ম্যুভি রিভিউ- "দ্য স্পীড"

অনেকদিন পর বলাকায় গেলাম বাঙলা সিনেমা অনন্ত জলীল অভিনিত ম্যুভি "দ্য স্পীড" দেখতে। সিনেমা শুরুর আগে পর্দা সরে গেল সিনেমা হলের এবং স্বাভাবিক ভাবেই জাতীয় সংগীত মিউজিকে পরিবেশন । কিন্তু অবাক হয়ে দেখলাম প্রায় ৩০% দর্শক সে সময় বসা থেকে উঠার নাম পর্যন্ত করেনি এই কয়েক মিনিট দাড়িয়ে জাতীয় পতাকাকে সম্মান প্রদর্শণ করতে। সিনেমার শুরুই হলো বেশ দারুন সাউন্ডের ইফেক্ট দিয়ে। "দ্য স্পীড" নামটিকে সার্থক করতেই হয়তো।

১৯৯৯ সালের অক্টোবর মাসের কোন একদিন

মানুষের জীবনে বোধ সঞ্চারের এক নির্ভেজাল উপাদানের নাম কবিতা। কবিতা কখনো মানুষের মনকে রাঙিয়ে দেয়, কখনো বদনার কালো রঙ ঢেলে উপলব্ধিগুলোকে সতেজ করে তোলে; জীবন দর্শনের পথকে করে প্রশস্ত।

নারী-পুরুষ নিয়ে একটি বৈষম্যহীন সমাজের কথা বলি

'জেন্ডার' শব্দটি মুলত নারী ও পুরুষ উভয়কেই বোঝায়, বোঝায় নারী-পুরুষকে নিয়ে বৈষম্যহীণ সমাজের, রাষ্ট্রের কথা। সংস্কৃতি ও সমাজ নারী ও পুরুষ সম্পর্কে যে সব দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবোধ গড়ে তোলে, ভিন্ন ভিন্ন আচরণ করতে শেখায়, কিংবা ভুমিকা পালন করতে বলে, সেসবই হচ্ছে জেন্ডার।

সৌদি নারী...অতঃপর রোকেয়া

যদি আজ থেকে প্রায় একশ বছর পেছনে তাকাই বেগম রোকেয়ার (রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন১৮৮০-১৯৩২) জীবনে যিনি সৌদি নারীদের মতো প্রাতিষ্ঠানিক উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পাননি কিন্তু তার দেখানো আলোতে এখনও আমরা পথ দেখি।

নারী....আর কতোকাল রবে শুধুই অর্কিড হয়ে!

প্রচলিত ধ্যান-ধারণা হচ্ছে নারী হবে নরম-কোমল, সর্বংসহা (মাতা), মনোরঞ্জনকারিনী (বধূ)। তারা থাকবে অন্দরমহলে। আর তাই প্রবাদে শোনা যায়... 'ঝি নষ্ট হয় হাঁটে, বউ নষ্ট হয় ঘাটে'।....অর্থাৎ ঝি কে হাঁটে-বাজারে-মার্কেটে পাঠানো যাবে না আর বউকে পুকুর ঘাটে পাঠানো যাবে না (যদিও গ্রাম এলাকায় পরিবারের পানির যোগান দাতা সাধারণত নারীই)।

বৃহস্পতিবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৫

♣বিজ্ঞাপনে নারী : সেন্টিমেন্ট বাণিজ্য♣




কথায় আছে প্রচারেই প্রসার । আর প্রচার করার জন্যে বিজ্ঞাপনের বিকল্প নেই । কোন পণ্যের খবর ভোক্তার কাছে পৌঁছানোর জন্যে বিজ্ঞাপনের ভুমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ । আর বিজ্ঞাপন এমনই হওয়া উচিত তা যেনো মানুষকে আর যে কোন কিছু থেকে আলাদা করে ভাবতে বাধ্য করে ।
আজকাল হরেক পদের বিজ্ঞাপনের ভীড়ে ভোক্তাদের জানতে বাকী থাকছেনা কোন পণ্যটি বাজারে সহজলভ্য ।
বিজ্ঞাপন অনেক ধরনের হয়ে থাকে । তবে মূলত তাকে চার ভাগে ভাগ করা যেতে পারে।
শ্রবণ সম্পর্কিত : রেডিওতে প্রচারিত বিজ্ঞাপন, মোবাইল ফোনে ভয়েস কলের মাধ্যমে প্রচারিত বিজ্ঞাপন ।
দর্শন সম্পর্কিত : সাধারণত পোস্টার, বিলবোর্ডে, বিভিন্ন সংবাদ পত্রে প্রকাশিত বিভিন্ন বিজ্ঞাপন এবং
সাময়িকীতে প্রচারিত বিজ্ঞাপন এবং বর্তমান সময়ে অতি অবশ্যই সোস্যাল মিডিয়াতে প্রচারিত বিজ্ঞাপন ।
শ্রবণ এবং দর্শন : এটি মূলত টিভি চ্যানেলে প্রচারিত এবং সিনেমা হলে বা বিভিন্ন ভিডিওতে প্রচারিত ।

বিজ্ঞাপনের হরেক রকম নিয়ে বলা যেতে পারে অনেক কথাই । আজ টিভিতে প্রচারিত নাম জানা, না জানা (নাম মনে নেই) কিছু বিজ্ঞাপন নিয়ে লিখবো । আমি নারীবাদী বা জেন্ডার কর্মী হিসেবে নয় একজন সাধারণ দর্শক হিসেবে আমার ভালো লাগা, মন্দ লাগা জানাতে লিখতে বসেছি ।

যে বিজ্ঞাপনটি আমাকে বিশেষভাবে ভাবাচ্ছে...
সুপার মম ডায়াপার । আহা এতো দারুণ, হৃদয় স্পর্শি বিজ্ঞাপন প্রচারে বিজ্ঞাপন দাতাকে সাধুবাদ দিতেই হয় । আপনারা কি বিজ্ঞাপনটি খেয়াল করেছেন ? বউমা, বাবুর র‌্যাশ উঠেছে...বাচ্চার বাবা বিছানা থেকে উঠতে চাইলে বাচ্চার মা তাকে নিরুৎসাহিত করছে । একজন আর্কিটেকচার মা বাচ্চা পালনের তো ট্রেনিং নেয়নি তবে ?

প্রকৃতির নিয়ম অনুযায়ী একজন নারী সন্তান ধারণ করতে পারবেন, স্তন্য দান করতে পারবেন। এই দু'টো কাজ পুরুষদের দ্বারা সম্ভব নয় । কিন্তু আর বাকী কাজ ? বাচ্চার মা যদি আর্কিটেকচার হয়ে পেশাগত কাজ করেও বাচ্চার জন্যে সময় দিতে পারে তবে বাবা নয় কেন ? বাস্তবে অনেক বাবারাও সময় দেয় কিন্তু । আমাদের মিডিয়াগুলো কি বাস্তবের সেই বাবাদের উদাহরণ তুলে আনতে পারেনা ? নাকি পুরুষ ক্ষেপিয়ে কাজ নেই বাবা... সারাদিন অফিস করে আবার রাতে বাচ্চার ন্যাপি বদলাবো ! এমন বিজ্ঞাপনের গুষ্ঠি কিলাই !

নাহ, বিজ্ঞাপন দাতারা সেন্টিমেন্ট নিয়ে খেললেও নারীদের পক্ষেও বিজ্ঞাপন যাচ্ছে কিন্তু ।
সেনোরা ন্যাপকিনের বিজ্ঞাপনটি বর্তমান সময়ের তেমনই একটি দারুণ আঘাত । ১৮ বছরের আগে ৭৩% মেয়েরই বিয়ে হয়ে যাচ্ছে । আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি মেধাবী মেয়ের বিয়ে দেবার সময় কথা থাকে পড়াবে...১৮বছরে বিয়ে তো দুরে থাক বেচারী বাচ্চার মা বনে গেছে ! কাজের আমগর মেয়ে দুনিয়া দেখবো...অবশ্যই দেখবে। অন্যান্য ন্যাপকিনের বিজ্ঞাপনের চেয়ে এই বিজ্ঞাপনটিকে আমার কাছে অনেক বেশি অনুপ্রেরনাদায়ী মনে হয়েছে । খেলুক সেন্টিমেন্টে নিয়ে...কিন্তু এসব খেলাতেও যদি কিছু মানুষ সচেতন হয় ।

আচ্ছা পুরুষরা কি গায়ে সাবান মাখে না ? নাকি গায়ের গন্ধ দূর করতে শুধু নারীকে কাছে টানা (বহুগামী মন) পারফিউম বা বডি স্প্রেই মাখে ? প্রশ্নটা করলাম এই কারণে যে পুরুষদের দ্বারা সাবানের বিজ্ঞাপন তেমন চোখেই পড়ে না । এই মুহুর্তে শুধু "কুল" (সম্ভবত) নামক সাবানের কথাই মনে পড়ছে যাতে পুরুষের সম্পৃক্ততা সরাসরি দেখিয়েছে ।

লুকিয়ে ফেয়ার এ্যান্ড লাভলী মাখলেও মুখে মুখে গুষ্ঠি উদ্ধার করেছি বর্ণবাদের বিজ্ঞাপন বলে । কিন্তু আপনি পুরুষ, আপনার মা নারী তো বিয়ের পাত্রি খুঁজতে ফর্সা মেয়েরই সন্ধান আগে করে ! তুমি মেয়ে তোমার ভাইয়ের জন্যে ফর্সা পাত্রীই কেন অগ্রাধীকার পায় ? আপনি পুরুষ বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন যমজ দু'বোনের মধ্যে যার গায়ের রং ফর্সা তাকেই আপনি গুরুত্ব বেশি দিবেন না । থাক আপনার হৃদয়ে কুঠারের আঘাত হানার কোন ইচ্ছে নিয়ে এই লেখা লিখতে বসিনি । যে ফেয়ার এ্যান্ড লাভলীর বিজ্ঞাপনের প্রসঙ্গ আনলাম...নারী অধিকার...সমঅধিকারের কথা আমরা যতই বলি না কেন বিয়ের সময় পকেটের টাকা সাধারণত ছেলেরই যাচ্ছে মেয়ের নয়। স্বামীর টাকা স্ত্রীর টাকা বটে কিন্তু স্ত্রীর টাকা স্বামীর টাকা নয় । এই মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে না পারলে সমঅধিকারের কথা বলা আর হিপোক্রেসি করা একই কথা । বাস্তবে দেখা যায় কোন মেয়ে ঘরে থাকলে তাকে নিয়ে বাজে কথা উঠছে না, বরং তার পরিচয় গৃহিণী, হাউজ ওয়াইফ বা হোম মেকার কিন্তু কোন কারণে ছেলেটি বিয়ের পর ঘরে থাকলে কিন্তু তাকে শুনতে হচ্ছে অনেক নিন্দনীয় কথা ।
যাকগ ধান ভানতে শীবের গীত না গাই...আপনারা যাই বলুন ফেয়ার এ্যান্ড লাভলীর এই সমঅধিকার নিয়ে প্রচারিত বিজ্ঞাপনটিকে আমি বাহবা দিবই...এতেও যদি কন্যা তোমার মাথায় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে অন্যের কাঁধে চড়ার জন্যে বিয়ের চিন্তা ভর না করে।

মেরিল স্প্লাস...অনেককেই এই বিজ্ঞঅপনের বিরুদ্ধে বহুত কথা বলতে, লিখতে দেখেছি । বিজ্ঞাপনে তিশার মেকাপ নিয়ে কথা বলাটা আমার কাছে অপ্রাসঙ্গিক মনে হয়েছে । কেননা বিজ্ঞাপনের মেসেজটাই আসল । ফর্সা নয় বরং পরিস্কার ত্বক ...এমনই কি হওয়া উচিত নয় ?

বিকাশে টাকা লেনদেনের কথা এখন আমরা লাখো, কোটি মানুষ জানি । কিন্তু বিজ্ঞঅপনটি খেয়াল করেছেন ? কেউ টাকা শোধ করে, কেউ লেনদেন করে, কেউ ফোনে টাকা বিকাশ করে । আর বউ সেজে থাকা নারী ইন্টারেস্ট পায় ! এই ইন্টারেস্ট পাওয়াটাকে কি দেখানো যায় না যে বিয়ের আগে তার কোন কাজের জমানো টাকা থেকে সে ইন্টারেস্ট পায়...

প্লাস্টিকের বিজ্ঞাপন...বেঙ্গল প্লাস্টিক...নারীর ক্ষমতায়ন যতই হোক, শিক্ষায় ক্ষমতায়ন, অর্থনীতিতে ক্ষমতায়ন, রাজনীতিতে ক্ষমতায়ন...কিন্তু সিদ্ধান্তে কি সত্যিই ক্ষমতায়ন হয়েছে ? আমি নিজে পড়াকালীনসময়ে তথ্য জোগার করেছিলাম...যেই লাউ সেই কদু । কাজেই নারীতো প্লাস্টিকের মতোই...কিন্তু না বর্তমানে নারী নিজের সিদ্ধান্তে এগিয়ে যাচ্ছে...বেঙ্গল প্লাস্টিকের মেসেজটি আমার ভালো লেগেছে ।

আচ্ছা মনে করতে পারছিনা আমাদের জনপ্রিয় গায়িকা মমতাজের  কোন  বিস্কুটের বিজ্ঞাপনে অংশ নিয়েছেন ...সেই বিজ্ঞাপনে বালকটি বালিকাকে ছ্যাঁকা মেরে পগাড় পার...বালিকা তো মনের দুঃখে বনে যায় অবস্থা...মমতাজের দেয়া বিস্কুট খেয়ে বালিকা নতুন প্রেমিকের সন্ধান পেয়ে যায় । কী রে বাব্বা ! ছ্যাকা খেয়ে আবার প্রেমই করতে হবে ?...বিস্কুট খেয়ে মেয়েটি পারতো না নতুন উদ্যমে কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ে বিশিশ্ট কেউ হয়ে উঠতে ? নাকী পুরুষ বিজ্ঞাপন নির্মাতারা নারীকে সফল দেখতে চাননা ?  

বিজ্ঞাপনে "ভাবী" শব্দটি প্রচার করে নারীর আত্মপরিচয় যে ডুবে যাচ্ছে তা কি নারী নিজেও ভাবে ? ভাবলেতো স্কুলগুলোর সামনে "ভাবী" সম্বোধনের ছড়াছড়ি থাকতো না । আমার বরকে চিনোনা তুমি আবার আমাকে ভাবী ডাকছো কনো গো? আজকাল দেখি ছোট বাচ্চারাও নিজের মাকে ভাবী ডাকছে !
বিজ্ঞাপনে নারী পণ্য এমন কথা বলতে আসিনি... বিজ্ঞাপনগুলো নারীর মেধা, সাফল্য গাঁথাকে তুলে ধরুক...হ্যাঁ উঠে আসছেও অনেক ভালো মেসেজ তবে অনেক কম...নারীর পিছে পিছে গান করেনারীকে পটানোর নামে ইভটিজিংকে উৎসাহিত না করে আরো অনেক ভালো কিছু করা সম্ভব ।

মিডিয়া ওয়ালারা আপনাদের দায়িত্ব অনেক...সেন্টিমেন্ট দিয়ে আমাদের বশ করুন...তবে তা যেনো আমাদেরকে প্রতারিত না করে বরং ভালো কাজে আমাদেরকে অনুপ্রাণিত করে । 

সোমবার, ২২ জুন, ২০১৫

ঘুরে এলাম পাহাড় ঘেরা গজনী!

ডাইনোসরের সাইজেই বানানো এই বিশালাকার ডাইনোসরটি !
সাইট ভিউ টাওয়ার থেকে ক্যামেরার চোখে...বাস্তবে তা আরো নয়ন জুড়ানো !

অনেক উঁচু থেকে ক্যামেরার চোখে এর প্রকৃত সৌন্দর্যের তেমন কিছুই ধরতে পারিনি ।



চারদিকে ইট, কাঠ, পাথর নয় বরং সবুজ আর সবুজ !

চাইলে এই টাওয়ারে উঠার পথের দোতলাতেই দূরবীন ভাড়া করতে পারেন নাম মাত্র খরচে ।

এই বাণী পড়ে কতজন মানেন জানিনা ।

কাছ থেকে দেখে মনে হয়েছে গাছ কেটে তার মধ্যে এই নেমপ্লেট লাগানো হয়েছে ।

কাউকে খুঁজে না পেয়ে জানা হয়নি এর সম্পর্কে বিস্তারিত

শ্রদ্ধা নিবেদনের স্থান

বাহ ! প্রিয় নজরুলকেও সেখানে খুঁজে পেলাম ।

কল্পনার বিস্তারে মৎস্য কন্যাও হাজির !

বাণী চিরন্তণ

পাহারা পার হয়ে বাস্তবিকই বিনা টিকেটে উঠা সম্ভব না !

জিরিয়ে নেয়া যেতে পারে এই দ্বীপটিতে

ম্যাপ দেখে বুঝে নিন কোথায় আছেন ...

পথ খুব অল্প ! কিন্তু অন্ধকার যে সত্যিই ভয়ঙ্কর তা এই পাতালপুরীতে না ঢুকলে বোঝার উপায় নেই !
গজনী ! বৃহত্তর ময়মনসিংহের শেরপুরের প্রান্তে পাহাড় ঘেষা অপরূপ এলাকা এই গজনী। যার পাশেই রয়েছে ভারতীয় সীমান্ত ।  বলে রাখা ভালো যে যারা পরবর্তীতে যাবেন তারা চেষ্টা করবেন নিজেদের সাথে খাবার নিয়ে যেতে । যদিও ভ্রমণে গেলে ভ্রমণের মানসিকতা নিয়ে যাওয়াই ভালো ।
১২ জুন ২০১৫

মঙ্গলবার, ১২ মে, ২০১৫

Sleeping Beauty


না, এ কোন রূপকথার ঘুমন্ত রাজকন্যা নয়। তেতো বাস্তবেরই এক সুন্দরী। যাকে জীবনের প্রয়োজনে করতে হয় বেশ কিছু অড জব।
২০১১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত অস্ট্রেলিয়ান সিনেমা Sleeping Beauty ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া লুসি যে কফি শপে কাজ করে, ইউনিভার্সিটির মেডিক্যাল ল্যাবের রিসার্চ সাবজেক্ট এবং বারের আগতদের কারো কারো সেক্স পার্টনার হিসেবে পুরো সিনেমা জুড়ে শান্ত, চুপচাপ, নির্বিকার একটি চরিত্রকে দেখানো হয়েছে । কিন্তু যখন সে তার শয্যাপাশে একজন মৃত বুড়োকে দেখতে পায় তখনই কেবল তাকে ইমোশনাল হতে দেখা যায় বিশেষভাবে। যা ঘুমন্ত সুন্দরীকে জাগিয়ে
তোলার রূপক হিসেবে কাজ করেছে।

বৃহস্পতিবার, ৭ মে, ২০১৫

Sleeping with the enemy

শুচিবায়ুগ্রস্থ অবসেসিভ কমপালসিভ পারসোনালি ডিজঅর্ডারে ভোগা মার্টিনকে সুখি করা সত্যি খুব কষ্টসাধ্য ব্যাপার বেচারী লরার জন্যে। মানসিক অত্যাচারতো বটেই আকর্ষনীয় প্রতিবেশীর প্রতি স্ত্রীর আকর্ষণের মিথ্যে সন্দেহে শারীরিক অত্যাচার একজন দাসের স্বাধীনতাকেও হার মানায় ।

স্বাধীনতাহীনতায় কে বাঁচিতে চায় হে
কে বাচিতেঁ চায়?



আর তাই নতুন জীবন পেতেই লরা নিজেকে হারিয়ে ফেলে।
স্বামী মার্টিনের কাছে মৃত লরা নতুন জীবন গ্রহণ করে "সারা" নামে এবং নতুন পরিবেশে নতুন প্রতিবেশী বেন এর সাহচর্যে নতুন জীবনের স্বাদে যখন সুখের মুখ দেখতে শুরু করলো ততদিনে মার্টিন জেনে গেছে তার স্ত্রী লরা জীবিত।

We will always be one. Nothing can keep us apart.
মার্টিনের যতই ভালোবাসা থাকুক লরার প্রতি কিন্তু বেশি চিপলে লেবু তেতো হয়ে যায়...তেমনি লরাও  স্বামী মার্টিনের অত্যাচারে ভালোবাসাকে তুচ্ছ করতে পেরেছিল।

I can't live without you. And I won't let you live without me.
মার্টিন কথাটা ভালোবাসা থেকে বললেও আদতে পৃথিবীতে অত্যাচারীরা শেষ পর্যন্ত টিকতে পারেনা।  ভোগা স্বামী মার্টিনও পারেনি। টিকে থাকে শান্তি প্রিয়রাই।

অতঃপর তাহার সুখে শান্তিতে বসবাস করিতে লাগিল...
কাহারা ?
লরা মানে সারা এবং বেন ।

Sleeping with the enemy  থেকে নেয়া স্থির চিত্র।
-----------------------------------
এই হলিউড সিনেমাটি ১৯৯১ সালে মুক্তি পায়। পরবর্তীতে একই ঘটনার একটা বলিউড সিনেমা মুক্তি পায় "অগ্নিসাক্ষী" নামে । যা নানা পাটেকর, মণিষা কেরালা এবং জ্যাকিশ্রফ অভিনীত।
-----------------------------------
সিনেমার নাম Sleeping with the enemy-ই কেন রাখা হলো ? এমন প্রশ্ন যখন মাথায় ঘুরছিল তখন একটা ইমেজ চোখে পড়লো যার ক্যাপশনে লেখাছিল Marriage is the only war, during which you sleep with your enemy ...বাহ বেশ জবাব তো !

শুক্রবার, ১ মে, ২০১৫

মে দিবসের ভ্রমণ ২০১৫











রবিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৫

অবদমিত অভিমান: পরের কথা


ইদানিং অনেক কথাই মনে আসে কিন্তু গুছিয়ে লিখতে পারছি না ।
সেই আগের মতো অবস্থা হয়েছে। চোখের সামনে, মনের ভেতর পুরো কাহিনী সিনেমা হয়ে যাচ্ছে কিন্তু আমি গুছিয়ে লিখতে পারছি না !
আমি গুছিয়ে লিখতে পারছি না শাহানা এসেছিল। প্রতিরাতেই সে আসতো মায়ার কাছে। ওর নির্ঘুম রাতগুলিতে মায়ার বুকই ছিল ওর ঘুমের আশ্রয়স্থল। অষ্টাদশী এক অবুঝ কিশোরীর মতো মায়ার বুক খামচে ধরে অবলীলায় ও ঘুমিয়ে পড়তো ।
ভাবছেন ও মায়ার বুকে ঘুমিয়ে পড়তো আর মায়ার বাসার কেউই দেখতো না !
কী জানি ব্যাপারটা গোলমেলে আমার কাছেও।
মায়া কখনো আমায় বলেনি শাহানার কথা । কিন্তু শাহানার ডায়েরিটা আমি পেয়েছিলাম, সেখানে শাহানার সুখভরা স্বপ্নগুলোর কথা লেখা থাকতো । লেখা থাকতো ভালোবাসার সুখের সাগরে ওর ভেসে বেড়ানোর গল্প।
মায়া খুব পড়ুয়া ছিল। সবসময়ই কিছু না কিছু করতো । হয় পড়ছে তো পড়া শেষ করে টিভি দেখছে, নতুবা পিসিতে ম্যুভি দেখছে। অথবা গেমস খেলছে অথবা গল্পের বই পড়ছে নয়তো জিআরই-র পড়া পড়ছে। শাহানা ওর কোন কাজেই ব্যাঘাত ঘটায় নি। ও শুধু বিড়ালের মতো মায়ার সাথে ঘুরে বেড়াতো । রাত বাড়তে থাকলে শাহানা ঘুমে ঢুলতে থাকতো । মায়াই তখন ওকে বুকে নিয়ে "সফট কিটি ওয়ার্ম কিটি" গান শুনিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিত। ভাবছেন বুকে নিয়ে ঘুম পাড়াতো শুধু আর কিছু করতো না ? আর কিছু হতো না ওদের মাঝে ?
হতো তো ... মায়া গান গেয়ে কপালে চুমু দিয়ে দিত । আর বিড়ালের মতো আহলাদ করে শাহানা ঘুমিয়ে পড়তো ।
ওদের মনের ভেতর কী ছিল জানি না। তবে শাহানার ডায়েরিতে এর বেশি কিছু লেখা থাকতো না।
ডায়েরির পাতা উল্টাতে উল্টাতে এক জায়গায় লেখা ছিল (তারিখ দেয়া ছিল না) " আজ মায়ার আলাভোলা, নিষ্পাপ, মায়ায় জড়ানো হাতটা আমার হাতে নিলাম। হ্যাঁ, ভরসা দিতেই, আমি আছি তোমার পাশে..."
এই কথা পড়ার পর ওদের দু'জনের কোন নিষিদ্ধ সম্পর্কের কথা মনে আসে নি। যে হাত নিয়ে শাহানা নিষ্পাপ অনুভবের কথা বলেছে সেই হাতের মানুষটির সাথে ওর পাপহীন সম্পর্কটাই চোখের সামনে ভেসে উঠছিল ।
মাঝে মাঝে শাহানা চটুল দুষ্টুমিতে মেতে উঠতো, হয়তো মায়াকে বিব্রত করতেই। কিন্তু বিব্রত হতে থাকা মায়াই যে একসময় এই বিব্রতবোধ থেকে মুক্তি চাইবে, বা নিজে থেকেই মুক্তির পথ খুঁজে নেবে, কে জানতো ?
ডায়েরিতে পাতার পর পাতা শাহানার হাহাকারে ভরা ছিল। চোখের পানিতে অনেক লেখাই অস্পষ্ট হয়ে উঠেছিল ।
মায়া ওর রুমে যেতে শাহানাকে বারণ করেছিল । শাহানা ওর দরজার পাশে রাতের পর রাত দাড়িয়ে ঢুলতো আর ভোর হলে চলে আসতো। এভাবেই রাতের পর রাত চলতে থাকার কোন এক ভোরে চলে আসার আগে মায়াদের বাসার ডোর বেল বেজে উঠলো। ফিরে আসার মুখে শাহানা বেল শুনে চমকে উঠলো ।
এর পর শাহানার ডায়েরিতে আর এ বিষয়ে লেখা পাইনি।
শুধু পরের দিনে লেখা ছিল, "মায়া, এই জীবনে আমায় যে মানুষটি সবচেয়ে বেশি ভালোবাসা দিয়েছিলো সে তুমি। আমাকে এমন করে এর আগে আর কেউ ভালোবাসে নি। এমন সোহাগ করে কেউ বুকে জড়িয়ে গান গেয়ে, কপালে চুমু দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেয় নি। সেই আমি কেমন করে আর কাউকে তোমার ভাগ দেই বলো?"
মায়ার কাছে আমি জিজ্ঞেস করতে পারিনি কিছুই, কী ঘটেছিল সেই দিন।
কিন্তু ...শাহানা আত্মহত্যা করেছিল ২০শে ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে!
আমি খুব অবাক হয়েছিলাম! এমন একটা সুইডাইডাল কেস কোন দৈনিকের শিরোনাম হলো না কেন ?
কিন্তু আমার বিস্ময়ের বাকী ছিল !
শাহানা আত্মহত্যা করেছিল ২০০০ সালে! তখন দৈনিক সংবাদ পত্রে শাহানার লেখা চিঠিও ছাপা হয়েছিল।
তাহলে এতোদিন পরে ?!
মায়ার কাছে......... ...?

শনিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০১৫

গল্প সঙ্কলন

গল্পকার গল্প লিখেন নিজের কল্পনার রঙে রাঙিয়ে।
এখানে গল্প ক্যাটাগরিতে আমার লেখাগুলো মূলত জীবন থেকে নেয়া কথাই । কখনো দেখা, কখনো শোনা, কখনো পাশের, কখনো দূরের ঘটনাগুলো যখন আলোড়িত করেছে তাই লিখে প্রকাশ করতে চেয়েছি। কখনো নীরব প্রতিবাদ, কখনো পাঠকের চোখে আঙ্গুল দিয়ে অন্যায় দেখিয়ে দেবার চেষ্টা আবার কখনো নিজেকে ভারমুক্ত করতে এসব লেখা । পাঠক এর সবগুলোকে হয়তো গল্প মানতে নারাজ হবেন । আকার, উপস্থাপন অনুযায়ী বিভিন্ন লেখা বিভিন্ন রকমের । সেক্ষেত্রে কোন ধরণের পরামর্শ থাকলে তা নির্দ্বিধায় জানাতে অনুরোধ করা গেল। গল্প ক্যাটাগরিতে নিজের লেখাগুলো একত্রিত করতে গিয়ে দেখি অনেক লেখাই নিজের ব্লগসাইটে রাখা হয়নি। হিসেব রাখতে তাই এই সঙ্কলন । নিয়মিত/অনিয়মিত আপডেট করার আশা রাখি।

১৩. নিজেকে হারায়ে খুঁজি...
১২. লাল ডায়েরি
১১. প্রতিদান
১০. অভিশাপ
৯. সৃজনশীলতা
৮. শোধ
৭. পরিচয়হীন
৬. চেনা অচেনা

৫. লাইসেন্স
৪. স্যার, এই পেশায় আপনাকে মানায় না !
৩. দীর্ঘশ্বাসের ঈদ!
২. তুই তো বেডা হইয়া গেছস
১. বিশ্বাসঘাতক!




মঙ্গলবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১৫

উপলব্ধি

নতুন বছরে নতুন করে পুরোনো কিছু উপলব্ধি:
১. কিছু মানুষের ব্যক্তিত্বের ভারে তার ভাব নেয়াটা মানিয়ে যায় । আবার কিছু মানুষের ভাব নেয়াটাই তাকে অন্যের কাছে উপহাসের পাত্র করে তোলে ।

২. যখন উপকার করার পরিমাণটা বেড়ে যায় তখন উপকারকারীর প্রত্যাশাও বেড়ে যায়। তাই কারো কাছ থেকে খুব বেশি উপকার পেতেও নেই, উপকার করতেও নেই ।

৩. মানুষকে এতোটা কষ্ট দেয়া উচিত না যাতে সে তোমার শুভাকাঙ্ক্ষী হলেও তার রক্ত, মাংস কষ্টে জর্জরিত হয়ে তোমায় অভিশাপ দেয়। তাই কিছুটা দূরত্ব রেখেই সবার সাথে মেশা উচিত । যাতে কষ্ট দিতে বা পেতে না হয় ।

৪. ভালোবাসার পাল্লাটা নিজের দিকে ভারী করে রাখা উচিত । যখন তা অন্যের দিকে ভারী হয়ে যায়, তখনই নিজের আর কিছু থাকে না। তাই নিজের কিছু রেখেই ভালোবাসা উচিত। যেন পরবর্তীতে পস্তাতে না হয়।

৫. নিজেকে শ্রদ্ধাস্পদ রাখতে অন্যকে শ্রদ্ধা করা যেমন জরুরী তেমনি নিজেকে শ্রদ্ধাস্পদ হিসেবে উপস্থাপন করাটাও জরুরী।

৬. বন্ধু নির্বাচনে সতর্ক হও, বন্ধুত্বের সুযোগে যেন কেউ তোমার দূর্বল অনুভূতিতে আঘাত করতে না পারে ।

৭. আজকাল সুযোগ এতো বেশি যে, সুযোগের অভাবে সাধু থাকার সুযোগও কমে যাচ্ছে।

৮.রুপে নয় গুনে পরিচয় এই কথার চেয়ে আগে দর্শনধারী তারপর গুণবিচারী কথাটাই বেশি সত্যি।

৯. নিজেকে সাধু রাখা আসলেই সাধনার ব্যাপার । মুখে সে যতোই অহংকার করুক। এই অহংকার সবার থাকে না। বিবেকের সামনে দাড়িয়ে নিজেকে দেখার সাহস থাকা লাগে ।

১০. দেশপ্রেমিক প্রমাণ করতে গালাগালি বা দলাদলির দরকার পড়ে না । তার কথা, কাজই প্রমাণ করে সে প্রকৃত দেশপ্রেমিক কি না।

[১ বৈশাখ ১৪২২, মঙ্গলবার]

রবিবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৫

দীর্ঘশ্বাসের বৈশাখ


পূবালী বাতাসে, বাদাম দেইখা চাইয়া থাকি
আমার নি কেউ আসে...

বৈশাখ, ইদের আনন্দগুলো এখন আর নিপাকে স্পর্শ করে না।
মুখে একটা মেকি হাসি ঝুলিয়ে এই দিনগুলোর দায়িত্ব পালন করে ।
প্রিয় মানুষগুলো কাছেই থাকে...শাশুড়ি, স্বামী, সন্তান।
বৈশাখ, ইদে ননদরা বর বাচ্চা সহ বেড়াতে আসে। বাসায় বেশ আনন্দের ধুম পড়ে যায় ।
তারপরও নিপার ভেতরে রক্তক্ষরণ হয়। মেকি হাসির আড়ালে কষ্টেরা গুমড়ে মরে ।
কখনো জানালায় দাঁড়িয়ে বা কখনো বাথরুমের বেসিনে মুখে পানির ঝাপটা দিয়ে রক্তক্ষরণ কমানোর বৃথা চেষ্টা চলে।
নিপার মার ধারণা নিপার হৃদয় পাথরের তৈরি। কেননা নিপা কখনোই ওর মায়ের সামনে কাঁদেনি। সেই টিনবয়সেই যখন মাকে ছেড়ে বিশ্বদ্যিালয়ের হল জীবনে এলো তখন মাই কাঁদতো...নিপা বরং হেসে মাকে কাঁদতে নিষেধ করতো। নিজে কাঁদলে মা যে আরো কাঁদবে। স্বামী, পুত্র হারিয়ে নিপার মার যেনো নিপাই আনন্দের উৎস।
বিয়ের পর শাশুড়ির অনেক যন্ত্রণা সয়েও কখনো বরকে বলেনি আলাদা সংসার করতে বরং সবসময়ই চেষ্টা করেছে শাশুড়ির যেনো কখনো খাওয়া, পরায় অযত্ন না হয়।
বাবা বেঁচে থাকতে মায়ের জন্যে অন্যান্য উৎসবে তো বটেই বৈশাখের প্রথম দিনের জন্যেও নতুন শাড়ি কিনে দিতেন।
নিপা দুই মায়ের জন্যে দু'টো শাড়ি কিনেছে। বাসায় ফিরেই শাশুড়ি মাকে তাঁর শাড়িটা দিলেন ।
পরিকল্পনা ছিল ১৩ তারিখে মায়ের কাছে গিয়ে সেইদিনই আবার ফিরে আসবে নইলে বর, বাচ্চাদের আনন্দ যে ম্লান হয়ে যাবে ।


হরতালে নিপার সেই আশায় গুড়েবালি।
ফোন করলো মায়ের কাছে। কিন্তু গলার কাছে সব আটকে গেছে। কথা বেরুচ্ছেনা । মা ওপাশ থেকে তাগাদা দিচ্ছে..."কিরে কথা বলছিস না কেন?"
এতো বছরের পাথর হৃদয়ের নিপা এবার ঝরঝর করে কেঁদে ফেললো...
-আম্মা, আমিতো আজকে আসতে চাইছিলাম
মা হেসে বলে, তবে আয় ।
-হরতাল যে !
আচ্ছা হরতালের পরে আসিস ।
-কিন্তু আমি যে আপনার জন্যে শাড়ি কিনছিলাম!
আররে আমার তো শাড়ি আছেই। তুই সময় সুযোগে পরেই আসিস ।
-এপাশ থেকে অঝোড়ে নিপা কাঁদছে, বাচ্চা ছেলেটা কাছে এসে নিপার চোখের পানি মুছে দিচ্ছে, সে জানে মা তার মায়ের জন্যে কাঁদছে।



[১৩ এপ্রিল ২০১৫]

বুধবার, ২৫ মার্চ, ২০১৫

আমার কৃষক কন্যা: ফিরে চল মাটির টানে

ফিরে চল মাটির টানে ‘জুনিয়র’- সিজন ফোর
’মারি কুরি’-র চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীর ২০ শিক্ষার্থীকে নিয়ে এই পর্ব তৈরি হয়।

চ্যানেল আই-এর হৃদয়ে মাটি ও মানুষ অনুষ্ঠানে ফিরে চল মাটির টানে ‘জুনিয়র’- সিজন ফোর-এর আলু রোপণ পর্বের একটি দৃশ্য।

মুন্সিগঞ্জে চ্যানেল আই এর আয়োজনে অন্যান্যদের সাথে আমার কন্যা আলু লাগাচ্ছে

 চ্যানেল আই স্টুডিওতে অনুষ্ঠান ধারণ করার সময়গুলোতে



 ফেলোশিপ সনদ হাতে অন্যদের সাথে আমার কন্যা

 ১৩ কেজি আলু চাষ করেছে আমার কন্যা।
 প্রত্যেক শিক্ষার্থীর চাষকৃত আলু তাদের নামে বরাদ্ধ করা বস্তাতে

 শাইখ সিরাজ-এর কাছ থেকে অটোগ্রাফ নিতে ব্যস্ত সবাই
প্রিয় অভিনেত্রী সুবর্না মুস্তফার কাছ থেকে সনদ গ্রহণের পর অটোগ্রাফ নিতে ব্যস্ত সবাই ।

ছবি:
প্রথম ছবিটি চ্যানেল আই ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া।
বাকীগুলো নোকিয়া ৭০০ নিজস্ব এ্যালবাম থেকে নেয়া।

সোমবার, ২ মার্চ, ২০১৫

বানান সতর্কতা : সচেতনতা চলুক বছরব্যাপী

'কোন বিষয় সম্পর্কে ভালোভাবে অবহিত হতে চাইলে তা নিয়ে বই লেখা শুরু করাই ভালো' বেঞ্জামিন ডিজরেইলির এই কথাটা আমার অনেক পছন্দের । আর এই কথার সূত্র ধরেই নিজের ভাষার বানান সম্পর্কে বানান নিয়ে ব্লগ লেখা শুরু করেছি।
অনলাইনে অনেক ভুল বানানের প্রচলন ঠেকাতেও এই আয়োজন কাজে আসবে বলে মনে করি। কেননা একই শব্দের ভুল বানান বেশি চালু হয়ে গেলে যারা অনলাইন থেকেই বানানে বেশি সাহায্য নিয়ে থাকেন তারা ভুল বানানটাকেই ঠিক বলে মনে করবেন।


♦অস্বস্থিকর না হয়ে অস্বস্তিকর হবে। যার অর্থ মনের অশান্তি, অস্বাচ্ছন্দ্য, দৈহিক অচ্ছন্দতা



♦আগ্রহউদ্দীপক না হয়ে আগ্রহোদ্দীপক হবে।
আগ্রহ+উদ্দীপক (অকার+উকার=ও-কার। কাজেই হ+উ মিলে হো
♦আমার ভাই এর রক্তে রাঙ্গানো ২১ শে ফেব্রুয়ারি। আমি কী ভুলিতে পারি?
এখানে কী এর বদলে কি হবে। কেননা কি দিয়ে "হ্যাঁ" অথবা "না" জবাব হবে ।
♦আল্পণা না হয়ে আলপনা পৃ: ১২৫



♦ইংরেজী না হয়ে ইংরেজি হবে। (বিদেশী)


♦কস্ট হবে না, কষ্ট হবে
♦কারন না হয়ে কারণ হবে। পৃ: ২৫৪-২৫৫



♦খন্ড না হয়ে খণ্ড হবে। পৃ: ৩০৭



♦গন মানুষ না হয়ে গণ মানুষ হবে। পৃ: ৩৩৯



♦চীজ না হয়ে চিজ হবে [cheese]


♦তৈরী না হয়ে তৈরি হবে


♦দুঃশ্চিন্তা হবে না, দুশ্চিন্তা হবে। যার অর্থ দুর্ভাবনা, অশুভচিন্তা, কুচিন্তা, উৎকণ্ঠা (উৎকণ+ঠা) পৃ: ৬১৬
♦দুর-অবস্থা না হয়ে দুরবস্থা হবে। পৃ: ৬১২

♦ধারনা না হয়ে ধারণা হবে। পৃ: ৪৩৭

♦নিরবিচ্ছিন্নতা হবে না, নিরবচ্ছিন্নতা হবে। পৃ: ৬৮৯
♦নির্বান হবে না, নির্বাণ হবে। পৃ: ৬৯৪

♦প্রাতীচ্য না হয়ে প্রতীচ্য হবে। প্রতীচ্য অর্থ হলো পাশ্চাত্য, পশ্চিম দিকের দেশ সংক্রান্ত।
পৃ: ৭৮৩
♦পর্তুগীজ না হয়ে পর্তুগিজ হবে । (বিদেশী)
♦প্রাইমারী হবে না, প্রাইমারি হবে। (বিদেশী)
♦♦প্রতারনার স্বীকার না হয়ে প্রতারণার শিকার হবে।
♦প্রতারনা না হয়ে প্রতারণা হবে।  পৃ: ৭৭৯
স্বীকার (মেনে নেয়া) না হয়ে শিকার (আক্রান্ত) হবে। পৃ: ১০৭৯



♦বাহীনি না হয়ে বাহিনী হবে। পৃ: ৮৬৪♦বিষন্নতা (বিষন+নতা) হবে না, বিষণ্নতা (বিষণ+নতা) হবে। পৃ: ৮৮৭
♦বিভৎস্য হবে না, বীভৎস হবে। পৃ: ৮৯১

♦বিলাশিতা না হয়ে বিলাসিতা হবে।পৃ: ৮৮৫
♦ব্যাথা না হয়ে ব্যথা হবে। পৃ: ৯০৮
♦বাংলা একাডেমী না হয়ে বাংলা একাডেমি হবে ।
♦বেশিক্ষন হবে না, বেশিক্ষণ হবে [ক্ষণ]

♦ভয়ংকর এই শব্দটি বানানের দিক থেকে ভয়ঙ্কর হবে । পৃ: ৯১৮ ( শব্দের মধ্যে ক বর্গীয় বর্ণের সাথে ং এর বদলে ঙ সংযুক্ত হয়)


♦মিশ্রন হবে না, মিশ্রণ হবে
♦মূর্তী না হয়ে মূর্তি হবে।
♦মৃত্যুদন্ড (ন+ড) না হয়ে মৃত্যুদণ্ড (ণ+ড)♦মেমোরী না হয়ে মেমরি হবে ।


♦রিভীউ না হয়ে রিভিউ হবে। (বিদেশী)



♦শরীক না হয়ে, শরিক হবে [আরবি شريك]
♦শহীদ না হয়ে শহিদ হবে। শহিদ শব্দটি আরবি (বিদেশী) ভাষা থেকে আগত। যেসব শব্দে হ্রস্বইকার এবং দীর্ঘঈকার দুই বানানেরই প্রচলন আছে সেসব শব্দে হ্রস্বইকারকে বেছে নিতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।


♦সেকেন্ডারী হবে না, সেকেন্ডারি হবে । (বিদেশী)
♦সম্ভবনা হবে না, সম্ভাবনা হবে । পৃ: ১১২৮
♦সুস্থ্যতা না হয়ে, সুস্থতা হবে।
♦সেকেন্ড (ন+ড)
second
♦সেকেন্ডারি (ন+ড)
secondary (বিদেশী)
♦সমীকরন না হয়ে সমীকরণ হবে। পৃ: ১১২৪

♦হুমায়ুন আহমেদ না হয়ে হুমায়ূন আহমেদ হবে।


তথ্যসূত্র:
♦বাংলা একাডেমী (একাডেমি) ব্যবহারিক বাংলা অভিধান,পঞ্চদশ পুনর্মুদ্রণ, ২০১২, মূল্য: ৪০০

বি.দ্র: এখানে উল্লেখিত ভুল শব্দগুলো অনলাইন থেকে পাওয়া। প্রয়োজনমতো আপডেট হতে পারে।

সোমবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

নিজেকে হারায়ে খুঁজি...

নিতার সাথে ইমন এর সম্পর্কটা সূঁতোয় ঝুলছিল। ইমন আসলে কী চাচ্ছিল নিতা ঠিক বুঝতে পারছিল না। সম্পর্কটা প্রেমের ছিল না। দুই পরিবারের দুই বিবাহিত মানুষ...যুক্তির খাতিরে প্রেম চলে না। খুব বাস্তববাদী দু'জনের সম্পর্ক ছিল ভরসার, বিশ্বাসের । ছিল কাছে গিয়ে বুক ভরে অক্সিজেন নেবার মতো।

ইগো মানুষকে যা নয় তাই ভাবতে শেখায় । অধিকারবোধের প্রকাশকে অসম্মান করা ভাবতে শেখায় । আর নিজে অসম্মানিত হচ্ছে ভাবতে কারোই ভালো লাগে না। ইমন-এরও ইগোর সমস্যা বেড়ে যাচ্ছিল। নিতা যতটা আপন ভেবে ইমনের সাথে তার ভাবের দুয়ার খুলে কথা বলতো এর অনেক কথাই ইমন প্রচণ্ড নঞর্থকভাবে নিয়ে সরে যেতে লাগলো নিতার কাছ থেকে...ছেলে-মেয়েতে বন্ধুত্ব হয় না...কথাটা খুব প্রচলিত...।

আমার জীবনে তোমার কোন অবস্থান নেই... ইমনের কাছ থেকে এই কথা শোনার পর নিতার স্বাভাবিকভাবেই মনের ভেতর প্রশ্ন জেগে উঠলো...বন্ধুত্ব তাহলে কী ?

ইমনের সাথে খুব অদ্ভুতভাবে নিতার যোগাযোগটা ছিল...
কিন্তু দিনের পর দিন ডিপ্রেসড নিতা নিজেও বুঝতে পারেনি সে ভেতরে ভেতরে কতোটা ক্ষয়ে যাচ্ছে !

বেশ কিছুদিন ধরে নিতার ঊরু থেকে একপায়ের পেছনের দিকে ব্যাথা। থামার কোন লক্ষণ নেই...
অবশেষে যখন ডাক্তারের শরণাপন্ন হল বেশ কিছুক্ষণ ডাক্তার কথা বললেন, কিছু টেস্ট দিলেন, কাউন্সেলিং করলেন এবং অন্যান্য ঔষুধের সাথে Perikolও দিলেন ।
নিতা জানে পারকিনসন রোগ ৫০/৬০ বছর বয়সে সাধারণত হয়...তবে তাকে এই ঔষুধ কেন ? ৫০/৬০ এ পৌঁছুতেতো নিতার এখনও ঢের দেরী !

নিতার সাথে আজই কথা হলো...ওকে ফ্যাকাসে দেখাচ্ছিল ! অদ্ভুতরকমের শান্ত মুখ দেখে বোঝার উপায় নেই মনের ভেতরে কী ঝড়ের তাণ্ডব চলছে !

জীবনে কিছু মানুষ আসে... হৃদয় মন্দিরে যারা এতোটাই আপন হয়ে উঠে যে হাজার বছর ধরে দূর, বহুদূরে বাস করলেও, চোখের আড়াল হলেও যাদের অবস্থান নষ্ট হয়ে যায় না । সেই জায়গাও কেউ দখল করে নিতে পারে না শত চেষ্টাতেও...!

নিতার খোঁজ নিতে ওদের বাসায় গিয়েছিলাম। কম্বল জড়িয়ে কুণ্ডলি করে শুয়ে আছে।
সারাদিন কিছু খেতে পারে নি। খেলেই বমি হচ্ছে । এতো শক্ত ধাঁচের মেয়ে কতোদিন আমাকে মানসিকভাবে সাপোর্ট দিয়েছে অথচ আজ নিজেই চোখের সামনে ক্ষয়ে যাচ্ছে।

জিজ্ঞেস করেছিলাম পাগলামি করছে কেন?
বললো, মরে গেলে যেন ক্ষমা করে দেই ।
এমন নিষ্ঠুর কৌতুক শোনার আশা করিনি ।
রাগ করে উঠে আসতে নিলাম। ও দূর্বল হাতে আমার হাতটি ধরে বললো, "নাসরিন, এতো জীবন থেকে নেয়া ! আর জীবন বড্ড নিষ্ঠুরই !"
ও চেষ্টা করেও নিজেকে ইমন- এর ভাবনা থেকে বের করতে পারছে না।
আসলে ইমনের ভাবনা থেকে ও নিজেই বেরিয়ে আসতে চাইছে না।
বড় ধরণের মানসিক বিপর্যয়ে মানুষের নানান রকমের শারীরিক উপসর্গ দেখা দেয় । বুঝতে পারছি ও শারীরিক যন্ত্রণা থেকে নিজের মুক্তির পথ বেছে নিয়েছে।

কিছু জরুরী শপিং করতে গিয়ে নিতার জন্যে একটা টুকটুকে লাল লিপস্টিক কিনলাম।
ওর সাজগোজের খুব অল্প যে কয়টা জিনিস আছে তার মধ্যে লাল লিপস্টিক অন্যতম।
যে মেয়েকে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ঠোটে হালকা লিপস্টিকও লাগাতে দেখিনি তাকে কিছুদিন আগ পর্যন্তও দেখেছি লাল লিপস্টিকে ঠোট রাঙিয়ে রাখতে ।
হাত ভরে লাল রেশমী চুড়ি পরে ঘুড়ে বেড়াতে।
কারণ আর কিছুই নয়...ইমন !
লাল লিপস্টিক, লাল চুড়ি ইমনের খুব পছন্দের বলে এখন সেসবও ওর পছন্দের তালিকায় চলে এসেছে।
নিতার ধারণা ওর জীবনটাকে ইমনই রঙিন করে দিয়েছিল !
ছোটবেলা থেকে বাবা নেই...ভাইয়ের শাসনে বেড়ে উঠা নিতার ইমনই পরম ভরসার জায়গা, যাকে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করা যায়।
এতো ভালোবাসতে কেউ পারে তা ইমন ওর জীবনে না এলে নাকি ও জানতেই পারতো না !

যেহেতু চেয়ারে একটানা বসে থাকতে পারে না তাই বিছানায় শুয়ে শুয়ে মোবাইলে পড়া তৈরী করছিল ।
লিপস্টিকটা যখন ওর হাতে দিলাম ও ঝরঝর করে কেঁদে ফেললো । কয়দিন ধরে কিছু খেতে না পারায় চেহারাটা প্রচণ্ড ফ্যাকাসে হয়ে গেছে। ঠোটগুলো চৈত্রের ফাটা মাটির মতো হয়ে গেছে...
ওর সামনে বেশিক্ষণ থাকতেও অস্বস্তি হয়...


নিতার পারকিনসন হয়নি। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নিতার হাঁটা দেখেই বলে দিলেন। সেই সাথে Perikol ও খেতে নিষেধ করে দিলেন।
এবার শুরু হলো চিকিৎসার আরেক ধাপ !

আনিতা চৌধুরী, একটি কলেজের জাদরেল প্রিন্সিপ্যাল। স্টুডেন্টদের কাউন্সেলিংটা নিজেই করেন।
অথচ এখন নিজেকেই হারিয়ে খুঁজছেন !

সোশ্যাল নেটওয়ার্ক

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites