর্ষিতার "দুলাভাই" বা তার প্রিয় খালার স্বামী "খালু" অথবা তার অনেক পছন্দের ফুফুর স্বামী "ফুফা" হয় সেক্ষেত্রে  ধর্ষিতা নিজেই হয়তো ধর্ষকের কথা ভেবে নয় বরং ধর্ষকের সাথে সম্পৃক্ত তার আপন মানুষদের হতে পারে বোন, খালা,ফুফু বা আর কেউ নিকটাত্নীয়ের অসম্মান, কষ্টের কথা ভেবে বিষাক্ত যন্ত্রণাকে পাথর চাপা দেয়।

ধর্ষক যেহেতু জানে আইন তার কিছুই করতে পারবে না, পরবর্তীতে আরো কেউ একই পন্থায় ধর্ষিতা হয় এবং আলামত মুছে যায় । এভাবেই ধর্ষকরা টিকে থাকে আর সমাজকে নোংরা দূর্গন্ধময় করে যাচ্ছে নিরবে। আমাদের নাক দূর্গন্ধ সহ্য হওয়া নাক। তাই আমাদের অসহ্য লাগে না । সাময়িক ক্রোধ প্রশমিত হয়ে যায় সহসাই।

কয়েকদিন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে, ব্লগে পোস্ট দিয়ে, শাহবাগে বা এমনি কোন রাজপথে মানববন্ধন করে তারপর ভুলে যাই।

কয়েকদিন পর নতুন আরেক ধর্ষিতার আর্তচিৎকার আমাদের কর্ণগহ্বরে প্রবেশ করলে শুরু হয়ে যায় আমাদের ক্রোধাগ্নীর আবার সেই চক্র ।
এভাবেই চলতে থাকে চক্রাকারে...সেই সাথে থেমে থাকে না ধর্ষকেরও ছিঁবড়ে খাওয়ার ভোজন পর্ব .............................. 

বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই ব্লগার জালিস মাহমুদকে তার **কিছু বাংলা মুভি** পার্ট ~ ১ পোস্টটির জন্যে যা আমাকে এই পোস্টটি তৈরী করতে সাহায্য করেছে।

সোমবার, ২৫ মার্চ, ২০১৩

সিনেমাঃ চলো পাল্টাই

আমি পড়ার জন্যে সাধারণত আমার বাচ্চাদের মারি না। কিন্তু মেয়েটার পড়ার চাপ দেখে সত্যিই আমি বিরক্ত! কম্পিটিশন বলে কি এতো!!! বাচ্চা ব্যাগের বোঝা কাধেঁ করে নিয়ে যাবে, গাধার মতো বহণ করে আর তা আমাকে দেখতে হবে। তেমনটি চাইনি।
হরনাথ চক্রবর্তীর পরিচালনায় প্রসেনজিত-এর অভিনয় খারাপ লাগে নি। কিন্তু আমার মনে হয়েছে, ছবিটা আরো ভালো হতে পারতো।
থ্রি ইডিয়টেরই থিম। তবে অনেক সহজভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা।
যার যেই বিষয়ে আগ্রহ বেশি, সে সেই বিষয়েই পড়বে, জানবে..এটা হলো সিনেমার মূল কথা।।

http://www.abpananda.newsbullet.in/entertainment/movie/1751-2011-03-04-07-00-37

http://movies.anandabazar.com/node/120#

শনিবার, ২৬ মে, ২০১২

গণমাধ্যম ও নারী - সিনেমা পর্ব

সিনেমার নাম "অভিমান", নায়িকা টিভির সফল নিউজ প্রেজেন্টার। সেটেল ম্যারেজে বিশ্বাসী নায়িকা অপেক্ষা করছিলো পারিবারিকভাবে দেখাশুনা হওয়ার মাধ্যমে বিয়ে হোক। তাই হলো। শ্বশুর বাড়ির মানুষতো মহা খুশি এমন গুণবতী, সেলিব্রিটি বউ পেয়ে। বৌ-ভাতের পরদিনই নায়িকার লাইভ শো থাকায় তার বাসর রাতেও স্বামীকে বাড়তি কোন রোমান্টিক সিনে মজে থাকতে দেখা না যাওয়ায় সত্যি মারাত্নক অবাক হয়েছিলাম! কারণ এমনটা তো স্বাভাবিক না! দরজা বন্ধ হবে তারপরই শুরু হবে লিলা খেলা। যাইহোক পরদিন সকালে বউ মন্ত্রীর লাইভ সাক্ষাতকার নিবেন সুতরাং তাকে যেতে হবে টিভি সেন্টারে, শ্বাশুড়ী এমন আদর যত্ন করছিলো যে সত্যিই আমি জেলাস ছিলাম। দীর্ঘশ্বাস আটকে রেখে অপেক্ষা করতে ইচ্ছে করছিলো পরের কাহিনীর জন্য, কেননা পরের থ্রিল, এ্যাকশান যে খুব শিগগীর শুরু হবে! নায়িকা মানে নতুন সেলিব্রেটি বউকে তার স্বামী নিজে গাড়ী (সম্ভবত হ্যারিয়ার হবে) চালিয়ে দিয়ে আসেন। এবং কথা থাকে যে বউ অফিসের পরে বাইরে আরেক জায়গায় যাবেন (কেন, কি কারণে, ঠিক কোথায় যাবে এটা জানতে না পেরে বিরক্তই ছিলাম!) সেখান থেকে তার স্বামী তাকে নিয়ে যাবেন। সময়টা ছিলো বিশিষ্ট নারীবাদী একজন লেখিকার অন্যদেশে টুরিস্ট ভিসা নিয়ে দিনের পর দিন থাকা নিয়ে সে দেশে সৃষ্টি রাজনৈতিক নৈরাজ্য নিয়ে। এবং দাঙ্গায় সেখানে একপর্যায়ে সরকার কার্ফু চালু করতে বাধ্য হয়। এ অবস্থায় বউটি সেই দাঙ্গায় আটকে যায়। এবং ঘটনাক্রমে এক মহান ছিনতাইকারীর ক্ষপ্পরে পরে তার আস্তানায় রাত কাটাতে বাধ্য হয়। পরদিন বউ যখন তার সেই মহান রক্ষাকত্যা ছিনতাইকারীকে সাথে নিয়ে শ্বশুরবাড়ীর সবার সাথে পরিচয় করাতে যান তখনই ঘটে আসল বিপত্তি। আমি কারো সাথে রাত তিনটার সময় দেখা করতে গেলে আপনারা্ও নির্ঘাত বলবেন যে, আরজু পনির চরিত্র খারাপ তাই না?! ঘটনা ভয়ানক আকার ধারণ করলে বউ ব্লেড দিয়ে তার হাতের শিরা কেটে আত্নহত্যার চেষ্টা করলেও মহানুভব ডাক্তাররা তাকে বাঁচাতে সক্ষম হন। এবং ততক্ষণে স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ীর মানুষ বউয়ের লেখা চিঠি পড়ে নিজেদের ভুল বুঝতে পারলেও সেই আভিমানী বউ আর ফিরে আসে নি।
সাধারণত আমাদের দেশের বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের বেশিরভাগ দর্শক হলেন নিম্নবিত্ত শ্রেণীর খেটে খাওয়া মানুষ। কিন্তু এসব চলচ্চিত্রে নারীকে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়, তাতে মনে হয় একজন কলেজ/ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর একমাত্র কাজ হচ্ছে প্রেমে পড়া । তাকে লেখাপড়া করতে হয় না, লাইব্রেরী ওয়ার্ক করতে হয় না, এমনকি পরীক্ষা নিয়েও দুশ্চিন্তা করতে হয় না। এখানে নারীর ভুমিকা হলো নায়কের চারপাশে নাচগান করা, অসহায় হয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়া, নির্যাতিত হওয়া (সিনেমার নাম মনে নেই আলেকজান্ডার বো আর মুনমুন মুল চরিত্রে, যেখানে মযুরীরর কাজই ছিলো রেপ হওয়া), নায়ক বা কোন পুরুষের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা ইত্যাদি। সাধারণত মূল ঘটনায় নিয়ন্ত্রকের ভুমিকায় নারীকে দেখা যায় না। একসময়ের সেনেমার পদা কাঁপানো নারীকুল শিরোমনি শ্রদ্ধেয় "শাবানা"-র কাজই ছিলো স্বামী, শ্বাশুরী, ননদদের হাতে নির্যাতিত হয়ে অবহেলিত লাঞ্ছিত জীবন যাপন করতে। স্বামী মদ খেয়ে মাতাল হয়ে বাসায় ফিরলেও শাবানা ম্যাডাম সেই মাতাল স্বামীর ঘাম মুছে "ওগো" "হ্যাঁগো" বলে স্বামীর পায়ের জুতা খুলে দিতে। একটা গান মনে পড়ে গেল এক্ষেত্রে এদেশের মূলধারার চলচ্চিত্রে নারী মূখ্য নয়, গৌণ মাত্র। অথচ চলচ্চিত্রের মতো একটি শক্তিশালী গণমাধ্যম নারীর ইতিবাচক ইমেজ সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখতে পারে। আর তাই এদেশের যে সব নারী কর্মক্ষেত্রে , সংসারে সর্বত্র সামাজিক অর্থিনৈতিক- সাংস্কৃতিক অবদান রেখে চলছেন - তাদের জীবন সংগ্রাম , সাফল্য ও বঞ্চনার চিত্রায়ণ হওয়া প্রয়োজন চলচ্চেত্রের মতো একটি শক্তিশালী গণমাধ্যমে, সমাজ জীবনে যার প্রভাব খুব বেশি।

রবিবার, ২০ মে, ২০১২

আমার প্রথম ম্যুভি রিভিউ- "দ্য স্পীড"


অনেকদিন পর বলাকায় গেলাম বাঙলা সিনেমা অনন্ত জলীল অভিনিত ম্যুভি "দ্য স্পীড" দেখতে। সিনেমা শুরুর আগে পর্দা সরে গেল সিনেমা হলের এবং স্বাভাবিক ভাবেই জাতীয় সংগীত মিউজিকে পরিবেশন । কিন্তু অবাক হয়ে দেখলাম প্রায় ৩০% দর্শক সে সময় বসা থেকে উঠার নাম পর্যন্ত করেনি এই কয়েক মিনিট দাড়িয়ে জাতীয় পতাকাকে সম্মান প্রদর্শণ করতে।
সিনেমার শুরুই হলো বেশ দারুন সাউন্ডের ইফেক্ট দিয়ে। "দ্য স্পীড" নামটিকে সার্থক করতেই হয়তো।
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অনন্ত একজন সৎ দেশপ্রেমিক CIP ।সিনেমার শুরুতেই দেখা গেল বেশ ব্যায়াম করছেন। একজন নায়ক হিসেবে দর্শকদের কাছে যা বেশ আকর্ষণীয় বটে। অনন্ত জলীলকে নিয়ে অনেক মজার মজার কথা এর আগে শুনেছি। শুনে অভিজ্ঞতা তেমন ভালো ছিলো না। কিন্তু অনন্তর এপ্রোচ দেখে বেশ আশার আলো দেখতে পেলাম।
ছোটবেলাতেই বাবা-মা মারা যাওয়ায় বড় ভাইয়ের কাছে বড় হওয়ার পর সন্ত্রাসীদের গুলিতে ভাই-ভাবী নিহত হলে বড় ভাইয়ের ব্যবসার দায়িত্ব নিয়ে অনন্ত তার সততায় সেটাকে AJI Park (অনন্ত জলিল ইন্ডাস্টিয়াল পার্ক) বানাতে সক্ষম হন।
এদিকে দূর্নীতিবাজ কিবরিয়া (আলমগীর) তার ব্যবসায় লস খেতে শুরু করেন অনন্তর সৎ ব্যবসার জন্যে। ফলে সন্ত্রাসী দিয়ে অনন্তর উপর হামলা হয়। অনন্তর সিকিউরিটি সিস্টেম ভেঙ্গে গেলেও শেষে অনন্ত নিজেই অস্ত্র হাতে তুলে ঘায়েল করে ফেলেন সব শত্রুদের এবং কিবরিয়াকে বাসায় যেয়ে বলে আসেন " নীতিবানরা দূর্নীতিবাজদের চ্যালেঞ্জ করে না, থ্রেট দেয়" এদিকে বিদেশী এন্ড্রু তার ব্যবসায় সমুহ ক্ষতি হয়ে যাবার ভয়ে কিবরিয়াকে সামলাতে না পেরে অনন্তর কাছে গেলে অনন্ত তার মুখোশ খুলে দেন। দেশী খেলোয়াররা যে বিদেশে যেয়ে আর দেশে ফিরে আসে না তাদেরই একজন এনায়েতুল্লাহ এখন বদলে নিজেকে বানিয়েছে এন্ড্রু তা অনন্ত এ্যান্ড্রুর মুখের উপর বলে দেয়্।

এদিকে বড় ভাইয়ের রেখে যাওয়া একমাত্র কন্যা দৃষ্টি (দীঘি)র সেবায় সারাক্ষণ ব্যস্ত দুই ইয়া মুটকি স্কার্ট, টপস পড়া পরিচারিকা। চাচ্চুর জানের জান বৃষ্টির সাথে চাচ্চুর একটি দারুন গান পরিবেশন হয় এই ফাঁকে। এখানে বলে রাখা ভালো চাচ্চুর আর ভাতিজার সম্পর্ক আর গানের কথা না শুনে কেউ যদি বোবা অভিনয় দেখে তবে অবাক হয়ে ভাববে কি রে, এতো বড় নায়কের সাথে এই পিচ্চি নায়িকা কেমন করে কি?! দীঘির অভিনয় আর এ্যাপ্রোচ তেমনই ছিলো।

এজিআই পার্কের ম্যানেজারের বোন লন্ডন থেকে ফ্যাশন ডিজাইন-এর উপর পড়ে এসেছেন মালয়েশিয়ান অভিনেত্রী "পারভীন" পুরোটা সিনেমা জুরে যার চমৎকার শালীন উপস্থাপন সপরিবারে দেখার মতো সিনেমাতে অনুপ্রাণিত করবে। এমনকি তাদের বাসর রাতের খাটের চারপাশে ইদুর, বিড়াল খেলাও ছিলো খুবই চমৎকার উপস্থাপন।
কক্সবাজারে হানিমুন করতে গিয়ে শত্রুর গুলিতে আক্রান্ত্ত হয়ে বৃষ্টি যায় মরে। এখানে অবাক হলাম অনন্তর মতো একজন বিজনেস ম্যাগনেটের সিকিউরিটির দূর্বল ব্যবস্থাপনা দেখে।
পরবর্তীতে তারা স্বামী-স্ত্রী মিলে ব্যবসার কাজে মালয়েশিয়া গেলে সেখানে পুত্রজায়া সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে গেলে সেখান থেকে কিডন্যাপড হয় তার স্ত্রী "সন্ধ্যা" আর অনন্ত গুলি খেয়ে মালয়েশিয়ার হসপিটালে। একটু সুস্থ হলে হাসপাতালের বেডেই তাকে একটি সিডি আর একটি ঘরি দিয়ে যাওয়া হয়। সত্যি অবাক হয়ে ভাবছিলাম, কিরে ভাই, গয়নার বাক্সে দিলো সিডি, আবার ঘড়ি দিলো কেন?!


সিডি চালানোর পর বুঝলাম। স্ত্রী সন্ধ্যাকে নিয়ে ওরা একটি বুলেট প্রুফ কাচের গ্যাস চেম্বারে রেখেছে। যেখানে ৫ দিন পর্যন্ত অক্সিজেন থাকবে এবং তারপর অক্সিজেন শেষে কার্বণডাই অক্সাইডের বিষাক্ততায় সেখানেই মারা যাবে। এর একমাত্র খোলার পথ হলো সেই ঘড়িতে কিবরিয়াদের ৫ জনের আই কন্টাক্ট (রেটিনা স্ক্যান করে) দিলেই তবে সেই ঘর খুলবে।
এর মধ্যে চরম দুঃখের কোষ্ঠকাঠিন্য ভরা হৃদয় খানের কন্ঠে একটা গান গেয়ে ফেলে নায়ক। পরে রাস্তায় গুন্ডাদের হাত থেকে রক্ষা করে বাংলাদেশে এক সময়ের মালয়েশিয়ান রাষ্ট্রদূতের কন্যা (রাশিয়ার নানা)কে।

এখানে নানাকে যেমন দেখাচ্ছে, ম্যুভিতে দেখতে সে আরো অনেক বেশিই আকর্ষণীয়। নানা অনেক ভাবে অনন্তকে সহযোগিতা করে একসময় শত্রুদের হাতে জীবন দেয়ার শেষ সময়ে তার ভালোবাসার কথা জানিয়ে যায় (আহারে বেচারী!)

একে একে চারজন রাশিয়ান রেসলার স্মাদি, আফ্রিকান বক্সার মাইক বোস, মালয়েশিয়ান বক্সার আটন এবং ইতালিয়ান নিনোর আই কন্টাক্ট নিতে সক্ষম হলেও কিবরিয়ার আই কন্টাক্ট নেবার আগেই হার না মানা কিবরিয়া নিজেকে গুলি করে।
ফলে অনন্ত সেই বুলেটপ্রুফ গ্লাস কোন ভাবেই ভাংতে না পেরে শেষ ভরসা গলায় থাকা লকেট কোরানের আশ্রয় নিয়ে আল্লাহকে ডাকার ফলে ভেঙে যায় সেই দেয়াল।
অতঃপর মধুরেন সমাপয়েত।

ম্যুভির উল্লেখযোগ্য ভালো দিকঃ
১. প্রতিটি নারী চরিত্রের পোষাক এবং শরীরের ভঙ্গি ছিলো শালিন এমন কি বোনাস নায়িকা বা গুন্ডা বাহিনীর নারী সবাই।

২. গানগুলো বেশ শ্রুতিমধুর (যদিও মনে নেই একটারও কথা :( )
৩. গানের কোরিয়গ্রাফ বেশ সুন্দর ছিলো।
৪. সাউন্ড সিস্টেম খুবই ভালো লেগেছে। এমনকি মাইক্রোলেভেলেও তারা সাউন্ডের কাজগুলো বেশ সুচারুরুপেই করেছে।
৫. ৪৩৫ এক্সট্রিম আলট্রা প্রাইম লেন্সের ক্যামেরা আর হলিউডে আর বলিউডে ব্যবহৃত ব্যয়বহুল ক্যামেরার কাজ বেশ দারুন ছিলো।

ম্যুভির যেই কাজ গুলো আরো ভালো হতে পারতোঃ
১. অনন্ত জলীলকে নাচে তেমন পারদর্শী নয় বলেই মনে হলো।

২. নায়কের ভয়েস এখনও সিনেমাপোযোগী নয় বলেই মনে হলো, এক্ষেত্রে অন্য কাউকে দিয়ে ডাবিংয়ের কাজটা করানো যেতো।
৩. ইংরেজী বলার ঢংটা এতোবড় ব্যবসায়ী হিসেবে আরো বেশি চৌকোস হতে পারতো।
৪. ডায়লগ গুলোকে টিভিতে বিজ্ঞাপনের মতো মনে হয়েছে।
৫. নায়িকা লন্ডন থেকে কেমন করে PIA প্লেনে এলো? আমিতো জানি লন্ডন থেকে হয় বৃটিশ এয়ারওয়েজ, গালফ এয়ার বা এমিরাটে আসে। কি জানি PIA -র ব্যাপারটা মনে খচখচ করছে।
৬. শেষে আশা কোরানের লকেটটা হাতে নিয়ে আল্লাহকে বলার পর যদি দেখাতো আলমগীর চোখ খুলেছে তবে ওই অংশটুকু বরং আরো বেশি আকর্ষণীয় হতে পারতো যা ধর্মীয় অস্বাভাবিকতা দিয়ে শেষটাতে কিছুটা আকর্ষণ নষ্টই করা হয়েছে বলবো।

কিছু ব্যাপারে মনে হয়েছে রাজনৈতিক চামচামি করা হয়েছে। যেমন দেশে এখন মানুষ খাবারে কষ্ট পায় না। সরকার এ ব্যাপারে বেশ কাজ করছে।
ডিজিটাল বাংলাদেশ , ডিজিটাল বাংলাদেশ বলে গলা ফাটানো হয়েছে কয়েকবার।

সবশেষে বলবো...সপরিবারে যেয়ে দেখার মতো চমৎকার একটা সম্ভাবনাময় সিনেমা। সব মিলিয়ে ভালো লেগেছে অনেক। অনন্ত জলিলের ভবিষ্যৎ সিনেমা জীবনের সাফল্য কামনা করি।

শুক্রবার, ১৮ মে, ২০১২

আমার প্রথম ম্যুভি রিভিউ- " দ্য স্পীড"


অনেকদিন পর বলাকায় গেলাম বাঙলা সিনেমা  অনন্ত জলীল অভিনিত ম্যুভি "দ্য স্পীড" দেখতে। সিনেমা শুরুর আগে পর্দা সরে গেল সিনেমা হলের এবং স্বাভাবিক ভাবেই জাতীয় সংগীত মিউজিকে পরিবেশন । কিন্তু অবাক হয়ে দেখলাম প্রায় ৩০% দর্শক সে সময় বসা থেকে উঠার নাম পর্যন্ত করেনি এই কয়েক মিনিট দাড়িয়ে জাতীয় পতাকাকে সম্মান প্রদর্শণ করতে।
 সিনেমার শুরুই হলো বেশ দারুন সাউন্ডের ইফেক্ট দিয়ে। "দ্য স্পীড" নামটিকে সার্থক করতেই হয়তো।
 মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অনন্ত একজন সৎ দেশপ্রেমিক CIP ।সিনেমার শুরুতেই দেখা গেল বেশ ব্যায়াম করছেন। একজন নায়ক হিসেবে দর্শকদের কাছে যা বেশ আকর্ষণীয় বটে। অনন্ত জলীলকে নিয়ে অনেক মজার মজার কথা এর আগে শুনেছি। শুনে অভিজ্ঞতা তেমন ভালো ছিলো না। কিন্তু অনন্তর এপ্রোচ দেখে বেশ আশার আলো দেখতে পেলাম।
ছোটবেলাতেই বাবা-মা মারা যাওয়ায় বড় ভাইয়ের কাছে বড় হওয়ার পর সন্ত্রাসীদের গুলিতে ভাই-ভাবী নিহত হলে বড় ভাইয়ের ব্যবসার দায়িত্ব নিয়ে অনন্ত তার সততায় সেটাকে AJI Park (অনন্ত জলিল ইন্ডাস্টিয়াল পার্ক) বানাতে সক্ষম হন।
এদিকে দূর্নীতিবাজ কিবরিয়া (আলমগীর) তার ব্যবসায় লস খেতে শুরু করেন অনন্তর সৎ ব্যবসার জন্যে। ফলে সন্ত্রাসী দিয়ে অনন্তর উপর হামলা হয়। অনন্তর সিকিউরিটি সিস্টেম ভেঙ্গে গেলেও শেষে অনন্ত নিজেই অস্ত্র হাতে তুলে ঘায়েল করে ফেলেন সব শত্রুদের এবং কিবরিয়াকে বাসায় যেয়ে বলে আসেন " নীতিবানরা দূর্নীতিবাজদের চ্যালেঞ্জ করে না, থ্রেট দেয়"  এদিকে বিদেশী এন্ড্রু তার ব্যবসায় সমুহ ক্ষতি হয়ে যাবার ভয়ে কিবরিয়াকে সামলাতে না পেরে অনন্তর কাছে গেলে অনন্ত তার মুখোশ খুলে দেন। দেশী খেলোয়াররা যে বিদেশে যেয়ে আর দেশে ফিরে আসে না তাদেরই একজন এনায়েতুল্লাহ এখন বদলে নিজেকে বানিয়েছে এন্ড্রু তা অনন্ত এ্যান্ড্রুর মুখের উপর বলে দেয়্।

এদিকে বড় ভাইয়ের রেখে যাওয়া একমাত্র কন্যা দৃষ্টি (দীঘি)র সেবায় সারাক্ষণ ব্যস্ত দুই ইয়া মুটকি স্কার্ট, টপস পড়া পরিচারিকা। চাচ্চুর জানের জান বৃষ্টির সাথে চাচ্চুর একটি দারুন গান পরিবেশন হয় এই ফাঁকে। এখানে বলে রাখা ভালো চাচ্চুর আর ভাতিজার সম্পর্ক আর গানের কথা না শুনে কেউ যদি বোবা অভিনয় দেখে তবে অবাক হয়ে ভাববে কি রে, এতো বড় নায়কের সাথে এই পিচ্চি নায়িকা কেমন করে কি?! দীঘির অভিনয় আর এ্যাপ্রোচ তেমনই ছিলো।

এজিআই পার্কের ম্যানেজারের বোন লন্ডন থেকে ফ্যাশন ডিজাইন-এর উপর পড়ে এসেছেন মালয়েশিয়ান অভিনেত্রী "পারভীন" পুরোটা সিনেমা জুরে যার চমৎকার শালীন উপস্থাপন সপরিবারে দেখার মতো সিনেমাতে অনুপ্রাণিত করবে। এমনকি তাদের বাসর রাতের খাটের চারপাশে ইদুর, বিড়াল খেলাও ছিলো খুবই চমৎকার উপস্থাপন।
কক্সবাজারে  হানিমুন করতে গিয়ে শত্রুর গুলিতে আক্রান্ত্ত হয়ে বৃষ্টি যায় মরে। এখানে অবাক হলাম অনন্তর মতো একজন বিজনেস ম্যাগনেটের সিকিউরিটির দূর্বল ব্যবস্থাপনা দেখে।
পরবর্তীতে তারা স্বামী-স্ত্রী মিলে  ব্যবসার কাজে মালয়েশিয়া গেলে সেখানে পুত্রজায়া সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে গেলে সেখান থেকে কিডন্যাপড হয় তার স্ত্রী "সন্ধ্যা" আর অনন্ত গুলি খেয়ে মালয়েশিয়ার হসপিটালে। একটু সুস্থ হলে হাসপাতালের বেডেই  তাকে একটি সিডি আর একটি ঘরি দিয়ে যাওয়া হয়। সত্যি অবাক হয়ে ভাবছিলাম, কিরে ভাই, গয়নার বাক্সে দিলো সিডি, আবার ঘড়ি দিলো কেন?!


সিডি চালানোর পর বুঝলাম। স্ত্রী সন্ধ্যাকে নিয়ে ওরা একটি বুলেট প্রুফ কাচের গ্যাস চেম্বারে রেখেছে। যেখানে ৫ দিন পর্যন্ত অক্সিজেন থাকবে এবং তারপর অক্সিজেন শেষে কার্বণডাই অক্সাইডের বিষাক্ততায় সেখানেই মারা যাবে। এর একমাত্র খোলার পথ হলো সেই ঘড়িতে কিবরিয়াদের ৫ জনের আই কন্টাক্ট (রেটিনা স্ক্যান করে) দিলেই তবে সেই ঘর খুলবে।
এর মধ্যে চরম দুঃখের কোষ্ঠকাঠিন্য ভরা হৃদয় খানের কন্ঠে একটা গান গেয়ে ফেলে নায়ক। পরে রাস্তায় গুন্ডাদের হাত থেকে রক্ষা করে বাংলাদেশে এক সময়ের মালয়েশিয়ান রাষ্ট্রদূতের কন্যা (রাশিয়ার নানা)কে।

এখানে নানাকে যেমন দেখাচ্ছে, ম্যুভিতে দেখতে সে আরো অনেক বেশিই আকর্ষণীয়। নানা অনেক ভাবে অনন্তকে সহযোগিতা করে একসময় শত্রুদের হাতে জীবন দেয়ার শেষ সময়ে তার ভালোবাসার কথা জানিয়ে যায় (আহারে বেচারী!)

একে একে চারজন রাশিয়ান রেসলার স্মাদি, আফ্রিকান বক্সার মাইক বোস, মালয়েশিয়ান বক্সার আটন এবং ইতালিয়ান নিনোর আই কন্টাক্ট নিতে সক্ষম হলেও কিবরিয়ার আই কন্টাক্ট নেবার আগেই হার না মানা কিবরিয়া নিজেকে গুলি করে।
ফলে অনন্ত  সেই বুলেটপ্রুফ গ্লাস কোন ভাবেই ভাংতে না পেরে শেষ ভরসা গলায় থাকা লকেট কোরানের আশ্রয় নিয়ে আল্লাহকে ডাকার ফলে ভেঙে যায় সেই দেয়াল।
অতঃপর মধুরেন সমাপয়েত।

ম্যুভির উল্লেখযোগ্য ভালো দিকঃ
১. প্রতিটি নারী চরিত্রের পোষাক এবং শরীরের ভঙ্গি ছিলো শালিন এমন কি বোনাস নায়িকা বা গুন্ডা বাহিনীর নারী সবাই।

২. গানগুলো বেশ শ্রুতিমধুর (যদিও মনে নেই একটারও কথা :( )
৩. গানের কোরিয়গ্রাফ বেশ সুন্দর ছিলো।
৪. সাউন্ড সিস্টেম খুবই ভালো লেগেছে। এমনকি মাইক্রোলেভেলেও তারা সাউন্ডের কাজগুলো বেশ সুচারুরুপেই করেছে।
৫. ৪৩৫ এক্সট্রিম আলট্রা প্রাইম লেন্সের ক্যামেরা আর হলিউডে আর বলিউডে ব্যবহৃত ব্যয়বহুল ক্যামেরার কাজ বেশ দারুন ছিলো।

ম্যুভির যেই কাজ গুলো আরো ভালো হতে পারতোঃ
১. অনন্ত জলীলকে নাচে তেমন পারদর্শী নয় বলেই মনে হলো। 

২. নায়কের ভয়েস এখনও সিনেমাপোযোগী নয় বলেই মনে হলো, এক্ষেত্রে অন্য কাউকে দিয়ে ডাবিংয়ের কাজটা করানো যেতো।
৩. ইংরেজী বলার ঢংটা এতোবড় ব্যবসায়ী হিসেবে আরো বেশি চৌকোস হতে পারতো।
৪. ডায়লগ গুলোকে টিভিতে বিজ্ঞাপনের মতো মনে হয়েছে।
৫. নায়িকা লন্ডন থেকে কেমন করে PIA প্লেনে এলো? আমিতো জানি লন্ডন থেকে হয় বৃটিশ এয়ারওয়েজ, গালফ এয়ার বা এমিরাটে আসে। কি জানি  PIA -র ব্যাপারটা মনে খচখচ করছে।
৬. শেষে আশা কোরানের লকেটটা হাতে নিয়ে আল্লাহকে বলার পর যদি দেখাতো আলমগীর চোখ খুলেছে তবে ওই অংশটুকু বরং আরো বেশি আকর্ষণীয় হতে পারতো যা ধর্মীয় অস্বাভাবিকতা দিয়ে শেষটাতে কিছুটা আকর্ষণ নষ্টই করা হয়েছে বলবো।

কিছু ব্যাপারে মনে হয়েছে রাজনৈতিক চামচামি করা হয়েছে। যেমন দেশে এখন মানুষ খাবারে কষ্ট পায় না। সরকার এ ব্যাপারে বেশ কাজ করছে।
ডিজিটাল বাংলাদেশ , ডিজিটাল বাংলাদেশ বলে গলা ফাটানো হয়েছে কয়েকবার।

সবশেষে বলবো...সপরিবারে যেয়ে দেখার মতো চমৎকার একটা সম্ভাবনাময় সিনেমা। সব মিলিয়ে ভালো লেগেছে অনেক। অনন্ত জলিলের ভবিষ্যৎ সিনেমা জীবনের সাফল্য কামনা করি।


http://www.youtube.com/watch?v=-gCzc1BCm6g

সোশ্যাল নেটওয়ার্ক

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites