তথাকথিত বড়লোকদের রান্না ঘরের চেয়েও ছোট রুনুর ঘরটা । দরজা নেই, রাতে ঘুমুতে যাবার আগে সেই জায়গায় একটা চেয়ার টেনে দিতে হয় যেন তাদের স্বামী-স্ত্রীর চিরাচরিত আদিম মধুর সময়টির সময় হুট করে কেউ ঢুকে যেতে না পারে ।
ওর স্বামী কখনো কোন রাতে রাগ করে পাশ ফিরে শুলেও ওদের দু'হাত চওড়া বিছানা ঠিকই তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করতে পারতো না । গায়ের সাথে গা লাগতোই । রুনু ব্যাপারটাতে বেশ আনন্দ পেতো ।
স্বামী উপার্জনের ঘাটতি থাকায়ই তারা বড় কোন ঘরে যেতে পারছিল না । এমনকি বাচ্চাও নিতে পারছিল না ।
স্বামীর উপার্জন বাড়ল, একটা বাচ্চা নিতে যেয়ে পর পর দু'টো বাচ্চার ধকল নিতে হলো । কিন্তু সে সুখিই ।
আস্তে আস্তে তাদের ঘরের সংখ্যা বাড়ল, রুনুরও একটা স্কুলে পড়ানোর চাকুরী জুটে গেল । স্বামী অফিস থেকে বেশ বড় অংকের বেতন পায়, স্বাচ্ছন্দ্য এখন উপচে পড়ে রুনুর ঘরে । বাচ্চারা বেশিটাকা খরচের নামী স্কুলে পড়ছে । রুনুর পোশাকেও বেশ রঙ লেগেছে ।
কিন্তু রাত গুলো এখন রুনুর দীর্ঘশ্বাসেই কাটে ।
পাশের ঘরে স্বামী সারারাত ল্যাপটপে কিসের কাজ করে জানে না...এখন আর তার সময়, ইচ্ছে কোনটাই হয় না রুনুর পাশে এসে ঘুমোবার ।
রুনু শীতের দীর্ঘরাত গুলোতে ভারী কম্বলের আড়ালেও উষ্ণতা খুঁজে ফেরে...মানব শরীরের একটু উষ্ণতার জন্যে ওর প্রাণ আকুলি বিকুলি করে । এমন সম্পর্ককে দূরে নিয়ে যাওয়া সুখ, স্বাচ্ছন্দ্যই কি রুনু চেয়েছিল ? সামনে একটা বিশাল প্রশ্নবোধক চিহ্ন এসে নতুন আরেক বিবর্ণ ভোরের উপস্থিতি জানান দেয় ।
Facebook comments for blogger brought to you by AllBlogTools.com
1 মন্তব্য(গুলি):
http://helpingdoctor.blogspot.com/
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন