ম্যুভি রিভিউ- "দ্য স্পীড"

অনেকদিন পর বলাকায় গেলাম বাঙলা সিনেমা অনন্ত জলীল অভিনিত ম্যুভি "দ্য স্পীড" দেখতে। সিনেমা শুরুর আগে পর্দা সরে গেল সিনেমা হলের এবং স্বাভাবিক ভাবেই জাতীয় সংগীত মিউজিকে পরিবেশন । কিন্তু অবাক হয়ে দেখলাম প্রায় ৩০% দর্শক সে সময় বসা থেকে উঠার নাম পর্যন্ত করেনি এই কয়েক মিনিট দাড়িয়ে জাতীয় পতাকাকে সম্মান প্রদর্শণ করতে। সিনেমার শুরুই হলো বেশ দারুন সাউন্ডের ইফেক্ট দিয়ে। "দ্য স্পীড" নামটিকে সার্থক করতেই হয়তো।

১৯৯৯ সালের অক্টোবর মাসের কোন একদিন

মানুষের জীবনে বোধ সঞ্চারের এক নির্ভেজাল উপাদানের নাম কবিতা। কবিতা কখনো মানুষের মনকে রাঙিয়ে দেয়, কখনো বদনার কালো রঙ ঢেলে উপলব্ধিগুলোকে সতেজ করে তোলে; জীবন দর্শনের পথকে করে প্রশস্ত।

নারী-পুরুষ নিয়ে একটি বৈষম্যহীন সমাজের কথা বলি

'জেন্ডার' শব্দটি মুলত নারী ও পুরুষ উভয়কেই বোঝায়, বোঝায় নারী-পুরুষকে নিয়ে বৈষম্যহীণ সমাজের, রাষ্ট্রের কথা। সংস্কৃতি ও সমাজ নারী ও পুরুষ সম্পর্কে যে সব দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবোধ গড়ে তোলে, ভিন্ন ভিন্ন আচরণ করতে শেখায়, কিংবা ভুমিকা পালন করতে বলে, সেসবই হচ্ছে জেন্ডার।

সৌদি নারী...অতঃপর রোকেয়া

যদি আজ থেকে প্রায় একশ বছর পেছনে তাকাই বেগম রোকেয়ার (রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন১৮৮০-১৯৩২) জীবনে যিনি সৌদি নারীদের মতো প্রাতিষ্ঠানিক উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পাননি কিন্তু তার দেখানো আলোতে এখনও আমরা পথ দেখি।

নারী....আর কতোকাল রবে শুধুই অর্কিড হয়ে!

প্রচলিত ধ্যান-ধারণা হচ্ছে নারী হবে নরম-কোমল, সর্বংসহা (মাতা), মনোরঞ্জনকারিনী (বধূ)। তারা থাকবে অন্দরমহলে। আর তাই প্রবাদে শোনা যায়... 'ঝি নষ্ট হয় হাঁটে, বউ নষ্ট হয় ঘাটে'।....অর্থাৎ ঝি কে হাঁটে-বাজারে-মার্কেটে পাঠানো যাবে না আর বউকে পুকুর ঘাটে পাঠানো যাবে না (যদিও গ্রাম এলাকায় পরিবারের পানির যোগান দাতা সাধারণত নারীই)।

রবিবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১২

পনি'র ভুবনে স্বাগতম


পনি'র ভুবনে স্বাগতম
সৃষ্টির আনন্দ পেতেই মূলত হাতে কলমে (কিবোর্ডে, মাউসে) নিজের একটি সাইট করার চেষ্টা করছি। বলা যায় এটি আমার গবেষণাগার।
Virginia Woolf এর মতে A Room of One's Won. যেখানে আমার পলিশড লেখা থেকে শুরু করে ছিন্নপত্রও থাকবে ।
লেখার বিষয় কী হবে, কী থাকবে তা সময়ই নির্ধারণ করে দিবে । তবে আমার মূল আগ্রহের বিষয় জেন্ডার এবং কাউন্সেলিং সাইকোলজিতো অবশ্যই থাকবে । আপাতত কিছু বিষয়ে কিছু লেখা এখানে রেখেছি। পরবর্তীতে এই পোস্টটাকেই আপডেট করার ইচ্ছে আছে ।

গঠনমূলক যে কেন পরামর্শ সাদরে গৃহিত হবে ।

বুধবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১২

রসনা বিলাস-ফুডোগ্রাফি

শুধুমাত্র উদর পূর্তির জন্যেই আমরা খাদ্য ভক্ষণ করি না।খাদ্য গ্রহণের পাশাপাশি থাকে খাদ্য পরিবেশণে নান্দনিকতা, শৈল্পিক উপস্থাপন। থাকে খাবারের ভিন্নমুখি পছন্দ।এবারে মূলত দেশীয় ভর্তার প্রায় হারানো ঐতিহ্যকে তুলে ধরার পাশপাশি খাবারের নান্দনিক উপস্থাপন এবং সর্বোপরি ফটোগ্রাফীর চর্চা।
মেহমানদারির শুরুতেই শরবত দেওয়ার প্রচলন থাকলেও এখানে কোমল পানীয় সেভেন আপ পরিবেশণ করা হয়েছে।
সল্ট বিস্কিটের মাঝে মেয়োনিজ দিয়ে উপরে বাসায় বানানো coleslaw...আর উপরে সবুজগুলো জলপাই না পেয়ে মটরশুটি দেওয়া।
স্যুপ খাওয়ার জন্যে জাপানী বাটির পরিবেশণ করা হয়েছে।
 মেহমানের সংখ্যা বেশি থাকায় আরেক সেট জাপানী বাটি সরবরাহ করা হয়েছে।
স্যুপ-এর স্বাদ বাড়াতে পার্শ্ব উপকরণ।
এপেটাইজার হিসেবে স্যুপ বেশ কাজের।
চিকেন ফ্রাই এবং সাথে আমড়াও আছে ফ্রাই করা।
দেশীয় খাবার পরিবেশণে মেইন ডিশের শুরুতে ভাত পরিবেশণ করা
বেগুণ ভর্তা
চপ বা টিকিয়ার মতো দেখা গেলেও এটি মুলত বানানো হয়েছে কাঁচা কলা দিয়ে। উপরে ঢেড়শ হালকা ভেজে তার উপর টম্যাটো সাজিয়ে পরিবেশণ করা হয়েছে।
কালো জিরার ভর্তা
শুকনা মরিচ এবং পেয়াজ কুচির ভর্তা
শুটকি ভর্তা
জাম আলু খ্যাত লাল আলুর ভর্তা
মিষ্টি কুমরার ভাজা
পটলের দোলমা
ঢেরশ, চিংড়ি আলু সহযোগে তরকারী
কাচা কলা ভর্তা
রুই মাছের দোপেয়াজা
মশুর ডালের ভর্তা
আলু সহযোগে ছোট মাছের তরকারী
কৈ মাছের কারী
আমড়া সহযোগে ডিমের কারী
মুরগীর (ফার্মের) কারী
ডেজার্ট হিসেবে পরিবেশণ করা হয়েছে পুডিং এবং এর উপর আপেল স্লাইস করে কেটে তার সাথে একটা আঙ্গুর
শেমাইয়ের বরফী
কেক এর উপর আপেল স্লাইস এবং আঙ্গুর
আনারসের আচার
মেরী বিস্কুট, ক্রীম, টক দই, ফল কুচি সহযোগে তৈরী যা আধঘন্টা পর কেকের আকৃতি নেয়।
পাকা জাম্বুরার উপর পেয়ারা, আপেল , মাল্টা, আঙ্গুর দিয়ে সাজানো হয়েছে।

বুধবার, ১৭ অক্টোবর, ২০১২

"কৌটিলিয়ম অর্থশাস্ত্রম" থেকে পাঠ- ভুমিকা কথন


বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় আতেঁল বন্ধুরা যখন কৌটিল্যের কথা বলে মুখে ফেনা তুলে ফেলতো তখন ওদের মুখ থেকে শুনে শুনেই কৌটিল্যের প্রতি আসক্তি। প্রায় ৯০০ পৃষ্ঠা করে কোলকাতা থেকে প্রকাশিত দুই খন্ডের প্রতিটির দাম ২২৫ টাকা করে। মানে বাংলাদেশী টাকায় কি পরিমাণ আসে তা ভেবেই মুখ কালো করে বইয়ের দোকান থেকে শুধু দেখেই যেতাম।আমার শুভাকাঙ্খী কাছের বন্ধুরা আমার এহেন দূর্বলতার কথা জানতো এবং তারা শেষ পর্যন্ত আমার বিশেষ (সেটি জন্মদিন , নাকি কোন পরীক্ষার ফলাফলে খুশি হয়ে অভিনন্দন জানাতে এই মুহুর্তে মনে নেই)কোন দিনে উপহার দেয়। এমন বই পেয়ে তো আমি মহা খুশি। কিন্তু বেশি খুশি হওয়ার কারণে বই খালি আগলে রাখি, পড়া আর হয় না! একবার শুরু করলাম পড়া , কিন্তু পড়বো কি! এতো কঠিন যে মাথা আউলিয়ে যায়। খালি বইটা হাতে নিয়ে ঘুরি, আর হাতের নাগালে পিসির সামনে রাখি...পড়বো পড়বো বলে কতো যে জপেছি...এবার ঠিক করলাম একটু একটু করে পড়ে পড়ে ব্লগে দিই। সেখানেও আরেক মুশকিল! আতেঁল মার্কা লেখা ব্লগাররা পড়ে না। কারণ তারা নিজেরাই অনেক কিছু জানে, কাজেই আমার এই লেখা তাদের জানার চাহিদা নতুন করে মেটাবে না।
শেষ পর্যন্ত ঠিক করলাম পড়তে আমাকে হবেই...কিভাবে ?! কিভাবে?! কিভাবে?!
নিজের ব্লগ সাইটে প্রকাশ করে। এখানে হিট, কমেন্ট, ভালো লাগা ক্লিকানোর কোন ভেজাল নেই। একেবারে নিজের জন্যে লেখা। অনেকটা প্রসব বেদনায় ছটফট করতে থাকা মুরগীর মতো। ডিম পারার আগ পর্যন্ত তার অস্থিরতা কমে না।
হাহাহাহাহাহা...এই বই শেষ না করা পর্যন্ত আমারও অস্থিরতা কমবে না। যতো কঠিনই হোক। প্রয়োজনে বেঁচে থাকলে যতো বছর লাগে আমি পড়তেই থাকবো।

কৌটিল্য মহাশয়ের একটি ছবি দেবার বাসনায় গুগলে সার্চ দিয়ে দেখি সামহোয়্যারইন ব্লগে আমারই এক জবাবে কৌটিল্য সাহেবের কথা লেখা! কি আর করা ইংরেজিতে বানান আন্দাজ করে ঢিল ছুঁড়লাম ! সাবাস! গুড়ল মামু তো বেশ কাজের!

"চানক্য" যিনি মূলত "কৌটিল্য" পরিচয়ে ইতিহাস খ্যাত এবং বিষ্ঞু গুপ্ত-ও যার আরেক নাম।প্রাচীন ভারতীয় রাষ্ট্রকৌশল নিয়ে তার লেখাই  "কৌটিলিয়ম অর্থশাস্ত্রম" নামে পরিচিত।    

বৃহস্পতিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১২

♣ তথ্যসূত্র লেখার সহজ পাঠ ♣



আমরা সাধারণ কোন গবেষণা বা প্রতিবেদন তৈরী করার পর এতে ব্যবহৃত তথ্যের উৎস দিতে কার্পণ্য করি বা সঠিক ভাবে দিতে অনেকসময়ই অপারগ থাকি কিভাবে তথ্যসূত্র দিতে হয় তা না জানা থাকার কারণে। তথ্যসূত্র সঠিকভাবে প্রদাণ করার কারণেই বরং উল্লেখিত লেখাটি, গবেষণা বা প্রতিবেদনটি আরো বেশি নির্ভরযোগ্য হয়ে উঠে। নিচে তথ্যসূত্র লিখার কিছু সহজ নিয়ম তুলে ধরা হলো। আশাকরি পাঠকদের কাজে লাগতে পারে তাদের যে কোন তথ্যসমৃদ্ধ লেখাকে নির্ভরযোগ্যকরার ক্ষেত্রে।

তথ্যসূত্র বা তথ্যপঞ্জী হল প্রকাশিত কাজের সংগৃহীত উৎসের তালিকা। কিন্তু থিসিস বা প্রবন্ধে প্রকাশিত ও অপ্রকাশিত উভয় প্রকার কাজকেই তথ্যপঞ্জীতে সন্নিবেশিত করা হয়। তথ্যপঞ্জী বিভিন্ন প্রকার হতে পারে:

১।. থিসিসের মূল গ্রন্থাংশে, প্রতিবেদনে বা পাদটীকায় যেসব উৎসের উল্লেখ রয়েছে তাদের তালিকা।

২। থিসিসের সাথে সম্পর্কযুক্ত যেসব পুস্তক, পুস্তিকা, সাময়িকী, প্রতিবেদন, প্রবন্ধ ইত্যাদি পাঠ ও পর্যালোচনা করা হয়েছে, সেসব পুরোপুরি প্রাসঙ্গিক না হলেও তাদের তালিকা।

৩।. আরেক ধরনের তথ্যপঞ্জী আছে, এদের বলা হয় টীকাযুক্ত তথ্যপঞ্জী। তথ্যের উৎসের বিষয় ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কিত টীকা সহ তাদের তালিকা থাকে।

তথ্যপঞ্জী লেখার নিয়ম

ক। পাদটীকা না দিয়ে প্রতিবেদনের শরীরেই উৎস নির্দেশ করা যেতে পারে। যেমন: [দ্র: হাবিব (২০০৬, ৭১)] এভাবে তৃতীয় বন্ধনীর মধ্যে আটকাতে হবে। এতে বোঝায় মোঃ আহসান হাবিব ২০০৬-এ প্রকাশিত বইয়ের ৭১ পৃষ্ঠায় মিলবে তথ্য বা বিশ্লেষণটি; এবং ওই বই সম্পর্কে সব তথ্য পাওয়া যাবে রচনাপঞ্জীতে।

খ। তথ্যপঞ্জীতে গ্রন্থনাম উল্লেখ করা যেতে পারে বাঁকা ( Italic) যেমনঃ Lewin, K. (1946). Field Theory in Social Science, Harper & Row, New York, NY

গ। প্রবন্ধ, গল্প, কবিতার নাম ছাপা উল্লেখ করা একক উদ্বৃতি চিহ্নের ভেতরে। যেমনঃ Lewin, K.(1946), 'Action Research and minority problems', Journal of Social Issues, Vol. 2 No. 4

ঘ। গ্রন্থকারের নাম, প্রথমে শেষ নাম বা পারিবারিক নাম তারপর কমা দিয়ে প্রথম বা প্রদত্ত নাম তারপর কমা। যেমনঃ Bessey, M., বাঙালী গ্রন্থকারের বেলায় পুরোনাম লিখে কমা। যেমনঃ ডা: গোলাম মোর্শেদ

ঙ। কাজের শিরোনাম লিখে তার নিচে দাগ দেয়া , তারপর কমা। যেমনঃ উচ্চশিক্ষিত দম্পতিদের মধ্যে সিদ্ধান্তগ্রহণের প্রাধান্য যাচাই,

চ। প্রকাশের স্থান এরপর কোলন। যেমনঃ ঢাকাঃ

ছ। প্রকাশনা সংস্থার নাম, এরপর কমা। যেমনঃ জাতীয় গ্রন্থ প্রকাশণ,

জ। প্রকাশের সন এরপর দাড়িঁ বা কমা, প্রয়োজনেমোট পৃষ্ঠা সংখ্যা, তারপর দাঁড়ি। যেমনঃ ২০০৯, ৬৪।


রেফারেন্সিং-এর বেসিক স্টাইল আছে কয়েকটা। সবচেয়ে বেশি ইউজ হয় APA, MLA, Chicago, AMA, Harvard referencing... এগুলোর মধ্যেও মডিফিকেশন হয়, পয়লা দুইটা করে আমেরিকার একটা ভার্সিটি, নামটা এখন খেয়াল নেই  এপিএ এখন ছয় নাম্বার ভার্সন চলছে।

সাধারণত, কমন ইউজের ফিল্ড (মানে বেশি ইউজ হয়)

APA: psychology, education, and other social sciences.
MLA: literature, arts, and humanities.
AMA: medicine, health, and biological sciences.
Chicago: used with all subjects in the "real world" by books, magazines, newspapers, and other non-scholarly publications.

কোনটা ইউজ করা হবে সেটা ডিপেন্ড করে জার্নাল বা ভার্সিটির রুলসের উপর। জার্নালগুলো স্পেসিফাই করে দেয় কোনটা ইউজ করতে হবে। আবার ডেরাইভড স্টাইলও আছে অনেক, ওগুলাও করতে হয় কখনো কখনো।

কয়েকটা এক্সাম্পল দেওয়া হলো উপরের চারটা স্টাইলের শুধু জার্নাল আর্টিকেলের জন্য (বই/কনফারেন্স প্রসিডিংস/রিপোর্ট.....সবকয়টার আলাদা সিসটেম, তাই উল্লেখ করা হলো না)

APA
Hodges, F. M. (2003). The promised planet: Alliances and struggles of the gerontocracy in American television science fiction of the 1960s. The Aging Male, 6, 175-182.

MLA:
Hodges, F. M. "The Promised Planet: Alliances and Struggles of the
Gerontocracy in American Television Science Fiction of the 1960s." Aging Male 6 (2003): 175-82.

Chicago:
Hodges, F. M. 2003. The promised planet: Alliances and struggles of the gerontocracy in American television science fiction of the 1960s. The Aging Male 6:175-182.

AMA:
Hodges, F. M. . The promised planet: Alliances and struggles of the gerontocracy in American television science fiction of the 1960s. The Aging Male. 2003; 6:175-182.


বাংলাদেশের ভার্সিটিগুলো রেফারেন্সিং-এর জন্য সাধারণত কোন কম্পোলসারি রুলস বেঁধে দেয় না, ইচ্ছা মত করা যেতে পারে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন একটাই করা হয়। এমনিতে খালি চোখে আমার কাছে মনে হয়েছে জার্নালগুলোতে এপিএ বেশি ইউজ হয়, যদিও হার্ভার্ড আর শিকাগোর ইউজ বাড়ছে ইদানিং।

বেশ কিছু সাইট আছে, যেখানে ফ্রিতে রেফারেন্সিং-এর কাজ করে দেয় পেপারের লিংক দিলে (ধরা যাক ইজি বিব দেখা যেতে পারে এমএস ওয়ার্ডের অপশনটাও বেশ, ল্যাটেক্স পারিনা আমি ঐটা থাকলে তো কথাই নাই:) তবে এন্ডনোটের উপর কিছু নাই ।



রেফারেন্সিং এর বিষয় এলে শুধু রেফারেন্স সেকশানে কিভাবে লিখতে হবে তা উল্লেখ না করে "ইন টেক্সট" সাইটেশান সম্পর্কেও লেখা উচিত।
আবার রেফারেন্সে কতজন অথরের নাম আসবে সেই বিষয়টাও গুরুত্বপূর্ণ।

ইনটেক্সট সাইটেশনঃ

ধরা যাক, ম্যানুস্ক্রিপ্টের ভেতরে অ্যজমা সম্পর্কে একটা তথ্য দেওয়া হলো।
Asthma affects over 5-10% of population in industrialized countries.

এই ইনফরমেশনটার তথ্যসূত্র টেক্সটের ভেতর বিভিন্নভাবে উল্লেখ করা যেতে পারে। কিভাবে উল্লেখ করা হবে তা নির্ভর করবে জার্নাল কোন ফরমেটে চাইছে।

সাধারণত জার্নালগুলো হয় এলফাবেটিকাল অর্ডারে রেফারেন্সিং করে নয়ত নাম্বারে (সহজ বাংলায়)।
উপরে যে তথ্যটা দেয়া হয়েছে সেটির পূর্ন তথ্যসূত্র হচ্ছে-
Chang RK, Guo X, Burnside B, Couch R. Fast-dissolving tablets. Pharm Technol 2000;24:52-8.

অর্থাৎ চারজন অথর, ফাস্ট ডিসলভিং ট্যাবলেট শিরোণামে একটি আর্টিকেল পাবলিশ করেছেন ২০০০ সালে ফার্মাসিউটিক্যাল টেকনোলজি নামক জার্নালের ভলিউম ২৪এ। আর্টিকেলটি পাওয়া যাবে ৫২ নাম্বার পৃষ্ঠায়।
এখন যদি টেক্সটের ভিতর নাম্বারিং সিস্টেমে সাইট করতে চাওয়া হয় তবে নিচের মত হবে-

Asthma affects over 5-10% of population in industrialized countries (1).

এখন রেফারেন্স সেকশানে কেউ ১ খুঁজলেই তথ্যসূত্র পেয়ে যাবে। উল্লেখ্য জার্নালভেদে এই "(1)" লেখাটাও ভিন্ন হতে পারে, হতে পারে [1]। 1 আবার হয়ত অনেক জার্নালে সুপারস্ক্রিপ্ট করে দিতে হতে পারে।

আবার যদি এমন হয় আপনি একই তথ্য দু'টি বা তার অধিক সূত্র থেকে নিয়েছেন তবে লিখতে হবে এভাবে (1,2)। [1,2] হতে পারে, (1),(2) বা [1],[2] বা এগুলোর সুপারস্ক্রিপ্ট হতে পারে।

এলফাবেটিকাল অর্ডারে চাইলে প্রথম অথরের নামের শেষ অংশ লিখে et al., সাল লিখতে হবে। অর্থাৎ রেফারেন্সটা হবে এমন-

Asthma affects over 5-10% of population in industrialized countries (Chang et al., 2000).

এর মানে হচ্ছে জনাব চ্যাং এবং তার সহকর্মিরা গবেষণা প্রবন্ধটি প্রকাশ করেছেন। এই রেফারেন্সে লক্ষ করার মত কিছু বিষয় আছে। ধরা যাক উপরে যে আর্টিকেলের কথা বললাম ওটায় অথর সংখ্যা চার। যদি ৪ না হয়ে ১ জন অথর হতেন অর্থাৎ ফুল রেফারেন্স যদি এমন হত-

Chang RK. Fast-dissolving tablets. Pharm Technol 2000;24:52-8.

তাহলে ইনটেক্সট এলফাবেটিকাল সাইটেশন হত (Chang, 2000)

যদি দুইজন অথর থাকতেন, যেমন ধরা যাক-

Chang RK, Guo X. Fast-dissolving tablets. Pharm Technol 2000;24:52-8.

তাহলে হত (Chang and Guo, 2000)।

যখনই অথর দুইএর বেশি তখনই (et al., ইয়ার)

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো একাডেমিক জার্নাল পাবলিকেশনের ক্ষেত্রে প্রতিটি জার্নাল কিভাবে রেফারেন্সিং করতে হবে তা বিস্তারিত জানিয়ে দেয়। এবং ঐ নির্দিষ্ট ফরমেটই ব্যবহার করতে হবে।

এবার আসা যাক পারসোনাল কমিউনিকেশনকে কিভাবে রেফার করা যায়।

পারসোনাল কমিউনিকেশনঃ

পারসোনাল কমিউনিকেশন বলতে বোঝাবে ইমেইল, চিঠি ইত্যাদির মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহকে। আবার এমন হতে পারে কোন একটা বিষয়ে ঐ বিষয়ের কোন এক্সপার্টের ইন্টারভিউ নেওয়া হলো। ওটাও পারসোনাল কমিউনিকেশন। সাধারণত এ ধরণের রেফারেন্স হাইলি অথেনটিকেটেড না হলে গ্রহনযোগ্য হয়না।

যতোদূর জানা যায় এসব ক্ষেত্রে রেফারেন্স সেকশানে আলাদা করে রেফারেন্স লিখতে হয়না । শুধু টেক্সটের অর্থাৎ ম্যানুস্ক্রিপ্টের ভেতর সাইট করলেই হয়।

যেমন ধরা যাক  Mohamaad Abu Ali নামক একজনার মেইল থেকে কোন তথ্য দিতে চাওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে মুল টেক্সটে উল্লেখ করতে হবে (Ali MA, personal communication, October 9, 2012)।
আর যদি কোন জার্নাল বলে দেয় পারসোনাল কমিউনিকেশন রেফারেন্স সেকশানে উল্লেখ করতে হবে তবে ইন টেক্সট হবে (Ali, 2012)।

রেফারেন্সে গিয়ে পারসোনাল কমিউনিকেশন ভায়া ইমেইল/লেটার/ইন্টারভিউ ডেটেড কত তা উল্লেখ করতে হবে।



লেখাটিকে তথ্য সমৃদ্ধ করতে বিশেষ কৃতজ্ঞতা রইলো সামহোয়্যারইন ব্লগের ব্লগার কালীদাস এবং ব্লগার জীবনানন্দের ছায়া। 

শনিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১২

কিভাবে করবেন বইয়ের রিভিউ



বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় শেষ বেলায় একটা কোর্সের এসাইনমেন্টের অপশন ছিল বই রিভিউ। যদিও ম্যাডাম নির্দিষ্ট একটা বইয়ের নাম উল্লেখ করে দিয়েছিলেন। তখন কিছুই জানতাম বই রিভিউ সম্পর্কে। এখনও যে জানি তা কিন্তু নয়। ভাবলাম তখন বইটির রিভিউ হিসেবে যা লিখেছিলাম তাতে একটা বই কিভাবে রিভিউ করা যায় তা নিয়ে সহব্লগারদের সাথে শেয়ার করি। কারণ এখানে অনেক অভিজ্ঞজন থাকতে পারে এ বিষয়ে। আসলে ভালো করে জানার ইচ্ছে থেকেই এই লেখা। আশা করবো যারা এ বিষয়ে জানেন তাদের গুরুত্বপূর্ণ মতামত দিয়ে আমার জানার আগ্রহকে সমৃদ্ধ করবেন।

ভুমিকাঃ
একটি বইয়ের রিভিউ দেখেই একটি বই সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা পাওয়া সম্ভব। যেমন একটি সিনেমার স্যাটায়ার বা রিভিউ দেখে সেই সিনেমা সম্পর্কে আমরা আগে ভাগেই অবগত হতে পারি। বই রিভিউয়ের ক্ষেত্রে বইয়ের শিরোনাম, লেখক, কোথা থেকে প্রকাশিত হলো, প্রকাশক, প্রকাশনার তারিখ, সংস্করণ, পৃষ্ঠা, বিশেষ বৈশিষ্ট্য, মূল্য, ISBN নম্বর এসব উল্লেখ করা প্রয়োজন।

বইয়ের আঙ্গিক বৈশিষ্ট্যের পর্যালোচনাঃ
প্রচ্ছদঃ 
একটি বই যখন হাতে নেয়া হয়, তখন সামগ্রিকভাবে এর প্রচ্ছদটিই প্রথমে চোখে পড়ে। একটি আকর্ষণীয় প্রচ্ছদ বইটিকে পাঠকের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলে।
আর প্রচ্ছদ থেকেও কখনো কখনো বইয়ের ভেতরের আলোচনা সম্বন্ধে ধারণা লাভ করা সম্ভব।
বইটি কোন বয়সীদের জন্যে তাও অনেক সময় প্রচ্ছদ দেখে বোঝা সম্ভব। এক্ষেত্রে বইটি শিশুদের উপযোগী হলে সেই বইযের প্রচ্ছদে আকর্ষণীয় চিত্র থাকলে শিশুরা তাতে আগ্রহ পাবে বেশি।
কাজেই রিভিউ করার সময় প্রচ্ছদ নিয়ে একটি আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে যেন সেই বই সম্পর্কে পাঠক শুরুতেই একটা ধারনা পেতে পারে।

বাঁধাইঃ
বাঁধাই সম্পর্কে বলতে গেলে বলতে হয় যে, বাঁধাই দেখেই বইটি সম্পর্কে একটা ধারণা এসে যেতে পারে। এখানে কয়েকটি কারণে বইয়ের বাঁধাইয়ে রকমফের হতে পারে। বইটি সব শ্রেণীর মানুষের হাতে পৌছানোর কথা ভেবে থাকলে বইটির বাঁধাই নিম্ন মানের হতেও পারে। যেমন এনসিটিভির স্কুলের জন্যে প্রণীত পাঠ্য বই গুলো। এগুলো সাধারণতই হয় ন্ম্নিমানের নিউজপ্রিন্ট দ্বারা। এখানে সবার হাতে পৌছানোর পাশাপাশি দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গের অর্থ লিপ্সাও কাজ করে থাকে।
আবার পাঠ্য বইয়ের বাইরে বাজারে আসা বইগুলোতে বিভিন্ন প্রকাশণীর প্রকাশকদের রুচি, বাজেটের উপরও বইয়ের বাঁধাই নির্ভর করে। অনেক সময়ই বাঙলা বাজারের প্রকাশকদের দেখা যায় বারবার বলার পরও খুব উন্নত বাঁধাই দেন না। এখানে দেখা যায় বইয়ের পাশ থেকে কাগজ কেটে সেগুলোকে বাইরে আলাদা করে বিক্রীর প্রবণতা।
কাজেই বাঁধাইও বই রিভিউয়ের একটি অংশ।

বইয়ের আকারঃ
বই রিভিউয়ে বইয়ের আকার নিয়ে কথা বলা যেতে পারে। কারণ এতে বইটিটর প্রতি কতোটা যত্নশীল ছিল প্রকাশক তা বোঝা যায়। বইটি ছাপানোর ক্ষেত্রে খরচ সাশ্রয়ের জন্যে চর্তুদিকে প্রয়োজনীয় মার্জিন রাখা হয়েছে কি না অর্থাৎ বইটিকে কেটে এর স্বাভাবিক আকার নষ্ট করা হয়েছে কি না তা বিবেচ্য বিষয়।

ছাপার অক্ষরের আকৃতিঃ
বয়স অনুযায়ী পাঠকদের উপযোগী কি না বইয়ের অক্ষর তাও রিভিউয়ের আসা উচিত। সাধারণত ইংরেজিতে টাইমস নিউ রোমানে বা বাংলায় সুতন্নীতে ১২ ফন্ট আসা উচিত। প্রয়োজন বোধে তা কম বেশি হতে পারে। আর রিভিউ করার সময় দেখা উচিত তা প্রয়োজনীয় সাইজের হলো কি না। কারণ ছোটদের বইয়ের ফন্ট ১৪/১৬ এমনকি এর চেয়ে বেশিও হতে পারে । আবার সাধারণ বইগুলিতে যদি ফন্ট সাইজ বেশি দেওয়া হয় তবে তা অনেক সময়ই দৃষ্টি কটু হতে পারে।


বিভিন্ন অধ্যায়ের আলোচনা নিয়ে পর্যালোচনাঃ
এই অংশটি বিশেষ ভাবে সেই সব বইয়ের ক্ষেত্রে যেসব বইয়ে একাধিক অধ্যায়ে একে রকমের বিষয় উপস্থাপন করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে পাঠ্য বইয়ের উদাহরণ টানা যেতে পারে। আবার সংকলন বইগুলোর উদাহরণ গুলোও বলা যেতে পারে। এমন বই গুলোতে প্রতিটা অধ্যায় কে ঠিক মতো উপস্থাপন করা হলো কি না বা যথার্থ ধারণা দেওয়া হলো কি না, রিভিউয়ের ক্ষেত্রে তা বিবেচ্য বিষয়।

ভাষা ও বিষয় বস্তু ঃ
একটি বইয়ের এমন উদ্দেশ্য হওয়া উচিত যাতে পাঠক সেই বইটি পাঠের মাধ্যমে নির্ধারিত প্রান্তিক যোগ্যতা অর্জন করতে পারে। বইটির বিষয়বস্তু পাঠকের শ্রেণী অনুযায়ী প্রাঞ্জল ভাষায় এবং সহজ বোধগম্য করে এবং বিষয়বস্তু বিশ্লেষণে লেখকের  মনোভাব তুলে ধরতেও রিভিউয়ে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।

বানানঃ
একটি বই পড়তে গেলে তাতে বানানের ত্রুটি থাকলে তা পাঠের আনন্দ অনেকটাই নষ্ট করে দেয়। আর বইয়ে বানান রীতি অনুসরণ করার ক্ষেত্রে বিশেষ করে বাংলা বইয়ের ক্ষেত্রে পাঠ্য বইয়ে এনসিটিবি, বাংলা একোডেমি এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে বাংলা একাডেমির বানান রীতি অনুসরণ করাই উত্তম। এতে সাধারণ পাঠকের গ্রহণযোগ্যতা বেশি থাকে। কাজেই রিভিউয়ের ক্ষেত্রে বানানের দিকে বিশেষ নজর রাখা জরুরী।

সংযোজিত ছবি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)ঃ
বইয়ে সংযোজিত ছবি পাঠকদের কাছে পরিস্কার ভাবে উপস্থাপন করাটা জরুরী । না হলে তা পাঠকের কাছে বইটির আকর্ষণ হারায়। অনেক সময়ই দেখা যায় বইয়ে সংযোজিত ছবি অস্পষ্ট যার মর্মোদ্ধার করাই সম্ভব হয়ে উঠে না ফলে তা পাঠকের কাছে বিরক্তির কারণ হয়ে পরে।

পরিশেষ কয়েকটি কথা বলবো,

■ একটি বই বাঁধাই ও ছাপানোর ক্ষেত্রে দক্ষ শ্রমিক নিয়োগ করা উচিত
■ বইয়ে সংযোজিত ছবিগুলো যেন স্পষ্ট হয় সেদিকে যথাযথ নজরদারী করা উচিত
■ বইটির নির্দিষ্ট আকার ও আকৃতি যেন সঠিক থাকে সেদিকে প্রকাশকের এবং সংশ্লিস্ট ব্যাক্তিদের দৃষ্টি যেন থাকে।
■ ছাপার অক্ষরগুলো সর্বক্ষেত্রে যেন স্পষ্ট থাকে।

এবং সর্বোপরি একটি একটি মান সম্মত রিভিউয়ের জন্যে একজন মনোযোগী পাঠক হতে হবে।


যারা আরো জানতে চান তাদের জন্যে ...
www.writing-world.com/freelance/asenjo.shtml

■এবং ইউটিউবে দেখতে পারেন
http://www.youtube.com/watch?v=ZNmk6IM4Nzw



≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈
একটি বোনাসঃ এটা কোন বইয়ের রিভিউ নয়। একটি বই থেকে আমার ভালো লাগা কিছু কোটেশন :P

বইঃ সোনালী দুঃখ
লেখকঃ সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়


ভালবাসা হচ্ছে আগুনের মতো, যাতে পাপ স্পর্শ করে না

জীবনে ভালবাসাই হচ্ছে একমাত্র দুঃখ, যেখানে মানুষ ইচ্ছা করে ঝাঁপিয়ে পড়ে

ভালবাসা ঘৃণাকে জয় করতে পারে

প্রাণের বিনিময়ে তো প্রাণ পাওয়া যায় না

দিনের আলোয় যখন সারা দুনিয়া ঝকমক করে, তখনো মানুষের ছায়া পরে। জীবন কখনো সরল পথে চলতে জানে না। যতই আলো থাক তার মধ্যেও ছায়া থাকবে

ভালবাসার এমনই টান যে কাপুরুষকেও দুঃসাহসী হতে লোভ দেখায়

আমি তোমার হাতেই মরতে চাই। পরের জন্মে আবার আসবো তোমার কাছে, তোমাকে জয় করতে...

আমি জন্ম-জন্মান্তরে ঘুরে আসবো তোমাকে জয় করতে। আমি তোমাকেই চাই...

পদমর্যাদার প্রতি মানুষের এমন ভক্তি!

ভালোবাসা এই রকমই, সে আর সব কিছুকে আড়াল করে দেয়। 

ওদের মৃত্যু ভয় নেই, ওদের শুধু আর দেখা না হবার ভয়!

ইচ্ছা জিনিসটা এমন তা যে কি অবলম্বন করে কখন বেড়ে ওঠে কেউ জানেনা।
[কোটেশন গুলো আগে আরেক জায়গায় প্রকাশ করেছিলাম।]

সবাই ভালো থাকুন।

বৃহস্পতিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১২

প্রতীক্ষা!


অনুভুতিগুলো কেমন যেন মূল্যহীন হয়ে গেছে !
আজকাল আর বিশেষ কেউ বিশেষভাবে অনুভূতির মূল্য দেয় না!
কষ্টগুলো শুধু ধানমন্ডি, এলিফ্যান্ট রোড, নিউমার্কেট পেরিয়ে মৈত্রীর সবুজ ঘাসে আছড়িয়ে পড়ে।
তারপর থেমে যায় ২১৭ তে এসে।
থেমে থেমে জমাট নীলের নীল কন্ঠি তৈরী করে-
শোনা হয় না বেতারের অনুষ্ঠানগুলো-
ভাবনাগুলো দমকা বাতাসে দাদুর চায়ের দোকানের কাছে হাতড়িয়ে বেড়ায় একটা অদৃশ্য মানবের শরীরের গন্ধ-হয়তো দাড়িয়ে আছে দোতলার পানে চেয়ে-
হয়তো চড় জেগে উঠা মাটি থেকে ঘাস গুলোকে দু'আঙ্গুলে তৈরী যন্ত্রটা দিয়ে খুঁটছে-
হঠাৎ একটা গলা চিড়ে রা' বেড়িয়ে আসে!
উৎকর্ণ কান সেদিকে যায়।
নাহ্, এখানে বিশেষ কেউ নেই।
অন্য কারো অন্য কেউ -
আস্তে আস্তে রাত বাড়ে।
দমকা বাতাস জানান দিয়ে যায়,
নিঃসঙ্গ প্রহরগুলোতে সেই সঙ্গী হবে।
অশরীরি আত্না চাপা কষ্ট নিয়ে ঘুড়ে বেড়ায় মৈত্রী, নীলক্ষেত, কাটাঁবন, এলিফ্যান্ট রোড আর-আর ক্যাম্পাসে ।
যদি সেই গন্ধটা- সেই অদৃশ্য মানবের শরীরী গন্ধটা পায়!
চারদিকে সঙ্গী দামাল বাতাস সঙ্গী হয়ে বয়ে নিয়ে যায় শুধু হাহাকার!
কেউ আসে না!  কেউ আসে না! কেউ আসে না!!

বুধবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১২

স্যার, এই পেশায় আপনাকে মানায় না !


বেসিনে মুখে পানির ঝাপটা দিতে দিতে সিক্তার মন  উড়ে গেল সেই সুদুর অষ্ট্রেলিয়ায়  মোনাশ  ইউনিভার্সিটিতে! ...স্যার, কতো দিন আপনাকে দেখি না! মানুষ এভাবে হারিয়ে যায়?! আজব!... হঠাৎ করেই মিনিটখানেকের জন্যে বিষন্নতা ঘিরে ধরলো সিক্তাকে। ওর মধ্যে একধরনের পাগলামী আছে। জীবনে শিক্ষকতা পেশায় যাবে এটা ওর কল্পনাতেও ছিল না। সিক্তার কাছে শিক্ষকতা পেশা হলো চরম স্লো একটা পেশা। মানুষ এ পেশায় এলে অথর্ব হয়ে যায়। মানুষের ক্রিয়েটিভিটি নষ্ট হয়ে যায়। এসব ধারণাই ও পোষণ করতো বরাবর।
ছোট বেলায় কাজিনকে দেখেছে ইডেন কলেজের ইতিহাসের প্রফেসর ছিল। নার্গিস আপাকে আত্নীয় স্বজনরা সবাই বেশ দাম দিত। সরকারী কলেজের অধ্যাপক বলেই কি না জানি না। কিন্তু সেই তুলনায় নিজাম ভাইজান যে ঢাকা ইউনিভার্সিটি থেকে ম্যানেজমেন্টে পড়েছে তাকে কেউ পাত্তাই দিতো না! অবশ্য ডাক্তারী পড়া কাজিন হেলাল ভাইকেও কেও গনায় ধরতো না।তবে নার্গিস আপা মেয়ে বলেই নিশ্চয় আলাদা দাম পেত। ছোট বেলায় সিক্তা খেয়াল করতো যখন নার্গিস আপা বাসায় আসতো বেশ একটা আনন্দ ঝলমল ভাব দেখতো মায়ের চেহারায়। মাযের সাথে নার্গিস আপার হেব্বি খাতির দেখে সিক্তারও খুব ইচ্ছে করতো মায়ের বয়সের কাছাকছি কাজিনের সাথে ভাব জমাতে। সেজন্যেই সে প্রফেসর নার্গিসকে আপার সাথে "তুমি"টা বেশ জোর দিয়ে ডাকতো। কিন্তু নার্গিস আপার পেশাগত কোন বিশেষত্ব সিক্তার চোখে পড়েনি! শিক্ষকতা পেশা যে নিজের জীবনে গ্রহণ করা যায় তা নার্গিস আপার কোন আচরণে অনুপ্রাণিত হওয়ার মতো ছিল না। এমনকি হুমায়ুন ভাই যখন বাসায় এসে তার চাকুরীর প্রথম দিনের গল্প বেশ মজা করে বলতো যে ... জানিস আমার স্টুডেন্টরাতো আমার চেয়েও বয়সে বড়!... এসব শুনে সিক্তা আরো অবাক হয়ে যেত। এটা কেমন করে সম্ভব! সেই বয়সে বুঝতো না যে অনার্স শেষ করেই সিভিল সার্ভিসে ঢোকা সম্ভব। তাতে স্টুডেন্টদের বয়সের কাছেই টিচারের বয়স হতে পারে।
পছন্দের আর কোন সাবজেক্ট না থাকায় রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ভর্তি হয়ে সিক্তা এমনিতেই বিরক্ত ছিল। তাদের মধ্যে আবার  সদ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা হারুন স্যার বা জাহাঙ্গীর নগর থেকে পাশ করা রিপন স্যারও কোন প্রভাব ফেলতে পারে নি। বরং আশফাক স্যারের আচরণে, পড়ানোর ঢঙয়ে এই পেশার প্রতি আরও বিরক্ত ছিল।

দ্বিতীয়বার মাস্টার্স করতে যেয়ে নাজমুল স্যারের ক্লাসে একদিন স্যার সবার সাথে পিচ্চি এক বালককে পরিচয় করিয়ে দিলেন। সাইদ নিয়াজ , মাত্র দুদিন আগে দেশে ফিরেছেন আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতে সেকেন্ড মাস্টার্স করে। উনি নাকি রিসার্চের কোর্সটা নিবেন! সিক্তাতো পুরোই আতঙ্কিত! ...ক্লাসমেট হাবিবকে কাঁদো কাঁদো স্বরে বললো ..আমার পক্ষে এমন বালকের ক্লাস করা সম্ভব না! সাইদ নিয়াজ এরপর থেকে নাজমুল স্যারের সাথে নিয়মিত ক্লাসে এসে একটা পাশে চুপচাপ বসে ক্লাস দেখতেন। তৃতীয় দিন স্যার ক্লাসে আসার আগেই সিক্তা সাইদ নিয়াজ স্যারের সেই নির্দিষ্ট সিটটি দখল নিয়ে বসলো। সাইদ স্যার চুপচাপ পেছনের একটা সিটে চলে গেলেন। মিচকা হাসি দিয়ে হাবিবের দৃষ্টি আকর্ষন করলো, দেখে হাবিবও শয়তানী হাসি দিয়েই স্যারের পেছনে যাওয়া দেখছে।

রিসার্চের ক্লাসের প্রথম দিনতো সিক্তা সাইদ স্যারের দিকে তাকাতেই পারছে না! মনে পড়ে যাচ্ছে কাজিন হুমায়ুন ভাইয়ের কথা! বয়সে বড় স্টুডেন্ট :( সেই কথা মনে হতেই ঢোক গিললো! সাইদ স্যারও নিশ্চয়ই বাসায় যেয়ে হাসাহাসি করবে! অদ্ভুত! প্রথম দিনই স্যার খুব প্রফেশনাল আচরণ না করলেও অনেক আন্তরিক ছিলেন। দুই তিনটা ক্লাস পার হতেই সিক্তা মন খারাপ করে খেয়াল করলো স্যারকে ওর মনে ধরে যাচ্ছে! ঠিক স্যার হিসেবে নয়! কেমন যেন মায়া লাগছে! এমন স্পীড আছে যার চরিত্রে সে কেন এমন ভেন্দামার্কা একটা পেশায় আসবে!? কয়েকদিন পর স্যারের রুমে গেল রেফারেন্স-এর কথা জিজ্ঞেস করতে। কথায় কথায় সিক্তা মুখ খুলে বলেই ফেললো
:স্যার, এই পেশায় আপনাকে মানায় না! :(
সাইদ স্যার খুব সহজ একটা হাসি দিলো
...কেন? আমাকে কি টিচার মনে হয় না?
: ঠিক তা না স্যার,
ঠোটের কোনে হাসি ঝুলিয়েই বললো
...তবে?

:আপনাকে দেখে যতোটা স্পীডি মনে হয়, এই পেশার সাথে তা যায় না। টিচিং প্রফেশন এতো স্লো! একেবারে কচ্ছপের মতো! 
সিক্তার এই কথা শুনে স্যার সশব্দে হেসে উঠলেন।

এভাবেই সাইদ স্যারের কাছে সিক্তার যাতায়াত বাড়তে থাকে। যখনই স্যারের রুমে যায় সবসময়ই স্যার মগ্ন হয়ে পিসিতে কাজ করছেন! আবার অদ্ভুত অদ্ভুত চায়নিজ গানও শুনেন! পেনড্রাইভের ব্যবহার প্রথমে সাইদ স্যারের কল্যানেই শিখে। অথচ নিজের ঘরেই আরিফ আরো আগে থেকেই অফিসে পেনড্রাইভ ব্যবহার করলেও সিক্তার কোন ধারণা ছিল না। পড়ে ছিল মান্ধাতার আমলের ফ্লপি ডিস্কে। ইউএসবি পোর্ট বলে যে কিছু আছে তা স্যারের কাছ থেকে শুনে বাসায় এসে আরিফকে জিজ্ঞেস করলে আরিফ দেখিয়ে দেয়। অথচ আরিফ উদ্যোগি হয়ে কখনো কিছু সিক্তাকে শিখায় না। আরিফের দর্শন হচ্ছে সিক্তা নিজের আগ্রহে সব শিখবে তবেই তাতে গুরুত্ব থাকবে।
ঈদ, নতুন বছর এসবে সিক্তা বেশ উৎসব করেই স্যারকে কার্ড গিফ্ট করে। এর মধ্যেই মাত্র কয়েকমাস পার হয়েছে। একদিন স্যার হাসতে হাসতে সিক্তাকে একটি ইংরেজিতে লেখা Action Research নামের একটি বই ধরিয়ে দেয়। সিক্তা অবাক হয়ে দেখে বইয়ের কভার পেজে লেখকের নামের জায়গায় সাইদ নিয়াজ নাম লেখা। উচ্ছসিত হয়ে স্যারের অটোগ্রাফ চায় ...কিন্তু সেদিন সাইদ স্যার কোনভাবেই সিক্তাকে অটোগ্রাফ দেয়নি। বেশ রাগ লেগেছিলো স্যারের উপর, কিন্তু করার কিছু নেই। পরে সিক্তা খেয়াল করলো স্যার শুধূ ক্লাসের সবার মাঝে ওকেই সৌজন্য কপি দিয়েছে। এমনকি কলিগ কায়সার আহমেদকেও দেয়নি। কায়সার আহমেদ অবশ্য এ নিয়ে সিক্তাকে খোঁচা দিতে ছাড়ে নি। আর কায়সার আহমেদ স্যারকে দেওয়ার প্রশ্নই উঠে না। উনাকে কখনো পড়তে বা পিসির সামনে সিক্তা দেখেনি। বরং স্টুডেন্টদের সাথে টাঙ্কি মারতেই কায়সার স্যার ব্যস্ত সর্বদা। অনার্সের মেয়েগুলিকে কায়সার স্যারের রুমে ঢোকার আগে নিজেদের কপালের টিপ ঠিক আছে কি না তা আয়না দিয়ে চেক করে নিতেও দেখেছে।
সিক্তার মাঝে সাইদ স্যারকে নিয়ে একটা পাগলামী চলে এসেছে। ডিপার্টমেন্টে এসে স্যারের রুমে আলো না দেখলে যেন ওর নিজের মনের ঘরটাই অন্ধকার হয়ে যায়। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে স্যার একসময় সিক্তাকে সন্দেহ করা শুরু করলো। এক বাচ্চার মা সিক্তা স্যারের প্রেমে পড়েছে একথা হাবিব মনে প্রাণে বিশ্বাস করে সিক্তাকে নিয়মিত বলা শুরু করলো স্যার নির্ঘাত সিক্তাকে নিয়ে পালিয়ে যাবে! কিন্তু সিক্তা স্যারকে এতো বেশিই পছন্দ আর শ্রদ্ধা করে যে এসব কথা শুনে কেমন অসহায় বোধ করে। বিবাহিত হওয়ার কারণেই শরীরের চাহিদা সম্পর্কে সিক্তার খুব টনটনে জ্ঞান থাকলেও কোনদিনই স্যারকে নিয়ে শরীর সম্পর্কিত কোন বাজে চিন্তা মাথায় আসে নি। একথা স্যারকে ও কেমন করে বোঝায় যখন স্যার ফোন করে ওকে চেপে ধরে জেরা করে!
স্যারের বিয়েতে শাহবাগ থেকে ফুল দিয়ে পুরো বাসা সাজিয়ে দিবে, এমন পরিকল্পনার কথা স্যারকে জানিয়ে দিলেও স্যার যে কবে বিয়ে করবে তার নিশ্চয়তা নেই। এদিকে স্যার যে বিয়ে করে ফেলেছে সেকথা লুকিয়ে রাখে। বেশ কয়েকমাস পরে যখন আরিফ -সিক্তার সম্মতিতেই সিক্তা দ্বিতীয় বাচ্চার মা হতে চলেছে তখন  হাবিব খবর দেয় স্যার আরো আগেই বিয়ে করে ফেলেছে। হিসেব করে বের করে স্যার হয় তার ব্যক্তিগত জীবনকে পেশার সাথে আনতে চায়নি অথবা সিক্তাকে ভয় পেয়ে জানায় নি। সিক্তা বরং খুশিই হয় বেশ। আবরার হওয়ার মাস খানেক আগে একদিন হঠাৎ করেই স্যার সিক্তাকে ফোন করে। তার স্ত্রীর বাবু হয়েছে খবরটা দিতে। সাথে এটাও জানায় এ খবরটা সে ইউনিভার্সিটির তেমন কাউকে জানায় নি। সেদিন প্রথম সিক্তা নিজের গুরুত্ব স্যারের কাছে বুঝতে পারে। এর আগেও সিক্তার টেকি ব্যাপারে, নেটের ব্যাপারে অসীম আগ্রহ আর পড়ায় সিরিয়াসনেসের জন্যে স্যার ওকে বেশ পছন্দ করতেন। পাওয়ার পয়েন্টে রিপোর্ট প্রেজেন্ট করার পর স্যার মুগ্ধ হয়ে সেদিনই ডিক্লেয়ার দিয়েছিল সিক্তা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে খুব ভালো করবে। শ্বশুরবাড়ির কষ্টের সময়গুলো এভাবেই স্যারের অনুপ্রেরণায় কেটে যাচ্ছিল। জীবনটা এতো কষ্টের মাঝেও স্যারের অনুপ্রেরণায় কেমন যেন বর্ণময় মনে হয়। শেষের দিকে  সিক্তার শরীর ভারী হয়ে যাওয়ায় আর কন্টিনিউ করতে না পেরে সেই সময়ের দুইটা কোর্স ড্রপ করে। ছয়মাস পর সিক্তা আবার ক্লাস করা শুরু করে।  সিক্তার সাথে মাঝে মাঝে স্যার কেমন নিস্পিৃহ আচরণ করেন। কষ্টের বোঝা চেপে সিক্তা তবুও স্যারের সাথে দেখা করতে যায়।
এর মধ্যে স্যার চলে গেলেন আবার ইউরোপে আরেকটা মাস্টার্স করতে। সিক্তা যেন ডিপার্টমেন্টে এতিম হয়ে গেল।  অনেক যুদ্ধ করে আগস্টে কম্প্রিহেনসিভ শেষ করে এক সপ্তাহের মধ্যেই কলেজে চাকুরী হয়ে গেল। রেজাল্ট কি হবে জানে না তবে আগের সব সেমিস্টারের রেজাল্টে এখনও ফার্স্ট ক্লাস সহ ব্যাচের আর সবার চেয়ে এগিয়ে আছে।শুধ কমপ্রিহেনসিভে ফেল করলেই সব স্বপ্ন ধুলিস্যাত হয়ে যাবে। স্যারের কোন খোঁজ নেই। এর মধ্যে কলেজের টিচার্স রুমে একা বসে ক্লাসের জন্যে অপেক্ষা করছে, হঠাৎ করেই অপরিচিত ফোন,
:হ্যালো, কে বলছেন প্লিজ
...আমি সাইদ নিয়াজ
এই ফোনের কথাটা মনে করে এতোগুলো বছর পরেও সিক্তা কেমন যেন আবেগাক্রান্ত হয়ে যায়।

সিক্তা চিৎকার করে উঠে আনন্দে...
:স্যার, আমারতো একটা কলেজে চাকরী হযে গেছে!
সাইদ স্যার যে এতো খুশি হয়েছে তা স্যারের কন্ঠ শুনেই বোঝা গেল।
সেপ্টেম্বরের ২১ তারিখ স্যারের নাম্বারে এমনিতেই ফোন দিল, স্যার নিজে ফোন রিসিভ করাতে সিক্তা চমকে উঠলো!  স্যার ফিরে এসেছেন, নতুন কোর্সের ক্লাস নেওয়া শুরু করেছেন। স্যারের সাথে যখন দেখা করতে এলো, পূর্ব পরিচিত নিশাত ছিল স্যারের রুমে বসা। স্যারের আবার সেই নিস্পৃহ আচরণ!
আরিফ বলেছিল বাংলা একাডেমির মেম্বার হতে, সিক্তা খেয়াল করলো প্রকাশনা থাকলে মেম্বার হতে সুবিধে হয়। এদিকে কলেজে নতুন কোর্সের ক্লাস নেওয়া শুরু করতে যেয়ে পড়াতে পারে না বইয়ের সহজলভ্যতা না থাকায়। শেষে নিজেই নেট ঘেটে, কাজ শেষ করে বাচ্চাদের ঘুম পারিয়ে রাত জেগে কাজ করে খেটে খুটে একটা বইয়ের কাজ করে ফেললো। আরিফ একবারও প্রুফ পর্যন্ত দেখে দেয়নি। কিন্তু বইয়ের আনকোড়া একটা কপি হাতে পেয়ে সিক্তাকে জরিয়ে ধরে চুমু খেয়েছিল সিক্তার সাফল্যে।
সাইদ স্যারকে যখন বইয়ের দুই কপি দিল তখন স্যারের উচ্ছসিত প্রশংসার বানে যেন সিক্তা ভেসে যাচ্ছিল। সিক্তার সব কষ্টই সার্থক। তার শ্রদ্ধেয় প্রিয় মানুষ দুজনের কাছেই সে চুড়ান্ত প্রশংসা পেয়েছে। কাজের গতি বেড়ে গেছে অনেকগুন। নতুন করে রিসার্চের কাজ শুরু করলো। জানে স্যার কাজ পাগল মানুষ। স্যারের কাছে কাজ ছাড়া লুতুপুতু ঢং করে কোন লাভ নেই।
ভয়ংকর খবরটা এরপরেই শুনলো...স্যার চলে যাচ্ছেন মোনাশ ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি করতে। সাথে বউ, বাচ্চা নিয়ে যাচ্ছেন। শুনেই স্যারের সামনে সিক্তা চোখের পানি আটকাতে পারে নি। হু হু করে কেঁদে ফেলেছিল।

সেদিন সিক্তা বলতে বাধ্য হয়েছিল ...স্যার, টিচিং প্রফেশনে আপনার মতো মানুষই প্রয়োজন , যারা শিক্ষার্থীদের এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখাবে এবং তা বাস্তবে রুপ দিতেও সহায়তা করবে।

আজকে সেপ্টেম্বরের ৫ তারিখ। টিচার্স ডে। দুই বাচ্চার স্কুলের ক্লাস টিচারদেরকেই আর কোন গিফ্ট দিতে না পেরে হোটেল স্টার থেকে স্পেশাল নান, কাবাব, চিকেন টিক্কা কিনে জোর করে দিয়ে এলো। ছলো ছলো চোখে বেসিনের সামনে সিক্তার বড্ড বেশিই সাইদ স্যারের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে...



অনুপ্রেরণাদায়ী সকল শিক্ষককে শ্রদ্ধার সঙ্গে জানাই  Happy Teachers' Day .

রবিবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০১২

সূর্য স্নান


আজকে সূর্যকে বড্ড দরকার ছিল...
আমার সবথেকে পছন্দের পোষাকগুলো বের করেছিলাম
অনেকটা সময় নিয়ে অনেক যত্ন করে ধুয়ে যখন বারান্দায় গেলাম
সূর্য আজকে আমায় আলো দিতে পারবে না
সাফ জানিয়ে দিল!
আমার এতো পরিকল্পনা, এতো প্রস্তুতি, এতো আশা ..গুনগুন করে গান গাওয়া সব যেন ধুলায় মিশে গেল!
চরম হতাশায় শরীরের সবটুকু শক্তি যেন নিমেষেই হারিয়ে গেল!
শরীরটাকে কেমন যেন বড্ড বেশি ভার, বোঝা মনে হচ্ছিল!
শুধু মাত্র সূর্য আজ আমায় আলো দিবে না বলাতেই আমার এতো ভেঙে পড়া নিজেও মানতে পাচ্ছিলাম না
কিন্তু নিজেকে সামলানো কষ্টের হয়ে যাচ্ছিলো!
   সূর্য যেন মেঘের আড়াল থেকে চোখ টিপ দিল!
কিন্তু সূর্যর চোখ টিপ কি আর আমার চোখে পড়ে :(
শরীরটাকে টানতে টানতে যখন ফিরে আসছিলাম
তখন হঠাৎ করেই পেছনে তাপ  লাগায় সন্দেহ নিয়ে তাকিয়ে ............  আমি বিস্ময়ে হতভম্ব!
আমি যেন সূর্যের দিকে তাকাতেই পাচ্ছিলাম না
সূর্যের কাছে এতো লজ্জা নিজেই নিজেকে লুকোতে ব্যস্ত হয়ে যাচ্ছিলাম।
সবগুলো কাপড় মেলে দিয়ে এলাম
সাথে সূর্য স্নান

আহা স্বপ্ন স্বপ্ন সব কিছু আজ লাগছে
আমার সঙ্গী হয়ে চন্দ্র তারা জাগছে
:D


রবিবার, ২৬ আগস্ট, ২০১২

বলদাহ গার্ডেন














                                     









সোশ্যাল নেটওয়ার্ক

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites