বুধবার, ১ মে, ২০১৩

স্বীকারোক্তি


নিজেকে কখনো অত্যাচারিতের ভুমিকায় দেখতে চাইনি।
কিন্তু তাই বলে অত্যাচারির ভুমিকাও গ্রহণ করতে চাইনি কখনো।

বেশ ক'দিন থেকেই বাচ্চাটা অসুস্থ থাকায় গতদিন যখন ডাক্তার দেখিয়ে বাসায় ফিরছিলাম, তখন বাচ্চার আবদার ফেলতে না পেরেই যেতে হয়েছিল ধানমন্ডির পিজ্জা হাটে। কারণ সে ওখানে পিজ্জা খাওয়ার নামে খেলবে। যখন গন্তব্যে পৌঁছে গেছি, গাড়ি থেকে নামবো, তখনই সামনে পড়লো দুই গার্মেন্টস নারী শ্রমিক। চলে গেল। থেমে গেলাম আমি। আমার ভ্রুটা কি বিরক্তিতে একমুহুর্তের জন্যে কুচকে উঠেছিল? হ্যাঁ, অসুস্থ বাচ্চার জন্যে আমি অস্থির আছি। তা ওই মেয়ে কেন সেকেন্ডের জন্যেই বা আমার গাড়ির দরজায় আসলো! মনে হলো যেন এক অদৃশ্য চপেটাঘাত খেলাম। সেই দু'জনের একজন শাহিনা, যেন পাশ দিয়েই চলে গেল, তার বাচ্চাটা বাসায় অপেক্ষা করছে, মা কখন আসবে। আমার গলার কাছে কিছু যেন আটকে গেল! আবিষ্কার করলাম চোখ ছাপিয়ে পানি আসছে! মিথ্যে বলবো না, ভেতরে ঢোকার পর বাচ্চার প্রানোচ্ছল মুখটা দেখে আমি সত্যিই কিছুক্ষণের জন্যে ভুলে গিয়েছিলাম। খেলা, খাওয়া শেষে যখন নিচে নামলাম তখন আমাকে অবাক করে দিয়ে আরো দু'জন মেয়ে (প্রায় একই বেশভুষা) আমার সামনে দিয়ে গেল। এবার আমি অবাক হয়ে খেয়াল করলাম নিজেকে কেমন যেন অপরাধী লাগছিল। মনে হচ্ছিল এদের কাছে ধরা পরে গেলাম।

দুরে কোথাও ভ্রমনে গেলে হাইওয়েতে যখন ওরা রাস্তা পার হয়, আমি কখনো কখনো ওদের উদাসীনভাবে রাস্তা পার হওয়া নিয়ে বিরক্তিবোধ করেছি।
এখনতো আমি ওদের দিকে তাকাতেই পারছি না! 
নিজেকে পুজিঁবাদী সমাজের রক্তচোষা ভ্যাম্পায়ার মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে ওদের রক্ত খেয়েই আমি বেঁচে আছি!
আচ্ছা, রানাদের মনে কি এই বোধ কখনোই আসে না!!!

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

সোশ্যাল নেটওয়ার্ক

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites