ম্যুভি রিভিউ- "দ্য স্পীড"

অনেকদিন পর বলাকায় গেলাম বাঙলা সিনেমা অনন্ত জলীল অভিনিত ম্যুভি "দ্য স্পীড" দেখতে। সিনেমা শুরুর আগে পর্দা সরে গেল সিনেমা হলের এবং স্বাভাবিক ভাবেই জাতীয় সংগীত মিউজিকে পরিবেশন । কিন্তু অবাক হয়ে দেখলাম প্রায় ৩০% দর্শক সে সময় বসা থেকে উঠার নাম পর্যন্ত করেনি এই কয়েক মিনিট দাড়িয়ে জাতীয় পতাকাকে সম্মান প্রদর্শণ করতে। সিনেমার শুরুই হলো বেশ দারুন সাউন্ডের ইফেক্ট দিয়ে। "দ্য স্পীড" নামটিকে সার্থক করতেই হয়তো।

১৯৯৯ সালের অক্টোবর মাসের কোন একদিন

মানুষের জীবনে বোধ সঞ্চারের এক নির্ভেজাল উপাদানের নাম কবিতা। কবিতা কখনো মানুষের মনকে রাঙিয়ে দেয়, কখনো বদনার কালো রঙ ঢেলে উপলব্ধিগুলোকে সতেজ করে তোলে; জীবন দর্শনের পথকে করে প্রশস্ত।

নারী-পুরুষ নিয়ে একটি বৈষম্যহীন সমাজের কথা বলি

'জেন্ডার' শব্দটি মুলত নারী ও পুরুষ উভয়কেই বোঝায়, বোঝায় নারী-পুরুষকে নিয়ে বৈষম্যহীণ সমাজের, রাষ্ট্রের কথা। সংস্কৃতি ও সমাজ নারী ও পুরুষ সম্পর্কে যে সব দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবোধ গড়ে তোলে, ভিন্ন ভিন্ন আচরণ করতে শেখায়, কিংবা ভুমিকা পালন করতে বলে, সেসবই হচ্ছে জেন্ডার।

সৌদি নারী...অতঃপর রোকেয়া

যদি আজ থেকে প্রায় একশ বছর পেছনে তাকাই বেগম রোকেয়ার (রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন১৮৮০-১৯৩২) জীবনে যিনি সৌদি নারীদের মতো প্রাতিষ্ঠানিক উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পাননি কিন্তু তার দেখানো আলোতে এখনও আমরা পথ দেখি।

নারী....আর কতোকাল রবে শুধুই অর্কিড হয়ে!

প্রচলিত ধ্যান-ধারণা হচ্ছে নারী হবে নরম-কোমল, সর্বংসহা (মাতা), মনোরঞ্জনকারিনী (বধূ)। তারা থাকবে অন্দরমহলে। আর তাই প্রবাদে শোনা যায়... 'ঝি নষ্ট হয় হাঁটে, বউ নষ্ট হয় ঘাটে'।....অর্থাৎ ঝি কে হাঁটে-বাজারে-মার্কেটে পাঠানো যাবে না আর বউকে পুকুর ঘাটে পাঠানো যাবে না (যদিও গ্রাম এলাকায় পরিবারের পানির যোগান দাতা সাধারণত নারীই)।

বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০১৩

জেন্ডার ...অল্প কথা

আগে সব জায়গায় লেখা হত women's affair কিন্তু এখন লেখা হয় gender issue তার কারণ হল- নারী সমস্যা বলে আলাদা ভাবে কিছু নেই। নারী সমস্যা সমাজের তৈরী। বলা ভাল- পুরুষতান্ত্রিক সমাজের তৈরী। ফলে ফেমিনিজম এর চেয়ে জেন্ডার শব্দ হিসেবে বেশী গ্রহণযোগ্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আগে উইমেন'স স্টাডিজ বিভাগ ছিল।
সেটার নাম পাল্টে উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিজ করা হয়েছে। এর কারণও তাই। ফেমিনিজম বললে মনে হয় 'নারী'ই একমাত্র আলোচনার বিষয়। আদতে তা সত্য নয়। আর সংজ্ঞা কোন স্থির বিষয় নয়। ফেমিনিজম শব্দটা ব্যবহার করে এটাতে আটকে থাকার চেয়ে জেন্ডার ব্যবহার করে এগিয়ে যাওয়া ভাল।কোথায়ও কোথায়ও ফেমিনিস্টদেরও এখন জেন্ডার এক্সপার্ট বলা হয়। তবে হ্যাঁ - জেন্ডার এর সংজ্ঞা আসলে বাংলা করলে দাড়ায় 'সামাজিক লিঙ্গ'। সেক্স যেমন প্রাকৃতিক লিঙ্গ।জেন্ডার বলতে বৈষম্যহীনতা বোঝালেও জেন্ডার শব্দটা এখন আর ঐ সঙগায় আটকে নেই। জেন্ডার এখন শুধুই বৈষম্যহীনতাকেই বোঝায় না বরং প্রচলিত বৈষম্যকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছে ।

মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ, ২০১৩

ফটোগ্রাফি: পাচঁমিশালী





                                                  
















সোমবার, ২৫ মার্চ, ২০১৩

সিনেমাঃ চলো পাল্টাই

আমি পড়ার জন্যে সাধারণত আমার বাচ্চাদের মারি না। কিন্তু মেয়েটার পড়ার চাপ দেখে সত্যিই আমি বিরক্ত! কম্পিটিশন বলে কি এতো!!! বাচ্চা ব্যাগের বোঝা কাধেঁ করে নিয়ে যাবে, গাধার মতো বহণ করে আর তা আমাকে দেখতে হবে। তেমনটি চাইনি।
হরনাথ চক্রবর্তীর পরিচালনায় প্রসেনজিত-এর অভিনয় খারাপ লাগে নি। কিন্তু আমার মনে হয়েছে, ছবিটা আরো ভালো হতে পারতো।
থ্রি ইডিয়টেরই থিম। তবে অনেক সহজভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা।
যার যেই বিষয়ে আগ্রহ বেশি, সে সেই বিষয়েই পড়বে, জানবে..এটা হলো সিনেমার মূল কথা।।

http://www.abpananda.newsbullet.in/entertainment/movie/1751-2011-03-04-07-00-37

http://movies.anandabazar.com/node/120#

রবিবার, ২৪ মার্চ, ২০১৩

জেন্ডার পাঠঃ বৈষম্যহীন পৃথিবীর কথা বলতে এসেছি।

'কোন বিষয় সম্পর্কে ভালোভাবে অবহিত হতে চাইলে তা নিয়ে বই লেখা শুরু করাই ভালো।'-বেঞ্জামিন ডিজরেইলি (১৮০৪-১৮৮১), বৃটিশ রাষ্ট্রনায়ক

মুলত জেন্ডার সম্পর্কে জানতে এবংকাছের, আশে পাশের মানুষদেরকে জানাতেই বই লেখার ভাবনা এবং তা বাস্তবে প্রকাশ।
জেন্ডার মূলত ব্যবহার করা হয় নারী- পুরুষের বৈষম্যহীন অবস্থাকে বোঝাতে।

নারী ও প্রকৃতি উভয়ই পুরুষ শাসিত সমাজ ব্যবস্থায় অযুত বছর ব্যপী শত প্রতিকূলতার ও নির্যাতনের মধ্যে টিকে রয়েছে। নারীর সফলতাকে সমাজের অনেকেই কলুষ চোখে দেখে। ...২৪ নভেম্বর ২০১০ তারিখে দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন এভাবেই আরো কিছু বর্ধিত আকারে বইটির প্রথম সংস্করণ (প্রকাশ কাল: ৩ ডিসেম্বর, ২০০৯) নিয়ে আলোচনা করেছিল।
বইটির প্রথম প্রকাশে মূলত জেন্ডার: ধারণা, তাৱপর্য ও প্রয়োগ নিয়ে আলোচনা করা হয় এবং পরবর্তীতে


বইটির দ্বিতীয় বর্ধিত সংস্করণে (প্রকাশ কাল: ১৭ এপ্রিল ২০১১)
জেন্ডার, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট ও জাতীয় আইন এবং নীতি ও পরিকল্পনা সহজ ভাবে বক্তব্য তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়।।


=============
ব্যস্ততায় অসমাপ্ত রুপে প্রকাশ করা হলো। পরবর্তীতে আরো সংযোজনের আশা রাখি।

শুক্রবার, ১৫ মার্চ, ২০১৩

মেয়েদের বিয়ে হয়, আর ছেলেরা বিয়ে করে...এভাবে আর কতো হাতি পোষা হবে?!


সাথীর বিয়ে হয়েছে হৃদয়ের সাথে ...তেমন আহামরি কোন কথা না। রাকিবের মাকে যখন জিজ্ঞেস করলাম, ছেলের বিয়ে হলো কবে? উনি হেসে বললেন, এইতো ,গতমাসেই রাকিব বিয়ে করলো।  মেয়েদের বিয়ে হয়, আর ছেলেরা বিয়ে করে। খুব ভালো করে খেয়াল করলে দেখা যায় যে, ছেলেদের বিয়ে হয়, এই কথাটা কেউই কখনোই বলে না। কেন বলে না? "বিয়ে করা" ....এই করা শব্দটার মধ্যে কর্তৃত্ব আছে। আমি শব্দটাকে নঞর্থকভাবে বলছি না। মেয়েদের নির্ভরশীলতা তুলে ধরার জন্যেই এভাবে বলা। মেয়েরা বিয়ে বসেছে...এই বিয়ে বসা শব্দটা আসলে এ্ক ঘাড় থেকে আরেক ঘাড়ে যেয়ে চড়ে বসা । জন্মের পর শিশু ছেলেই হোক বা মেয়েই হোক তাকে লালন পালন করার দায়িত্ব মুলত পিতা-মাতারই। কিন্তু একটা সময়ের পর থেকে মেয়েকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয় কিভাবে পরের ঘরে যেয়ে অষ্ট ব্যঞ্জন রেধে স্বামী, শ্বশুর-শ্বাশুরীর মনোরঞ্জন করবে। ঘর গোছানোর প্রশিক্ষণ দেয়া হয়, দেয়া হয় ধর্মীয় প্রশিক্ষণ তা বিশেষ করে পরের বাড়িতে তার পারফরমেন্স দেখানোর জন্যে। মেয়ে শিশুর জন্মের পর পিতা-মাতাকে তার নামে অর্থ সঞ্চয়ের প্রবণতা দেখা যায় তার বিয়েতে খরচ করার জন্যে। বিয়েতে তার সাথে কিছু উপহার পাঠাতে। এই উপহারটা যদিও যৌতুকের ছদ্মবেশ। কিন্তু ছেলের জন্যে সেভাবে অর্থ সঞ্চয়ের প্রবণতা দেখা যায় না। তবে কি ছেলে শিশুরা বঞ্চিত? প্রশ্ন উঠতেই পারে... মজার বিষয় হলো এটা সর্বজন বিদিত যে, সাধারণত ছেলে শিশুর উপরই পরিবারের মানুষ ভবিষ্যতে পরিবারের দায়িত্বের বোঝাটা চাপিয়ে দিবে বলেই ছেলে শিশুকে ছোট বেলা থেকেই শরীরের দিক থেকেই হোক বা মনের দিক থেকেই হোক, তাকে বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। তাকে বুঝিয়ে দেয়া হয়, তার উপরই সবার ভরসা। সেই হতে যাচ্ছে তার পিতার পরে পরিবারের রক্ষা কর্তা। আমাদের সমাজে নিরাপত্তার ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় নারীর অবাধ চলাচল বিঘ্নিত হওয়ায় নারীরা অনেক চ্যালেঞ্জিং পেশায় যোগ্যতা থাকা সত্বেও অংশগ্রহণ করতে পাচ্ছে না।  তারা অনেক সময় বড় অংকের বেতনের সুবিধা প্রাপ্ত চাকুরীতে অংশগ্রহণ করতে পাচ্ছে না যাতায়াত ব্যবস্থার সুবিধা না থাকায়, নিরাপত্তার নিশ্চয়তা না থাকায়। কিন্তু বাসে নারী এবং পিছিয়ে পরা জনগোষ্ঠির জন্যে নির্ধারিত সিট নিয়ে দেখা যায় অনেক সময়ই পুরুষ কন্ঠের কঠোরতা...যদি সমান অধিকার চানতো ছেলেদের মতো দাড়িয়ে যান বা এধরণের কথা । বাড়ী থেকে দুরের কলেজ/ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক অভিভাবকই পড়তে দিতে চাননা আবাসন ব্যবস্থার নিরাপত্তা না থাকায়। এভাবেই নারী অনেক সময়ই পিছিয়ে পড়ছে তার যোগ্যতা থাকা সত্বেও। পিছিয়ে পরছে অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা থেকে। তারপরও নারী গৃহস্থালী কাজে যে পরিমাণ শ্রম দিচ্ছে তাকে আমরা সাধারণ চোখে মূল্যায়ন করতে নারাজ। একজন নারী কিভাবে একটি সমাজে তার অবদান রাখছে তার হিসেব আমরা করি না। যেহেতু নারীর অথরঐনতিক স্বনির্ভরতা নেই, তাই আমরা তার আর সব কাজের মূল্যায়ন না করে তাকে বোঝা হিসেবেই সাধারণত দেখে থাকি।
নারীর পথচলা কন্টকমুক্ত হোক।নারীর কাজের মূল্যায়ন হোক। এভাবে নারীকে হাতি পোষার মতো প্রাণী হেসেবে দেখতে চাই না।

------------------
অস্থির সময়ের প্রলাপ

সোমবার, ১১ মার্চ, ২০১৩

ওমরা হজ্জ্ব করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের জ্ঞাতার্থে

সাধারণত ধর্মপ্রাণ সামর্থ্য আছে এমন মুসলিমদের অনেকেরই স্বপ্ন হজ্জ্ব করার। অনেকেই হজ্জ্ব করার আগে ওমরা হজ্জ্ব করে নিতে চায় হজ্জ্বের অভিজ্ঞতা লাভের জন্যে।
ওমরা হজ্জ্ব করার জন্যে যা কিছু বিবেচ্যঃ
১.পাসপোর্ট এবং ভিসা
২. টাকা কি পরিমাণ লাগবে?
৩. সৌদি আরব-এ থাকার ব্যবস্থা।
৪.এছাড়া কোন সময় ওমরা হজ্জ্ব করলে সব দিক থেকেই সুবিধা...

রোজার সময় ওমরা করা খুবই সওয়াবের।মুসলমানের জন্য হজ্জ্ব একবার ফরজ।তাই আগে ওমরা করে সব কিছু ভাল করে দেখে শুনে নিয়ে তারপর হজ্জ্ব করা ভাল। ফকিরাপুল পানির ট্যাঙ্কের রোডে অনেক ওমরা এজেন্সি আছে।তখন কাগজ পত্র,প্লেনের টিকিট ও ভিসার কাজ তারাই করে দিয়ে থাকে।ওখানে হোটেলের ব্যবস্থাও তারা করে দিতে পারে। চার দিনের মধ্যে মক্কা ও মদিনা ঘুড়ে ওমরাহজ্জ্ব করা সম্ভব।
আপনি যেখানেই থাকুননা কেন সৌদি প্রবেশের পর মিনিমাম তিন দিনের মধ্যে দুটো জায়গা ঘুড়ে যেতে পারবেন।তবে দূর থেকে এলে হাতে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে এসে একটার যায়গায় দশটা ওমরা করে যান।আর সব পবিত্র জায়গা গুলো জিয়ারত করে নিন।
এখানে রোজার মাসে ওমরা করা বেশী সওয়াব তবে প্রচন্ড ভীড় থাকে।হোটেল ভাড়াও বেড়ে যায়।নিজে খুঁজেও হোটেল নিতে পারবেন তাতে আপনার পছন্দ ও সাশ্রয় পাবেন।অন্যান্য দেশের মতো এখানে দালালি নেই।ঠেকে গেলে কমলা এপ্রোন পড়া বাংগালী ক্লিনার ভাইদের দ্বরস্থ হবেন ওরা আপনাকে বিনা লাভে ভাল পরামর্শ দেবে বা নিয়ে গিয়ে সব দেখিয়ে দেবে।








তথ্যসূত্রঃ
সৌদী প্রবাসীদের জন্যে ওমরা হজ্জ্ব।: মোজাম হক

বৃহস্পতিবার, ৭ মার্চ, ২০১৩

নারীর প্রতি দরদ থাকুক বছর জুরে...

নারী দিবস নিয়ে অনেকেই দেখি অনেক বাৎসরিক উৎসবমুখর কথা বলে থাকেন। দরদীদের দেখে ভালোই লাগে। তবুওতো বছরে একটি দিন হলেও দরদ উথলাইয়া পড়ে। অনেক পুরুষদেরই দেখি যারা মুখে নারীবাদী হলেও অন্তরে তা আসলেই ধারণ করেন কি না তাতে যথেষ্ট সন্দেহ আছে।কারণ তারা তাদের ঘরের নারীদের প্রতি ঠিক ততোটাই কঠোর যতোটা উদার বাইরের নারীদের প্রতি, যতোটা উদার তাদের কর্মক্ষেত্রের সাবোর্ডিনেট নারীদের প্রতি। আবার নারী দিবসে কিছু মহান নারীদেরকেও দেখা যায় যারা ঘরে তাদের পুত্রবধু/ভাইয়ের বউ/গৃহ সহকারীর ব্যাপারে ততোটাই কঠোর যতোটা উদার তারা বাইরের নারীদের প্রতি, যতোটা উদার তারা কথায়। তবুও যদি এসব মুখে উদার পুরুষ/নারীরা মুখে মুখে উদার হতে হতে একসময় তা অন্তরে ধারণ করতে পারেন, সে আশা করতেতো দোষ নেই।

সবাই মানবিক হোক।।

শুক্রবার, ১ মার্চ, ২০১৩

মানসিক চাপ থেকে নিজেকে রক্ষা করার উপায়




অবাস্তব প্রত্যাশাঃ আমাদের প্রত্যাশা অনেক সময়ই আমাদের সামর্থের চেয়ে বেশিই হয়ে যায়। যদিও মানুষ তার আশার সমান বড়। কিন্তু ধরুণ আপনি একজন গৃহ ব্যবস্থাপক। এক বা দুই বা ততোধিক সন্তানের জননী (জনক বলছি না বিশেষ কারণে) । আপনার পক্ষে এমতাবস্থায় নতুন করে ঘরের বাইরে বা ঘর থেকে দুরে কোথাও ৯ টা ৫টা চাকুরী নিতে গেলে আপনার কাছের অনভ্যস্থ মানুষগুলো কোনভাবেই আপনাকে সহযোগিতা করবে না। সেক্ষেত্রে আপনাকে বিকল্প উপায় খুজেঁ নিতে হবে। কেননা বিকল্প উপায় খুজেঁ না নিলে হয় আপনি জেদ করে চাকুরীতে গেলেন আপনার সন্তানদের সমস্ত দায়ভার কাজের মানুষটির উপর দিয়ে অথবা সন্তানদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে। অথবা চাকুরীতে না গিয়ে নিজে হতাশায় নিমজ্জিত হলেন। তাই নিজেকে হতাশা থেকে বাঁচানোর জন্যে আপনাকে বিকল্প পথ খুজেঁ বের করতেই হবে। এই বিকল্প উপায় কোন সৃজনশীল কাজও হতে পারে। তা লেখালেখি থেকে শুরু করে অন্য যে কোন ধরনের কাজ হতে পারে।

অহেতুক সময় সীমাঃ অনেকেই রুটিন অনুসরণ করে কাজ করতে পছন্দ করেন। কিন্তু সংসার জীবনটা পুরোপুরি রুটিন মেনে চলা সম্ভব নয়। তাই সময়গুলোকে নিজের মতো করে ব্যবহার করুন। তবে তা যেন যথেচ্ছা না হয়। সারারাত কাজ করে দিনের অনেকটা সময় ঘুমানো বা সারাদিন ঝিমানো কোন কাজের কথা না। অনেককেই দেখা যায় রাত জেগে কাজ করে দিনের অনেকটা সময় ঘুমায়...যদিও এই কাজটা অনেকেই নির্জনতায় কাজ করার জন্যেই করে থাকেন। তবে আমাদেরকে সচেতন থাকতে হবে যেন শরীর তার প্রয়োজনীয় বিশ্রাম পায়। এবং এই বিশ্রাম নেয়াটা যেন এমন সময়ে না হয় যখন আপনার অন্য কোন প্রয়োজনীয় কাজ করার সময়। 

সমস্যাকে মোকাবেলা করতে শেখাঃ অনেক সময়ই কাজের চাপ বেড়ে গেলে আমরা তা দুরে সরিয়ে রাখি পরে করবো ভেবে। এতে প্রকৃতপক্ষে নিজেরই ক্ষতি করা হয়। কেননা সেই কাজটা কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে করে শেষ করতে না পারলে তা আমাদের মাঝে বোঝা হয়ে হতাশার সৃষ্টি করে। কাজেই প্রয়োজনীয় কাজটি যতোই তিক্ত হোক তা কষ্ট করে হলেও করে ফেলতে হবে সময় মতোই। উদাহরণ স্বরূপ অনেক কথাই বলা যায়, কিন্তু ধরুন আপনি যাদের সাথে কথা বলতে পছন্দ করুন, গল্প করে মজা পান শুধু তাদেরকেই ফোন করে আলাপ চারিতা চালান। কিন্তু অনেকদিন ফোন করা হয় না এমন কাউকে হঠাৎ করেই আপনার খুব দরকার পরে গেল, তখন তাকে শুধু নিজের দরকারে ফোন করাটা খুবই অশভোনীয় এবং যাকে ফোন করলেন তিনিও যে সবসময় এই অভ্রাসটিকে সাদরে গ্রহণ করবেন তা কিন্তু নয়। আবার ধরুন, আপনার পরিচিত কেউ হাসপাতালে বা রোগাক্রান্ত। তাকে সশরীরে দেখতে যেতে না পারলেও অন্তত ফোন করে খোঁজ নেয়াটাও আপনার একটা সামাজিক সমস্যাকে কমিয়ে দিচ্ছে।

স্বনির্ভরতাঃ এটা খুবই জরূরী। আমরা স্বনির্ভরতা বলতে সাধারণ অর্থনৈতিক নির্ভরতাকেই বুঝে থাকি। কিন্তু নিজের চারপাশের কাজগুলোকে অন্যের উপর নির্ভর করে না করে নিজে নিজে করাটাও স্বনির্ভরতা। অনেককেই দেখা যায় শপিংয়ে যাবে, তার সাথে যাওয়ার জন্যে অন্য কাউকে জোর করেই নিয়ে যাচ্ছে, হয়তো যে সাথে যাচ্ছে সে অনুরোধে ঢেকি গিলেই যাচ্ছে।

কাজের গতিঃ যে কাজটি যে সময়ে শেষ করতে হবে তা ঠিক সময়ে শেষ করতে আমরা সাধারণতই গরিমসি করে থাকি এতে আমরা সাধারণতই পিছিয়ে পরি। কেউ কেউ বলতে পারেন, এভাবেই তো জীবনটা কেটে গেল...ঠিক সময়ে কাজ করলে তো আজ আমি অমুক থাকতাম, তমুক থাকতাম। কিন্তু যদি বুঝতেই পাচ্ছেন তবে এখন থেকেই চেষ্টা করুন না কেন...আর হতাশা নয় অমুক তমুক হওয়ার...যা আছেন সেই অবস্থাটাকেই নিজের মন মতো করে নিন।


পারিবারিক জীবন উপভোগঃ কাজের চাপে অস্থির হয়ে আমরা নিজেদের কাছের মানুষগুলোর প্রতিও অনেক সময় উদাসীন থাকি। কিন্তু কাছের মানুষগুলোর সাথে সময়গুলো ভালো না কাটানোর চেষ্টাকে বলবো আত্নহত্যার সামিল। কেননা কাছের মানুষগুলোই আপনার সুখ, সমৃদ্ধির প্রধান নিয়ামক। কাজেই তাদের প্রতি মনোযোগ দেয়াটা, সুন্দর সময় কাটানোর চেষ্টা করা এবং তা বাস্তবে কাজে লাগানো নিজের সুখি জীবনের জন্যেই জরূরী।


শ্রোতা এবং দর্শকের ভুমিকা নিনঃ অনেকেই অনেক কথা বলছে। কিন্তু শ্রোতা বা দর্শক কমই ... যদি সময়গুলো খারাপ যায় তবে অন্যের কথা শুনুন। দেখুন অন্যে কি করছে। তা উপলব্ধি করার চেষ্টা করুন। তাতে বরং কখনো কখনো আপনার মঙ্গলই হবে। আর সময় যখন নিজের অনুকুলে না থাকে তখন বলার চেয়ে শোনার অভ্যেসটাই কাজে লাগে।


চাহিদার অযৌক্তিকতাঃ আপনার হয়তো কোন কিছু কিনতে ইচ্ছে করছে বা একটা নতুন ডিগ্রী অর্জন করতে ইচ্ছে করছে বা কোন একটা দেশ ভ্রমণ করতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু তা কতোটা সময়োপযোগী বা তা কতোটুকু আপনার জন্যে এই মুহুর্তে যৌক্তিক তা নিজের কাছেই জিজ্ঞেস করুন । এতে সেই ডিগ্রী নিতে না পারার বা সেই দেশটাতে ভ্রমণ করতে না পারার বা সেই মূল্যবাদ দ্রব্যটি কিনতে না পারার হতাশা , কষ্টটা দূর হয়ে যাবে।

সময়গুলো নিজের নিয়ন্ত্রনে রাখুন। ভালো থাকুন সর্বদা।







বিশেষ ধন্যবাদ ড. গার্গী দত্ত

সোশ্যাল নেটওয়ার্ক

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites