শুক্রবার, ১৫ মার্চ, ২০১৩

মেয়েদের বিয়ে হয়, আর ছেলেরা বিয়ে করে...এভাবে আর কতো হাতি পোষা হবে?!


সাথীর বিয়ে হয়েছে হৃদয়ের সাথে ...তেমন আহামরি কোন কথা না। রাকিবের মাকে যখন জিজ্ঞেস করলাম, ছেলের বিয়ে হলো কবে? উনি হেসে বললেন, এইতো ,গতমাসেই রাকিব বিয়ে করলো।  মেয়েদের বিয়ে হয়, আর ছেলেরা বিয়ে করে। খুব ভালো করে খেয়াল করলে দেখা যায় যে, ছেলেদের বিয়ে হয়, এই কথাটা কেউই কখনোই বলে না। কেন বলে না? "বিয়ে করা" ....এই করা শব্দটার মধ্যে কর্তৃত্ব আছে। আমি শব্দটাকে নঞর্থকভাবে বলছি না। মেয়েদের নির্ভরশীলতা তুলে ধরার জন্যেই এভাবে বলা। মেয়েরা বিয়ে বসেছে...এই বিয়ে বসা শব্দটা আসলে এ্ক ঘাড় থেকে আরেক ঘাড়ে যেয়ে চড়ে বসা । জন্মের পর শিশু ছেলেই হোক বা মেয়েই হোক তাকে লালন পালন করার দায়িত্ব মুলত পিতা-মাতারই। কিন্তু একটা সময়ের পর থেকে মেয়েকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয় কিভাবে পরের ঘরে যেয়ে অষ্ট ব্যঞ্জন রেধে স্বামী, শ্বশুর-শ্বাশুরীর মনোরঞ্জন করবে। ঘর গোছানোর প্রশিক্ষণ দেয়া হয়, দেয়া হয় ধর্মীয় প্রশিক্ষণ তা বিশেষ করে পরের বাড়িতে তার পারফরমেন্স দেখানোর জন্যে। মেয়ে শিশুর জন্মের পর পিতা-মাতাকে তার নামে অর্থ সঞ্চয়ের প্রবণতা দেখা যায় তার বিয়েতে খরচ করার জন্যে। বিয়েতে তার সাথে কিছু উপহার পাঠাতে। এই উপহারটা যদিও যৌতুকের ছদ্মবেশ। কিন্তু ছেলের জন্যে সেভাবে অর্থ সঞ্চয়ের প্রবণতা দেখা যায় না। তবে কি ছেলে শিশুরা বঞ্চিত? প্রশ্ন উঠতেই পারে... মজার বিষয় হলো এটা সর্বজন বিদিত যে, সাধারণত ছেলে শিশুর উপরই পরিবারের মানুষ ভবিষ্যতে পরিবারের দায়িত্বের বোঝাটা চাপিয়ে দিবে বলেই ছেলে শিশুকে ছোট বেলা থেকেই শরীরের দিক থেকেই হোক বা মনের দিক থেকেই হোক, তাকে বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। তাকে বুঝিয়ে দেয়া হয়, তার উপরই সবার ভরসা। সেই হতে যাচ্ছে তার পিতার পরে পরিবারের রক্ষা কর্তা। আমাদের সমাজে নিরাপত্তার ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় নারীর অবাধ চলাচল বিঘ্নিত হওয়ায় নারীরা অনেক চ্যালেঞ্জিং পেশায় যোগ্যতা থাকা সত্বেও অংশগ্রহণ করতে পাচ্ছে না।  তারা অনেক সময় বড় অংকের বেতনের সুবিধা প্রাপ্ত চাকুরীতে অংশগ্রহণ করতে পাচ্ছে না যাতায়াত ব্যবস্থার সুবিধা না থাকায়, নিরাপত্তার নিশ্চয়তা না থাকায়। কিন্তু বাসে নারী এবং পিছিয়ে পরা জনগোষ্ঠির জন্যে নির্ধারিত সিট নিয়ে দেখা যায় অনেক সময়ই পুরুষ কন্ঠের কঠোরতা...যদি সমান অধিকার চানতো ছেলেদের মতো দাড়িয়ে যান বা এধরণের কথা । বাড়ী থেকে দুরের কলেজ/ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক অভিভাবকই পড়তে দিতে চাননা আবাসন ব্যবস্থার নিরাপত্তা না থাকায়। এভাবেই নারী অনেক সময়ই পিছিয়ে পড়ছে তার যোগ্যতা থাকা সত্বেও। পিছিয়ে পরছে অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা থেকে। তারপরও নারী গৃহস্থালী কাজে যে পরিমাণ শ্রম দিচ্ছে তাকে আমরা সাধারণ চোখে মূল্যায়ন করতে নারাজ। একজন নারী কিভাবে একটি সমাজে তার অবদান রাখছে তার হিসেব আমরা করি না। যেহেতু নারীর অথরঐনতিক স্বনির্ভরতা নেই, তাই আমরা তার আর সব কাজের মূল্যায়ন না করে তাকে বোঝা হিসেবেই সাধারণত দেখে থাকি।
নারীর পথচলা কন্টকমুক্ত হোক।নারীর কাজের মূল্যায়ন হোক। এভাবে নারীকে হাতি পোষার মতো প্রাণী হেসেবে দেখতে চাই না।

------------------
অস্থির সময়ের প্রলাপ

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

সোশ্যাল নেটওয়ার্ক

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites