মঙ্গলবার, ১২ আগস্ট, ২০১৪

প্রতিদান


সারাবছরে একবার মাত্র আসিস, অথচ ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় প্রতি সপ্তাহে আসতিস।মাঝে মাঝে একটু দেখে যেতে পারিস তো!

বাবার পেনশন থেকে মায়ের দিব্যি চলে যাচ্ছে, একা মানুষের খরচ আর কতো? তবুও মা কেন যে আমার কাছে থেকে বাড়তি কিছু আশা করে? সত্যিই অবাক লাগে! মাস শেষ হতেই বাড়ি ভাড়া, ড্রাইভারের বেতন, বাচ্চাদের স্কুলের ফি, বউয়ের হাতখরচ, বাইরে ঘুরতে যাওয়ার জন্যে একটা বাজেট রাখতে হয়
এসবে কতোগুলো টাকা চলে যায়! মা একটু বুঝতেও চায় না... খুব বিরক্তি নিয়ে বিড়বিড় করে রেজা।


"মা, তোমার কি বাবার পেনশনে চলে না ?"-
জিজ্ঞেস করে ফেলে রেজা।

আমাকে কিছু দিতে হবে নারে... চোখের দেখা দেখে গেলেওতো একটু শান্তি পাই। গাছের ফলগুলো রাখতে রাখতে পেকে নষ্ট হয়ে যায়। তুই গরুর মাংস খাওয়া ছেড়েছিস ভেবে কতোদিন খাসীর মাংস ফ্রিজে রেখে দেই। একবছরের আচার পরের বছরে যেয়ে ঠেকে!- কিছুটা অভিমানী গলায় বলেন রাশেদা বেগম।


"মা, তুমি কতো কষ্ট করে আমায় জন্ম দিয়েছো, বড় করেছো। প্রতিদানে কী চাও মা? আমি চেষ্টা করবো দিতে।... এবার রেজা বেশ আত্মবিশ্বাসের সাথে কথাগুলো বলে।

রাশেদা বেগম ভাবলেশহীন দৃষ্টিতে ছেলের দিকে তাকান। সেখানে রাগ, ঘৃণা কিছুই নেই।সন্তানের প্রতি ঘৃণা আসে না।


হেসে বলেন, প্রতিদান পাওয়ার আশায়তো তোকে জন্ম দেইনি, বড় করিনি। ভালোবেসে করেছি।

প্রতিদান দিতে নয়। যদি ভালোবেসে কিছু করতে ইচ্ছে করে করিস, এমনকি সেটা যদি চোখের দেখাওহয়, তাই-ই।
ভালোবেসে না পারলে কষ্ট করে আসার দরকার নেই। শুধু আমি যেনো তোর সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারি সেই সুযোগটুকু আমার জন্যে রাখিস।


-------অনুগল্প

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

সোশ্যাল নেটওয়ার্ক

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites